জিতলেই ফাইনাল, হারলে বিদায়- এমন সমীকরণ মাথায় নিয়েই এশিয়া কাপের অলিখিত সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। অপেক্ষায় ছিল চতুর্থবারের মতো ফাইনালে পা রাখার।
দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে মাত্র ১৩৫ রানে আটকে দিয়ে প্রথম কাজটা করে দিয়েছিল টাইগার বোলাররা। কিন্তু ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতায় ১১ রানে হেরে ফাইনালে খেলার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ে এমন অবিশ্বাস্য হারের পর হাস্যকর ও অদ্ভুত অজুহাত দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। তার মতে, অধিনায়ক লিটন দাস না থাকাতেই এমন ধস।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে লিটনের না থাকার প্রসঙ্গ টেনে সিমন্স বলেন, ‘আমরা এখনো এমন দল হইনি, যেখানে অধিনায়ককে হারিয়ে সেই খালি জায়গা পূরণ করে ফেলব। ভালো ফর্মে থাকা অধিনায়ককে হারিয়েছি আমরা।’
সিমন্স আরো বলেন, ‘এই ব্যাপারটা আমাদের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। লিটন যে ফর্মে ছিল, আমাদের জন্য সে খুবই জরুরি ছিল। আমাদের সেই রকমের গভীরতা নেই অন্য দলের মত।’
মাত্র ১৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে যেভাবে ব্যাট করে বাংলাদেশ, তা সবাইকেই অবাক করে। যেখানে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকলেও থামেনি ছক্কা হাঁকানোর চেষ্টা। মনে হচ্ছিল লক্ষ্যটা অনেক দূর!
সংবাদ সম্মেলনে সিমন্সকে তাই প্রশ্ন করা হয়, ১৫-১৮ ওভারের মধ্যে রান তাড়া করে ফেলতে হবে এমন কোনো নির্দেশনা ছিল কি? জবাবে সিমন্স বলেন, ‘না। কারণ আমরা কেবল ম্যাচ জিততে চেয়েছি।’
তাহলে কেন এত তাড়াহুড়া করলেন ব্যাটাররা? তার জবাব, ‘ভুল সিদ্ধান্ত। বিশ্বের অন্যান্য দলেরও এমন দিন যায়। আজকে আমাদের এমন দিন গেছে। আমাদের সিদ্ধান্ত শট সিলেকশন সেরা ছিল না আজ।’
ব্যাটিংঅর্ডার প্রসঙ্গে সিমন্স বলেন, ‘আমরা ২ ম্যাচ আগেই ১৬০+ রান চেইজ করেছি এই একই ব্যাটিংঅর্ডার নিয়েই। সেদিন ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তগুলো বেটার ছিল। কিন্তু আজ সিদ্ধান্তগুলো বাজে হয়েছে।’
সিমন্স আরো বলেন, ‘ছক্কা হাঁকানোতে আমরা সবার শীর্ষে। ফলে এখানে আমাদের দ্রুত রান তোলার সামর্থ্য নিয়ে সমস্যা না, সমস্যা হচ্ছে লম্বা সময় ব্যাট করতে না পারায়, ভালো জুটি না গড়তে পারায়।’
ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করলেও একাধিক সহজ ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। না হয় পাকিস্তানকে আরো আগেই থামিয়ে দেয়া যেত। সেই ক্যাচ মিসের বড় মাশুল দিতে হয়েছে দলকে- মনে করে করেন সিমন্স।
তিনি বলেন, ‘শাহিনের ক্যাচ ছেড়েছি পরে সে ২ ছক্কা মেরেছে। নওয়াজের ক্যাচও ড্রপ হয়েছে। ফলে এখানেই ম্যাচ বের হয়ে গেছে। এর আগ পর্যন্ত ম্যাচ আমাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল।’
ইনিংস বিরতিতে শিষ্যদের কী বলেছিলেন ফিল সিমন্স? কোচের জবাব, ‘আসলে ১৩০ রান তাড়া করতে গিয়ে আমরা চেয়েছি যেভাবে অনুশীলন করছি সেভাবেই খেলতে। ৬ ওভারে ১ বা ২ উইকেট হারিয়ে ৪০ রান করতে পারলেই চলত।’
তিনি বলেন, ‘৬০ করলেও নিয়ন্ত্রণ আসত। এক ম্যাচে আমরা ৬০ নিয়েছি, আরেক ম্যাচে ৪৭। সেসব ম্যাচে ব্যাটাররা ভালো শুরু পেয়েছে। ভালো শুরুটা জরুরি ছিল। প্রথম ৬ ওভার কাজে লাগানো দরকার ছিল।’



