১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আফগানদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ

বিশ্বকাপে তিনবার কাছাকাছি গিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারেনি আফগানিস্তান। গতকাল চতুর্থবারের দেখায় অসিদের হারানোর পর এমন উল্লাসতো থাকবেই আফগানদের : ইন্টারনেট -

বিশ্বকাপে সুপার এইটে আফগানিস্তান-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আফগানদের মধ্যে একটা জেদ কিংবা ক্ষোভ যাই বলা হোক না কেন সেটি কাজ করছিল। তাদের শারীরিক ভাষা এবং এগ্রেসিভ মানসিকতা পুরো ম্যাচজুড়ে ছিল। হবেই না কেন! নানা অজুহাতে আফগানিস্তানের সাথে দু’টি সিরিজ বাতিল করে নিজেদের মাহাত্ম জাহির করেছিল অস্ট্রেলিয়া। গতকালের এই জয় অস্ট্রেলিয়ানদের শুধু উচিত জবাব দেয়াই নয়, রশিদ-নবি-গুরবাজদের তথা পুরো আফগানিস্তান দলের ক্ষোভেরও বিস্ফোরণ।
বিশেষ কোনো ঘটনা ঘটতে যাওয়ার আভাস মাঝে মধ্যে আগেই পাওয়া যায়। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর আভাসও আফগানিস্তান দিয়ে রেখেছিল। শুধু ঐতিহাসিক জয়টা পাওয়া হচ্ছিল না শুধু একজনের কারণে। তিনি হলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আগের দু’বার অস্ট্রেলিয়ার ত্রাতা বনে যাওয়া ম্যাক্সওয়েল এবার পারেননি। তাকে আউট করার একটা উপায় খুঁজছিল রশিদ খানের দল। ৪১ বলে ৫৯ করে গুলবদিন নাইবের উল্লাস ছিল দেখার মতো।
অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর ছক কষছিল ২০২২ টি-২০ বিশ্বকাপ অ্যাডিলেড থেকেই। অস্ট্রেলিয়া ১৬৮/৮ রানের জবাবে আফগানিস্তান ১৬৪/৭ করলে ৪ রানে জয় অসিদের। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৩২ বলে ৫৪*, এরপর মুম্বাইয়ে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে আফগানিস্তান ২৯১/৫ করলে অস্ট্রেলিয়া ২৯৩/৭ করে তিন উইকেটের জয় পায়। অতিমানবীয় ইনিংস খেলেন সেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ২০১*। চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে সেন্ট ভিনসেন্টে আফগানিস্তান ১৪৮/৬ করলে অস্ট্রেলিয়া ১২৭ রানে অলআউট হলে আফগানিস্তান ২১ রানে জয়ী হয়।
পেসার গুলবাদিন নাইবের বোলিং নৈপুণ্যে অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয়ের নজির গড়েছে আফগানিস্তান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ছয়বারের দেখায় এই প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে হারাল আফগানিস্তান। এই জয়ে সুপার এইট পর্বে দুই ম্যাচে ২ পয়েন্ট আছে আফগানিস্তানের। একই অবস্থা অস্ট্রেলিয়ারও। শেষ রাউন্ডের ম্যাচে ভারতের কাছে অস্ট্রেলিয়া হারলে এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতলেই সেমিফাইনালে খেলবে আফগানরা। সুপার এইটে দুই ম্যাচ খেলে জয় না পেলে এখনো বিশ্বকাপে টিকে আছে বাংলাদেশ। শেষ রাউন্ডের ম্যাচে ভারতের কাছে অস্ট্রেলিয়া হারলে এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতলে সেমির দৌড়ে থাকার অণুু পরিমাণ সম্ভবনা আছে বাংলাদেশের। তখন রান রেট বিবেচনায় বসতে হবে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানকে।
গতকাল সেন্ট ভিনসেন্টে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নেমে আফগানিস্তানকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। উদ্বোধনী জুটিতে ৯৫ বলে ১১৮ রান যোগ করেন তারা। এবারের বিশ্বকাপে এই নিয়ে তৃতীয়বার শতরানের জুটি গড়লেন গুরবাজ ও ইব্রাহিম। জুটি গড়ার পথে টি-২০ ক্যারিয়ারে গুরবাজ দশম ও ইব্রাহিম অষ্টম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ১৬তম ওভারে গুরবাজকে থামিয়ে আফগানিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন টি-২০ এক নম্বর অলরাউন্ডার অস্ট্রেলিয়ার পেসার মার্কাস স্টয়নিস। চারটি করে চার-ছক্কায় ৪৯ বলে ৬০ রান করেন গুরবাজ। ১৭তম ওভারে অস্ট্রেলিয়া স্পিনার জাম্পার শিকার হন ছয়টি চারে ৪৮ বলে ৫১ রান করা ইব্রাহিম। এ ম্যাচেও হ্যাটট্রিক করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্স। ১৮তম ওভারের শেষ বলে আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খানকে এবং শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে করিম জানাত ও নাইবকে আউট করে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন কামিন্স। