১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কবে অবসর তাদের!

ক্রিজে আলোচনায় ব্যস্ত সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ : ফাইল ফটো -

ক্রামবোর্ডে অনেকটা টাচে খেলার মতো কিংবা সিনেমার ডায়ালগের মতো ‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে’। টি-২০ বিশ্বকাপে সুপার এইটে খেলল বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। আর সেমিতে উঠতে ব্যর্থ হলো কি না অস্ট্রেলিয়া! বাংলাদেশের হারের সাথে সাথেই স্বপ্ন শেষ অস্ট্রেলিয়ারও। ১২.১ ওভারে ১১৬ রান করলে সেমিফাইনাল খেলত টাইগাররা। সেটি যখন হয়নি, তখন বাংলাদেশ জিতলেও সেমিতে যেতো অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত সেটাও হয়নি। বাংলাদেশের হারে অস্ট্রেলিয়ার বিদায়ের সাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেও বিদায় জানালেন ডেভিড ওয়ার্নার। এই অজি ব্যাটসম্যান তার বর্ণাঢ্য ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বড় মঞ্চ থেকে।
ডেভিড ওয়ার্নারের অবসরের দিনে আরো দু’টি বিদায়ের ঘোষণার অপেক্ষায় ছিল গোটা বাংলাদেশও। কিন্তু সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা নীরব থাকলেন। বড় মঞ্চে ক্যারিয়ারের ইতি টানার সুযোগটা থাকলেও নিলেন না তারা। বিশ্বমঞ্চে সম্মানের সাথে বিদায় নেয়াটা হলো না তাদের। মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীমের দেখানো পথেই হাটলেন সাকিব-মাহমুদুল্লাহ। কি কারণে অবসরের বিষয়ে তাদের মুখে তালা। সেটি তারাই ভালো বলতে পারবেন।
২০২১ ওমান-সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বাজে টি- ২০ বিশ্বকাপ কাপ শেষ করেছিল। তখনই গুঞ্জন ছিল এবার হয়তো তিনি বিদায় বলবেন। কিন্তু না ধরে রাখলেন নিজের জায়গা, খেলেন চলতি বিশ্বকাপেও। অন্য দিকে দেশের হয়ে টানা ৯টি টি-২০ বিশ্বকাপ খেলা সাকিবও তার অবসর নিয়ে রেখে দিলেন রহস্য। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বড় মঞ্চ থেকে অবসরে যাওয়ার কোনো উদাহরণ নেই। ধারণা করা হচ্ছিল সাকিব হয়তো সেই পথে হাটবেন না। কিন্তু ইতিহাস ধরে রেখে তিনিও হতে পারলেন না ব্যতিক্রম। সাকিব হয়তো ব্যবসায়ে এতটাই মগ্ন ক্রিকেট ছাড়লে তার ব্যবসার আকর্ষণ অনেকটাই কমে যেতে পারে। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ তো অত লোভী নন। তাই প্রশ্ন উঠেছে তারা কবে অবসরে যাবেন?
টাইগারদের কোচ চন্ডিকা হাথুরু সিংহে বলেছিলেন- মাহমুদুল্লাহ চলে না। তাকে নানাভাবে দলের বাইরে রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে ২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলে জায়গা করে নেন। সেখানে দলের সব ব্যাটারদের ব্যর্থতার মাঝে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে প্রমাণ করেন তিনি ফুরিয়ে যাননি। এরপর টি-২০ বিশ্বকাপেও জায়গাটা পাকাপোক্ত করেন ৩৮ বয়সী এই অলরাউন্ডার। দলের হয়ে ৭ ম্যাচে কিছু কার্যকর ইনিংস খেলে দলের জয়ে ভূমিকা রাখলেন। কিন্তু মোটা দাগে তার পারফরম্যান্স আবারো তিনি ব্যর্থ ফিনিশারের ভূমিকাতে।
