১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

মিরাজের ৫-এ পাকিস্তান ২৭৪

৫ উইকেট নেয়ার পর বল হাতে মেহেদি হাসান মিরাজ : ক্রিকইনফো -

রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম সেশনে খুব একটা দ্যুতি ছড়াতে পারেনি বাংলাদেশি বোলাররা। তবে পরের দুই সেশনে পাত্তা পায়নি পাকিস্তানি ব্যাটাররা। এক মেহেদি হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতেই কুপোকাত শান মাসুদের দল। গতি আর সুইংয়ে স্বাগতিকদের কাবু করেছেন পেসার তাসকিন আহমেদও। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রান সংগ্রহ করেছে পাকিস্তান। টাইগারদের পক্ষে একাই ৫ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। ৩ উইকেট পকেটে পুরেছেন তাসকিন আহমেদ। পাকিস্তানের পক্ষে ফিফটি হাঁকিয়েছেন শান মাসুদ, সাইম আইয়ুব ও সালমান আলী আঘা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষ হওয়ার আগে বিনা উইকেটে ১০ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা। সাদমান ইসলাম ৬ রানে আর জাকির হাসান ০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন। অবশ্য মীর হামজার করা ইনিংসের প্রথম বলেই জীবন পেয়েছেন সাদমান। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে গিয়েছিল গালিতে। কিন্তু সহজ ক্যাচটি নিতে পারেননি সাউদ শাকিল। বাংলাদেশ এখন ২৬৪ রানে পিছিয়ে।
রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম দিনের খেলা বাতিল হয়েছিল বৃষ্টিতে। গতকাল দ্বিতীয় দিনের শুরুটা স্বাগতিকরা নিজেদের আয়ত্তে রাখলেও দিন শেষে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। মেহেদি হাসান মিরাজ তুলে নিয়েছেন নিজের টেস্ট ক্রিকেট ক্যারিয়ারের দশম ফাইফার। বেশ কিছুক্ষণ আগেই স্বাগতিকদের ইনিংস শেষ হতে পারত। সালমান আঘার ক্যাচটি তালুবন্দী না করতে পারাই ভুগিয়েছে টাইগার বোলারদের। শূন্য রান থাকাকালে দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়ে তা ভালোমতোই কাজে লাগিয়েছেন সালমান, আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে আদায় করেছেন নিজের অর্ধশতকও। তার ব্যাটে ভর করেই রানের পাল্লা ভারি করেছে পাকিস্তান।
টসে জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। প্রায় এক বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে তাসকিন আহমেদ বোলিং করতে এসে প্রথম ওভারেই আবদুল্লাহ শফিককে বোল্ড করেন। তার অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি শফিকের ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে আঘাত করে স্টাম্পে। দলীয় শূন্য রানে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান।
প্রথম ওভারে শফিকের বিদায়ের পর চাপ সামাল দেয়ার দেয়ার চেষ্টা করেন সাইম আইয়ুব ও শান মাসুদ। দুই বাঁ হাতি ব্যাটার পুরো সেশনেই আর উইকেট হারাতে দেননি পাকিস্তানকে। তাসকিনের সঙ্গে হাসান মাহমুদও বেশ আগ্রাসী বোলিং করেন, লাভ হয়নি তাতে। তরুণ পেসার নাহিদ রানাও চেষ্টা করেছেন। জুটি ভাঙার আশায় মিরাজকেও আক্রমণে আনেন অধিনায়ক শান্ত। কিন্তু কেউ সুবিধা করতে পারছিলেন না।
প্রথম টেস্টে দুই ইনিংসেই ব্যর্থ হওয়া শান মাসুদ এবার দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ৫৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন পাকিস্তানের এই অধিনায়ক। ৩৫ ম্যাচে এটি তার দশম হাফ সেঞ্চুরি। আরেক অপরাজিত ব্যাটার সাইম আইয়ুবও হাফ সেঞ্চুরির কাছে থেকে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান। এরপর তৃতীয় ওভারেই উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। শান মাসুদকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন মিরাজ। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি পাকিস্তানের। দ্বিতীয় উইকেটে ১০৭ রানের জুটি ভাঙে। ৬৯ বলে ৫৭ রানে ফিরেন মাসুদ। একটু পরই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া সাইম আইয়ুবকেও নিজের শিকার বানিয়েছেন মিরাজ। মিরাজের বলে ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন। বল হাতে নিয়েই স্টাম্প ভেঙে দেন লিটন। ফলে ১১০ বলে ৫৮ রান করেই ফিরতে হয় সাইমকে। ১২২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