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি।
টি-২০ ক্রিকেটে ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে টানা দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়লেন কামিন্স। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে ১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে হ্যাটট্রিক করেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার ওয়াসিম আকরাম। এ ছাড়া টি-২০ বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে এখন দু’টি হ্যাটট্রিকের মালিক কামিন্স। ওয়ানডে বিশ্বকাপে দু’টি হ্যাটট্রিক আছে শ্রীলঙ্কার পেসার লাসিথ মালিঙ্গার। কামিন্সের তোপে শেষ পাঁচ ওভারে ছয় উইকেটে মাত্র ২৯ রান যোগ করতে পারে আফগানিস্তান। শেষ পর্যন্ত ছয় উইকেটে ১৪৮ রানের সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান।
১৪৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৩৩ রানে তিন উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ উইকেটে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও স্টয়নিসের ৩২ বলে ৩৯ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠে অস্ট্রেলিয়া। ১১তম ওভারে স্টয়নিসকে ১১ রানে আউট করে আফগানিস্তাকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু এনে দেন নাইব। এরপর আরো তিন উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারের মুখে ঠেলে দেন নাইব। টিম ডেভিডকে ২, ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪১ বলে ৫৯ রান করা ম্যাক্সওয়েলকে এবং কামিন্সকে ৩ রানে বিদায় দেন নাইব। এতে ১১১ রানে অষ্টম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত ১৯.৪ ওভারে ১২৭ রানে গুটিয়ে ম্যাচ হারে অস্ট্রেলিয়া। এই হারে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি টানা ৮ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড থামল অসিদের। নাইব চারটি এবং নাভিন তিনটি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান : ১৪৮/৬, ২০ ওভার (গুরবাজ ৬০, ইব্রাহিম ৫১, কামিন্স ৩/২৮)।
অস্ট্রেলিয়া : ১২৭/১০, ১৯.২ ওভার (ম্যাক্সওয়েল ৫৯, মার্শ ১২, নাইব ৪/২০)।
ফল : আফগানিস্তান ২১ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : গুলবাদিন নাইব (আফগানিস্তান)।


আরো সংবাদ



premium cement
রাষ্ট্র মেরামতের সময় জানতে চাওয়ার অধিকার জনগণের রয়েছে : তারেক রহমান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রশিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা আ’লীগের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে পাবনায় বিক্ষোভ গুম কমিশনের প্রতিবেদনে ভয়াবহ নির্যাতনের চিত্র বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা : সোনাগাজীতে আ’লীগ নেতা গ্রেফতার দেলদুয়ারে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সিএনজিচালক নিহত বরখাস্ত সিপাহী শাহীন বাহিনী সম্পর্কে অপপ্রচার করছেন : বিজিবি সব কোচের সাথে যেন সমান বিচার করা হয় : বার্সেলোনা কোচ বিজয় দিবসে শিশু পার্কে বিনা টিকিটে প্রদর্শনীর নির্দেশ লাউয়াছড়া বনে পাহাড়িকার চার বগি বিচ্ছিন্ন

সকল