০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫
`

বিতর্কিত আউটেই কি শিরোপা হাতছাড়া

বাউন্ডারি লাইনে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলারের এই ক্যাচ ধরা নিয়ে বিতর্ক। যদিও অসামান্য দক্ষতায় বলটি তালুবন্দী করেন ভারতের সূর্য কুমার : ইন্টারনেট -

সদ্য শেষ হওয়া টি-২০ বিশ্বকাপটি বিভিন্ন কারণেই বিতর্কিত ছিল যে দলটি, তাদের নাম ভারত। যদিও প্রায় প্রতিটি আইসিসি ইভেন্টেই ভারত বাড়তি কিছু সহায়তা পেয়ে থাকে, এমন দাবি অনেকেরই। এমনকি অনেকে তো বলেই দিয়েছেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতাতেই এত পাঁয়তারা। যার ফলে টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব, সূচি, ম্যাচ ভেনু থেকে শুরু করে সব কিছুই আগে থেকে পরিকল্পনা করে সাজানো হয়েছে। কথাগুলো সাধারণ কোনো দর্শক বলেননি, বলেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার মাইকেল ভন। এ ছাড়া একই বিষয়ে সমালোচনা করেছেন ডেভিড লয়েড, ইনজামামুল হক ও ক্রিস গেইলরাও।
আইসিসির কাছ থেকে সবসময়ই ভারত বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকে, এমন কথা স্বীকার করেছেন ভারতের খ্যাতনামা ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারও। আইসিসি থেকে কোনো দল যখন বাড়তি সুবিধা পাবে, সেখানে তাদের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে তো প্রশ্ন ও বিতর্ক থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের নবম আসরের শিরোপা তুলে নিয়েছে ভারত। এই জয় নিয়েও ক্রিকেটবিশ্বে নানারকম প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে ফাইনাল ম্যাচে ভারতকে বিতর্কিত মন্তব্য শুনতে হচ্ছে ম্যাচের শেষ ওভারে সূর্যকুমার যাদবের বাউন্ডারি ঘেঁষে নেয়া ক্যাচের জন্য।
শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে দক্ষিণ আফ্রিকার তখনও প্রয়োজন ১৬ রান। স্ট্রাইকে আছেন হার্ড-হিটার ডেভিড মিলার। ম্যাচটা তখনো প্রোটিয়ারা জিততে পারে এমন আশাতেই ছিল সমর্থক ও দর্শকরা। হার্দিকের শেষ ওভারের প্রথম বলে সজোরে উড়িয়েও মেরেছিলেন মিলার। লং অফে উড়িয়ে মারা শটটি সীমানা দড়ির খুব কাছ থেকে ধরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বল ছেড়ে দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যান সূর্যকুমার। পরে নিজের শরীর নিয়ন্ত্রণে এনে ফের মাঠে ঢুকে বলটি ধরেন। সঙ্গে সঙ্গে আঙুল উঁচিয়ে দেখান আউটের সিগনাল। খালি চোখে এই ক্যাচ নিয়ে বিতর্কের সুযোগ খুব কমই।

সুর্যকুমারের ক্যাচটির মতো ক্যাচ এর আগেও ক্রিকেটে বহুবার দেখা গিয়েছে। নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত ক্যাচ ছিল, নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েই ফিল্ডিংয়ের দায়িত্বটা পালন করেছেন সূর্য। তবে বিতর্কের সুযোগটা করে দিয়েছে আইসিসি। কেননা, রিপ্লে পরীক্ষা করে মিলারকে আউট দেয়ার আগে যথেষ্ট সময় নেননি আম্পায়ার। সীমানা দড়ির দিক থেকে দেখানো হয়নি ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল। সূর্যের পায়ের এ পাশ থেকে বার বার দেখানো হয়েছে আউটটি। কিন্তু সীমানা দড়ির অপর পাশ থেকে একবারও কেন দেখানো হলো না; তা নিয়েই বিতর্ক জোরদার।
বিষয়টি নিয়ে ভক্ত মনে তৈরি হয়েছে সংশয়। তাহলে কি মিলার আসলে আউট ছিলেন না!? কোনোভাবে সীমানা দড়ি কি স্পর্শ করেছিল সূর্যের পা? তাছাড়া রিপ্লেতে সীমানা দড়িটিও কিছুটা সরে গেছে বলে মনে হচ্ছিল। কারণ ঘাসের ওপর বাউন্ডারি লাইনে সাদা দাগ স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠছিল রিপ্লেতে। আর সেই দাগের ওপরই পা ছিল সূর্যকুমারের, যা আউট নিয়ে বিতর্ক আরও উসকে দিচ্ছে। আইসিসির ১৯.৩.২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘সীমানা চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত কোনো কঠিন বস্তু যদি কোনো কারণে বিঘিœত (সরে যায়) হয়, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব তা ঠিক করতে হবে। খেলা চলতে থাকলে বল ডেড হওয়া মাত্রই এ কাজ করতে হবে।’
আর এই নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন ঘটেছে ম্যাচটিতে। বাউন্ডারি লাইন সরে আসা হলেও তা পূর্বের জায়গায় ঠিক করা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হচ্ছে নানা বিতর্ক। যেখানে অনেকেরই দাবি আইসিসি ইচ্ছে করেই ভারতকে শিরোপা জেতাতে এমনটি করেছে। নয়তো মিলারের ওই শটটিতে ৬ রান পেতো পারত দক্ষিণ আফ্রিকা। আর তা হলে ম্যাচটাও জিততে পারত তারাই, সঙ্গে বিশ্বকাপটাও। যা তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে বলেই দাবি সমালোচকদের।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এইডেন মার্করাম বলেছেন, ‘সত্যি বলতে, আমি এটা এখনও দেখিনি। দেখতে পারিনি। হ্যাঁ, রিপ্লে একটু দ্রুতই হয়েছে। অবশ্যই তারা বেশ নিশ্চিতই ছিল যে এটা আউট এবং এই কারণেই রিপ্লে দ্রুত দেখেছে। এখন তো যা হওয়ার তাই হয়ে গেছে।’

 


আরো সংবাদ



premium cement