১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নড়বড়ে ডিফেন্স ও এমির প্রতিরোধ

-


কোপা আমেরিকার দুই আসর মিলে ১২ ম্যাচ অপরাজিত। সাথে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নের খেতাব। বিশ্বকাপ জয়ের ঘটনাও সর্বশেষ প্রতিযোগিতায়। এমন একটি দলের ডিফেন্স লাইন কিভাবে এত নড়বড় হয়। গোল দিয়ে তার ধরে রাখতে পারছে না। এরপর হয় ফরোয়ার্ডরা উদ্ধার করছেন। না হয় শেষ ভরশাতো এমিলিয়ানো মার্টিনেজ আছেনই। এমি খ্যাত এই এমিলিয়ানো মার্টিনেজ একের পর এক দলকে পার করিয়ে নিচ্ছেন হার্ডল। যার জ্বলজ্যান্ত উদহারন গতকাল কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে। কানাডার মতো ছোট ফুটবল শক্তির কাছে কী করুণ অবস্থাই না হয়েছিল আর্জেন্টিনার ডিফেন্স লাইনের। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডা। শেষ পর্যন্ত পোস্টের নিচে আস্থার প্রতিদান দেন এমি মার্টিনেজ। সেই যোগ সূত্রতেই লিওনেল মেসিরা ফের এই কোপা আমেরিকার ফাইনালে।
গোল দিয়েও তা ধরে রাখতে না পারাটা নতুন কিছু নয় অর্জেন্টিনার জন্য। ফিরে যাওয়া যাক ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে। পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে ২ গোলে লিড নিয়েও তা দলে রাখতে পারেনি দিয়েগো ম্যারাডোনাররা। দুই কর্নার থেকে দুই গোল পরিশোধ জার্মানদের। পরে ম্যারাডোনার পাসে জর্জ বুরুচাগার গোলে বিশ্বকাপ জয় কার্লোস বিলার্দোর দলের।

এরপর কাতার বিশ্বকাপের কথাই ধরুন। সৌদি আরবের বিপক্ষে এগিয়ে গিয়েও হেরেছিল আর্জেন্টিনা। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২ গোলে লিড নিয়েও তাদের টাইব্রেকারে জিততে হয়েছিল। তা ডিফেন্ডারদের ভুলে খেলার শেষ ১০ মিনিটে দুই গোল হজম করায়। পরে টাইব্রেকারে এমি মার্টিনেজের সেভই দলকে সেমিতে তোলে। এরপর ফাইনালেও একই কাহিনী। ফ্রান্সের বিপক্ষে ২-০ তে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। পরে কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোল খেলা অতিরিক্ত সময় নিয়ে যায়। সেখানে ফের লিড নিয়েও আবার এমবাপ্পের গোলে স্কোর ৩-৩। পরে জিতেই যেত ফ্রান্স যদি নিশ্চিত গোলের সুযোগ আটকে না দিতেন মার্টিনেজ। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গড়ালে সেখানেও মার্টিনেজের বিশ্বস্ত হাত তৃতীয় বিশ্বকাপ পাইয়ে দেয়। সেই বিশ্বকাপেই দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে ২ গোলে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। অথচ এরপর শেষ ১৩ মিনিটের ঝড়ে সকারুজরা একটি গোল পরিশোধ করে ভীষণ চাপে ফেলে দেয় লিওনেল মেসিদের। একেবারেই শেষ দিকে দ্বিতীয় গোলের খুব কাছে চলে গিয়েছিল এএফসির দেশটি। তখনো ত্রাতা এই এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। নিশ্চিত গোল রুখে দিয়ে দলকে জয় এনে দেন।

চলমান কোপা আমেরিকায় প্রথম ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে দলের পোস্ট অক্ষত রাখেন অ্যাস্টন ভিলার এই কিপার। কয়েকটি সেভ করেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ১ গোলে এগিয়ে থেকেও তাদের জয়ের জন্য টাইব্রেকারের আশ্রয় নিতে হয়েছিল। কারণ ডিফেন্সের ভুল। ইনজুরি টাইমে সমতা আনে ইকুয়েডর। এরপর ইকুয়েডর মিস করে জয়ের চান্স। পরে টাইব্রেকারে এমি মার্টিনেজের দু’টি সেভ আর্জেন্টিনাকে গতকাল কানাডার প্রতিপক্ষ বানায়।
কাল কানাডা শুরু থেকেই আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগে ফাটল ধরিয়ে গোলের চেষ্টা করে। দুই অর্ধে মার্টিনেজের দু’টি সেভই দলের জয়কে ক্লিনশিট রাখে। এই গোলরক্ষকের কৃতিত্বেই এবারের কোপা আমেরিকায় চার ম্যাচে ক্লিনশিট জয় পেল ল্যাতিন দেশটি। কাল ৮৯ মিনিটে নিশ্চিত গোলের বল পা দিয়ে ঠেকিয়ে মাটিতে শুয়ে একহাত উপরে তুলে মার্টিনেজ জানান দিতে থাকেন কেন তিনি সেরা গোলরক্ষক।

 


আরো সংবাদ



premium cement