তার ব্যাট থেকে এসেছে সাত ইনিংসে মাত্র ৯৫ রান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে হারের অন্যতম কারণ তার নতজানু ব্যাটিং। শেষ চারের টিকিট কাটতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৯ বলে ৪২ রান। ক্রিজে ছিলেন মাহমুদুল্লাহ, নূর আহমেদের করা ওই ওভারে পাঁচটি বল ডট দেন তিনি। বাকি বলটি বাউন্ডারিতে পরিণত করলেও মূলত ওই ওভারেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলার সাথে জয়ের স্বপ্নও। বয়সের ভারটা যেন হঠাৎ করেই চলে আসে তার ভেতরে। পরের ওভারে রশিদ খানের বলেও ব্যাটাররা খেলেছেন রয়েসয়ে। সেই ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদুল্লাহ আউট হন ৯ বলে ছয় রান করে। বাড়িয়ে দিয়ে যান দলের চাপ, যা পরের ব্যাটার নিতে ব্যর্থ।
২০০৭ থেকে এখন পর্যন্ত ৮ বিশ্বকাপে খেলেন তিনি। এর মধ্যে ৩৭ ম্যাচে মাত্র একটি ফিফটিতে করেছেন ১৭.৬১ গড়ে ৪৫৮ রান। সবমিলিয়ে দেশের হয়ে ১৩৮ টি-২০ ম্যাচে ১১৭ স্ট্রাইক রেটে ২৩.৭০ গড়ে তার সংগ্রহ ২৩২৯ রান।
অন্য দিকে সাকিব আল হাসান তার ৯ বিশ্বকাপ আসরে দেশের জন্য বড় কোনো অর্জন উপহার দিতে পারেননি। চলতি আসর শেষ করলেন আরো বড় হতাশা উপহার দিয়ে। আফগানদের বিপক্ষে দলের হাল ধরতে তাকে নামানো হয়েছিল চার নম্বরে। কিন্তুতিনি যেভাবে আউট হলেন তা শতভাগ অবাক করার মতোই। তার অভিজ্ঞতার উপর ভরসা করে দলের সবচেয়ে সফল ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়কে পরে নামানোর মতো জুয়া খেলেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু যাকে ভাবা হচ্ছিলো তুরুপের তাস তিনি যে আর সেই সাকিব নেই!
প্রায় ৩৮ বছর ছোঁয়া দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার চলতি আসর শেষ করেছেন সাত ম্যাচে ১৮.৫০ গড়ে ১১১ করে। আর ১২৯ টি-২০ ম্যাচে সাকিবের গড় মাত্র ২৩। তবে সাকিব ও মাহমুদুল্লাহদের অবসর না নেয়ার পেছনের কারণটাও বেশ সমালোচিত। ধারণা করা হয় ব্যবসায়ের যেসব চুক্তি এখনো তাদের আছে অবসর নিলে সেগুলো ভেঙে যাবে। গুনতে হবে বড় লোকসান, আর সেটির কথা ভেবেই বিদায় বলতে তাদের হয়তো এত দ্বিধা।
‘সাকিব-মাহমুদুল্লাহ এখন আর অটোচয়েজ নন’
এদিকে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল প্রশ্ন তুলেছেন এই দুই ক্রিকেটারকে ঘিরে অটোচয়েজ নিয়ে।
আশরাফুল বলেন, ‘মাহমুদুল্লাহ ওয়ানডে বিশ্বকাপে রান করার পর বোর্ড পরিচালকরা তাকে অটো চয়েস বানিয়ে দিলেন। তাদের বোঝা উচিত ছিল, ওয়ানডেতে ভালো খেলা মানে টি-২০তে অটোচয়েস হয়ে যাওয়া না। এই বিশ্বকাপের পর নিশ্চয়ই নীতিনির্ধারকরা উপলব্ধি করতে পারছেন, মাহমুদুল্লাহকে অটোচয়েস বলা ঠিক হয়নি।’
সাকিব নিয়ে তিনি বলেন, ‘সাকিব তো ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে চোখের সমস্যায় ভুগছেন। ভারত বিশ্বকাপে ভালো খেলেননি। টি-২০ বিশ্বকাপে ফ্লপ। আমি মনে করি, বিসিবির অটোচয়েস নীতি থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।’


আরো সংবাদ



premium cement
সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের বাবার কবরে অগ্নিসংযোগ মামলা শেষ হলে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান : মির্জা ফখরুল কালিয়াকৈরে ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা ৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি-ছিনতাইয়ে র‍্যাবের ১৬ সদস্য আটক : ডিজি মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর থেকে শত শত সৈন্যসহ জেনারেল আটক শনিবার থেকে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে’ পাওনা টাকা চাওয়ায় চা দোকানির হাত ঝলসে দেয়ার অভিযোগ হাসিনার বিবৃতিকে ভারত সমর্থন করে না : বিক্রম মিশ্রি ডুয়েটে কৃষি যন্ত্রপাতি প্রতিভা অন্বেষণে সেমিনার ও প্রদর্শনী মেলা শুক্রবার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

সকল