অবশ্য নাহিদের আগের ওভারে রিভিউ নিয়ে বাঁচেন ওপেনার সাইম। নিজের ১১তম ওভারে সাউদ শাকিলের তোপের মুখে পড়েছিলেন তাসকিন। ওভারের প্রথম দুই বলেই শাকিল হাঁকিয়েছিলেন দুটি চার। প্রথমটি পয়েন্ট ও গালির মাঝ দিয়ে। পরেরটি পয়েন্ট আর কাভারের মাঝামাঝি দিয়ে। যদিও ওভারের শেষ বলেই শাকিলকে তুলে নেন তাসকিন। লেংথ ডেলিভারিতে থার্ড ম্যানে ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন শাকিল। তবে লাফিয়ে ওঠা বল ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে স্টাম্পে চলে যায় ফলে ২৮ বলে ১৬ রান করে ফিরতে হয় শাকিলকে। এরপর বাবর আজমকে থিতু হতে দেননি সাকিব আল হাসান। এই টাইগার বাঁহাতি স্পিনারের আর্ম বলে এলবিডব্ল্উি হন তিনি।
কাঁধে ব্যাথা পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশ মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিমকে। ইনিংসের ৫৩তম ওভারে হাসান মাহমুদের বলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের স্ট্রেট ড্রাইভ আটকানোর চেষ্টা করেন মুশফিক, ডাইভ দিয়ে আঘাত পেয়েছেন তিনি।
দ্বিতীয় সেশনে ৩০ ওভারে ৮৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান। ৫ উইকেটে ১৮৩ রান নিয়ে চা বিরতিতে যায়। শেষ সেশনে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন নাহিদ। লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিয়ে প্রথম স্লিপে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৬৩ বলে ২৯ রান করা রিজওয়ান। ভাঙে আঘা সালমানের সঙ্গে ৩২ রানের জুটি। এরপর বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা বাড়ান দুই লোয়ার অর্ডার ব্যাটার আঘা সালমান ও খুররম শাহজাদ। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার জীবন পেলেও শেষ পর্যন্ত তাকে আউট করেছেন মিরাজ। এই ডানহাতি স্পিনারের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে সাকিবকে ক্যাচ দেন মিড অফে। এরপর মোহাম্মদ আলীকেও থিতু হতে দেননি মিরাজ। তাকে স্লিপে শান্তর হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন তিনি। এক প্রান্ত আগলে রেখে ৯২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন আঘা সালমান। ওভারের শেষ বলে সালমান একইভাবে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে সাকিবের হাতে ক্যাচ দেন ৫৪ রান করা সালমান। পরের ওভারের প্রথম বলেই আবরার আহমেদকে বোল্ড করে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে দিয়েছেন মিরাজ। আর তাতেই প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েছেন ডান হাতি এই স্পিনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান (প্রথম ইনিংস) ৮৫.১ ওভারে ২৭৪/১০ (শান মাসুদ ৫৭, সাইম ৫৮, শাকিল ১৬, বাবর ৩১, রিজওয়ান ২৯, সালমান ৫৪; মিরাজ ৫/৬১, তাসকিন ৩/৫৭, সাকিব ১/৩৪, নাহিদ ১/৫৮)।
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস) ২ ওভারে ১০/০ (সাদমান ৬*, জাকির ০*)


আরো সংবাদ



premium cement
উত্তাল সাগর ভারী বৃষ্টি দেশের সব পোশাক কারখানা খোলা থাকবে আজ থেকে সভাপতি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুপস্থিতিতে আটকে গেছে অনেক শিক্ষকের বেতন বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানিতে ভারতের শুল্ক প্রত্যাহার গাজায় এক পরিবারের ১১ সদস্যকে হত্যা ইসরাইলের ‘ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে প্রতিটি স্লোগানই ছিল অনন্য কবিতা’ ময়মনসিংহে স্বামী-স্ত্রী কুমিল্লায় দাদী-নাতি নিহত কৃষি প্রকল্পের কনসালট্যান্ট যেন রাজনৈতিক পুনর্বাসন কেন্দ্র ছোট ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল বড় ভাইয়ের নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বিদ্যমান আইন ত্রুটিপূর্ণ সংস্কারের প্রস্তাব সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যামামলা প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন

সকল