হঠাৎ কেন সেলেকাওদের এই রুগ্ণদশা
- ক্রীড়া প্রতিবেদক
- ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০:২৯
ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের করুণ দৃশ্য না দেখলেও অনুমান করা কঠিন নয়। কোপায় হার নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের কেউ হাঁটু গেড়ে মাঠে বসে আছেন তো কেউ দু’হাতে মুখ লুকাচ্ছেন। কারো দৃষ্টি শূন্যে তো কেউ উপুড় হয়ে পড়ে আছেন মাঠে। হারের হতাশা লুকাতে পারছিলেন না কেউই। ফলে আগেভাগেই কোপায় বিদায় নিশ্চিত করা ব্রাজিলের লক্ষ্য এখন ২০২৬ বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে হওয়াই স্বাভাবিক। তবে গত দুই বছরের ক্ষত কিভাবে শুকাবে। অরেকটি বিশ্বকাপই পারে প্রলেপ হতে। কিন্তু কল্পনার সাথে বাস্তবের ফারাক যে যোজন যোজন দূরে।
বেশি দিনের কথা নয়। এই তো গত বিশ্বকাপেই বেশ শক্ত স্কোয়াড নিয়ে কাতারের মাঠে নেমেছিল ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি ব্রাজিল। সেবার মূল স্কোয়াড তো ছিলই, কথা উঠেছিল বেঞ্চ স্কোয়াড নিয়েও। এমনটাও শোনা গিয়েছিল যে, সেলেসাওদের বেঞ্চ স্কোয়াডও যেকোনো দলকে হারাতে সক্ষম। তবে এমন শক্তিশালী স্কোয়াড থাকার পরও ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল।
পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এরপর থেকে এখন পর্যন্ত সেই হতাশার গ্লানি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। পৃথিবীজুড়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ভক্তদের কষ্ট দিয়েই যাচ্ছে। কোথায় সেই কারুকাজ। মস্তিষ্কের সাথে পায়ের যে মেলবন্ধন সেটি কোথায়। এটি আরো চরমভাবে ফুটে উঠেছে ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেও। যাচ্ছে তাই পারফরম্যান্সের পর নগদ উদাহরণ কোপা আমেরিকা। গত বিশ্বকাপের মতো এবার কোপা আমেরিকায়ও তাদের বিদায় হয়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। তাতেই সরব ফুটবলাঙ্গন। কেন সাম্বার দেশের এই করুণ পরিণতি। কেন ফুটবলে তাদের এই রুগ্ণদশা।
সম্প্রতি ব্রাজিল দলে ফিনিশিং, মাঝমাঠে দুর্বলতা ও সমন্বয়হীনতা দেখা গেছে বড় আকারে। বছর কয়েক পূর্বে যেখানে নেইমার জুনিয়র, ফিলিপ কৌতিনহোদের মতো তারকারা সামাল দিত সেলেসাওদের আক্রমণভাগ, সেখানে বর্তমানে তাদের জায়গা নিয়েছে তরুণরা। ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রদ্রিগোদের মতো উঠতি তারকার ক্লাব ফুটবলে যেমন নিজেদের প্রতিভার জানান দিচ্ছেন, জাতীয় দলে যেন তারা ততটাই ফিকে অবস্থায় রয়েছেন। শুধু তাই নয়, উরুগুয়ের সাথে ম্যাচে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের মূল একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন এন্ড্রিক ফেলিপে। যাকে বলা হচ্ছে সেলেসাওদের ভবিষ্যৎ। তবে প্রথমবার জাতীয় দলের হয়ে কোপা আমেরিকার মতো বড় মঞ্চে পুরো ম্যাচ খেলা তার জন্য বড় সুযোগ ছিল। যদিও উঠতি এই তরুণ এ দিন ফ্লপ ছিলেন।
উরুগুয়ের বিপক্ষে এমন হারের পর নিজের হতাশা লুকাননি ১৭ বছর বয়সী তরুণ। তিনি বলেছেন, ‘আমি দুঃখিত, শুধু আমরাই নই, পুরো ব্রাজিলিয়ান গোষ্ঠীর মনের অবস্থা বুঝতে পারছি। এভাবে বিদায় মেনে নেয়া কঠিন, তা-ও আবার শুট আউটে। কঠিন হলেও আমরা মাথা উঁচু রাখতে চাই, ব্রাজিলকে আবারো শীর্ষস্থানে নিতে চাই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে- সেটি এখানে হয়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব, প্রস্তুতি শুরু করব পরবর্তী বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এবং আশা করি এই সময়ে ব্রাজিলিয়ানদের সমর্থন আমাদের পাশে থাকবে। আমরা জানি তাদের জন্য-ও বিষয়টা কঠিন; কিন্তু তাদের সমর্থনই আমাদের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। প্রথমবার শুরুর একাদশে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই।’
এসব ছাপিয়ে এখন পরবর্তী বিশ্বকাপকেই লক্ষ্যে পরিণত করেছে সেলেসাওরা। সেমিফাইনালে ওঠার কাজটা দরিভাল জুনিয়র শিষ্যদের জন্য যে সহজ হবে না সেটি আগেই জানা ছিল। উরুগুয়ের বিপক্ষে হিসেব চুকিয়ে দেয়ার কাজটা করতে পারেনি ভিনিসিয়াস বিহীন ব্রাজিল। যদিও পুরো ম্যাচে তারা যেমন নিজেরা গোল হজম করেনি, তেমনি প্রতিপক্ষের জালেও বল পৌঁছাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে উরুগুয়ে ৪-২ ব্যবধানে জয় নিয়ে ব্রাজিলকে তিক্ত হারের স্বাদ দেয়।
কোচ দরিভাল ও তরুণ তারকা এন্ড্রিক ফেলিপ বিশ্বকাপের দিকেই মনোযোগী হওয়ার কথা জানিয়েছেন। একইসাথে প্রত্যাশিত ফল না পাওয়ার দায় নিজের বলেও উল্লেখ করেন ব্রাজিল কোচ। লাতিন অঞ্চলের বাছাইপর্বে ব্রাজিলের বর্তমান অবস্থান ছয়ে। ছয় ম্যাচে দুই জয় আর এক ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট মাত্র সাত। এমন পরিস্থিতি কাটিয়ে বাছাইপর্ব পেরোনোর পথ বের করাই এখন কোচ দরিভালের লক্ষ্য, ‘আমাদের গড়ে ওঠার, বিকশিত হওয়ার ও উন্নতি করার অনেক জায়গা আছে। আপাতত আমাদের মূল লক্ষ্য পরের বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয়া। এখন আমরা পয়েন্ট তালিকায় (বাছাইপর্বে) ছয় নম্বরে আছি এবং তা নিয়ে মোটেও স্বস্তিতে নেই।’
কোপা থেকে বিদায়ের পর ব্রাজিল দলকে গুছিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে নিতে চান দরিভাল। ৬২ বছর বয়সী এই কোচ বলেন, ‘এই দলটির গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কিংবা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা