১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

উরুগুয়ের কাছে হেরে বিদায় ব্রাজিলের

উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড ম্যানুয়েল উগার্তের এই শটই বিদায় নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের : মার্কা -

কোপা আমেরিকার শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে উরুগুয়ে। সেলেকাওদের বিপক্ষে শুরু থেকেই শরীরনির্ভর ফুটবল খেলেছে লা সেলেস্টরা। নিজেদের খেলা খেলার চেয়ে ব্রাজিলের খেলা নষ্ট করাতেই মনোযোগ বেশি ছিল উরুগুয়ের ফুটবলারদের। পুরো ম্যাচে ৪১টি ফাউল, চারটি হলুদ কার্ড ও একটি লাল কার্ড তারই প্রমাণ। এর মধ্যে ২৬ বার সুয়ারেজেদের বিপক্ষে বাঁশি বাজান রেফারি। যার মধ্যে ম্যাচের ৭২ মিনিটে রদ্রিগোকে পেছন থেকে ফাউল করেছিলেন উরুগুইয়ান মিডফিল্ডার নাহিতান নান্দেজ। প্রথমে রেফারি তাকে হলুদ কার্ড দেখালেও পরে আঘাতের গুরুত্ব বুঝে ‘ভিএআর’ সাহায্য নিয়ে ৭৪ মিনিটে লাল কার্ড দেখান নান্দেজকে।
যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে অ্যালেজিয়েন্ট স্টেডিয়ামে ১০ জনের উরুগুয়েকে পেয়েও জিততে পারল না ব্রাজিল। ম্যাচের শেষ দিকে নির্ধারিত সময় ও যোগ করা সময় মিলে ২১ মিনিট জালের খুঁজ পেল না তরুণ সেনসেশন এন্ড্রিক-রাফিনহারা। আক্রমণের ঝাঁজ কিছুটা বাড়ালেও তাদের হারাতে পারল না পেলের দেশটি। বিক্ষিপ্ত কিছু ঝলক ছাড়া গোটা ম্যাচে ছন্নছাড়া ফুটবল প্রদর্শন করতে দেখা গেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। মার্সেলো বিয়েলসার ফুটবল কৌশলের কাছে হার মানতে হয়েছে দরিভাল জুনিয়রের। নির্ধারিত সময় গোলশূন্য ড্র থাকার পর বিশ্বকাপের মতো কোপাতেও কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হেরে বিদায় নিল ব্রাজিল। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও পরে টাইব্রেকারের ব্যর্থতাই শেষ করে দিল নেইমারবিহীন ব্রাজিলের আশা।
টাইব্রেকারে প্রথম শট নিতে এসে গোল করতে ভুল করেননি উরুগুয়ের ভালভার্দে। ব্রাজিলের এডের মিলিতাওয়ের নেয়া শট রুখে দেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক রোসেট। তাতেই চাপে পড়ে যায় ব্রাজিল। এর পর উরুগুয়েকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন বেন্টাকুর। ব্রাজিলের পক্ষে ১-২ করেন পেরেরা। আবার ৩-১ ব্যবধান করেন অ্যারাসকেটার। আর ডগলাস লুইসের শট লাগে পোস্টে। এর পর উরুগুয়ের জিমেনেজের শট আটকে অ্যালিসন ব্রাজিলের আশা জিইয়ে রাখার পর ২-৩ করেন মার্টিনেল্লি। ম্যানুয়েল উগার্তের নেয়া শট জাল স্পর্শ করতেই সেমিতে ওঠার উল্লাসে ফেটে পড়েন গোটা উরুগুয়ে দলের খেলোয়াড়রা।
ম্যাচের শুরু থেকেই বেশ গায়ের জোরে ও রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করে উরুগুয়ে। ব্রাজিলের আক্রমণগুলো বক্সের বাইরেই রুখে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল বিয়েলসার শিবির। আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে ব্রাজিল মাঠে নামলেও উরুগুয়ের লক্ষ্য ছিল আচমকা প্রতি-আক্রমণে উঠে তাদের বিপদে ফেলা। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল।
উরুগুয়ের রক্ষণকে প্রথম থেকেই ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করলেও তাদের শক্তিপ্রয়োগমূলক ফুটবলে হার মানতে হয়েছে এন্ড্রিককে। ম্যাচের বেশির ভাগ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল ব্রাজিলের। পাসিংয়েও অনেক এগিয়ে ছিল ৯ বারের কোপা চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু উরুগুয়ের রক্ষণ ভেদ করে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙার জন্য মাঠের দুই প্রান্ত ব্যবহার করেও লাভ হয়নি। বারবার উরুগুয়ের বক্সে প্রায় একা হয়ে যাচ্ছিলেন এন্ড্রিক। ফলে গোলের সুযোগ তৈরি করতে না পারায় ল্যাটিন আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে আবার ব্যর্থতা সঙ্গী হলো ব্রাজিলের।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement