১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঈদের দিনই বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ

সেন্ট ভিনসেন্টের আরনোস ভেল গ্রাউন্ডে অনুশীলনের সময় বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা : বিসিবি -

‘হিমালয় কন্যা’ নেপাল যেন স্বপ্নের মতোই সময় কাটাতে চেয়েছিল গতকাল। কিন্তু একটি রানের আক্ষেপে স্বপ্ন ভেঙেছে তাদের। জয়ের খুব কাছে গিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে মাত্র ১ রানে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে রোহিত পাউডেল-স্বন্দীপ লামিচানের। নেপালের এই হারে গ্রুপ ‘ডি’ থেকে বাদ পড়ল শ্রীলঙ্কা ও নেপাল। আর দক্ষিণ আফ্রিকা আগে থেকেই সুপার এইটে উঠে গেছে। নেপালের বিদায় হলেও গ্রুপ ডি থেকে নাটকীয়তা শেষ হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে আগামিকাল ভোর সাড়ে ৫টার ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে নেপাল জয়ী হলে তাদের পয়েন্ট থাকবে ৩। যেখানে আগেই ৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে বাংলাদেশ।
তবে গ্রুপ পর্বে নিজেদের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচটি যেদিন হবে সেদিন বাংলাদেশে ঈদুল আযহা। নেপালকে হারিয়েই ঈদের দিনটি উদযাপন করতে চায় টাইগাররা। কোনোপ্রকার সমীকরণ ছাড়াই টি-২০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্বে যেতে চায় শান্ত বাহিনী। এখন পর্যন্ত একবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-নেপাল। সেটি ২০১৪ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে। প্রথম রাউন্ডে গ্রুপ ‘এ’র ম্যাচে নেপালকে ৮ উইকেটে হারিয়েছিল টাইগাররা।
‘ডি-২’ স্পটের জন্য লড়াইয়ে আছে বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডস। একই দিন সকাল সাড়ে ছয়টায় ম্যাচ রয়েছে শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের। এ ক্ষেত্রে লাল সবুজদের জন্য সহজ সমীকরণ হচ্ছে নেপালের বিপক্ষে জয় পেলে ২ পয়েন্ট বা বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও ১ পয়েন্ট পেলেও মোট ৫ পয়েন্ট নিয়ে সুপার এইটে উঠে যাবে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে নিজেদের শেষ ম্যাচ ডাচরা জিতলে ৪ পয়েন্ট হবে তাদের। বাংলাদেশ হেরে গেলে আর নেদারল্যান্ডস শ্রীলঙ্কাকে হারালে কিছুটা গাণিতিক হিসাব আসবে। আপাতত টাইগারদের রানরেট ০.৪৭৮, আর নেদারল্যান্ডসের রানরেট -০.৪০৮। বাংলাদেশের সুপার এইটে যাওয়ার সমীকরণ আপাতত কঠিন মনে হচ্ছে না।
শ্রীলঙ্কাকে দুই উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র ১১৪ রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে চার রানের হেরেছে টাইগাররা। প্রোটিয়াদের কাছে মাত্র চার রানের হারে হৃদয় ভাঙলেও বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেনি। তৃতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ২৫ রানে হারায় টাইগাররা। তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকে সুপার এইটে কাছাকাছি বাংলাদেশ।
২০০৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপেই সুপার এইটে উঠেছিল বাংলাদেশ। এরপর আর কোনো আসরেই প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকাতে পারেনি। দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলার সুর্বণ সুযোগ এখন বাংলাদেশের সামনে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের প্রথম আসরে জয় দিয়ে আসর শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছয় উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল টাইগাররা।
আগামী ১৭ জুন বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। এ দিন নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ঈদের দিন নেপালের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ নিয়ে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চান দলের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ‘নেপালের বিপক্ষে ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। জিতলেই আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে । স্বাভাবিকভাবেই মুখিয়ে আছি সামনের ম্যাচের জন্য। আশা করি, ঈদের দিনে আমরা মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারব।’
ডাচদের কাছে ছয় উইকেটে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করে নেপাল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাদের পরের ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়। তবে তৃতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াইয়ের পর মাত্র এক রানে হেরে যায় নেপাল। তিন ম্যাচে এখনো জয়ের স্বাদ না পাওয়া নেপাল শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাতে চায়। নেপালের অধিনায়ক রোহিত পাউডেল বলেন, ‘বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচটা জয়ে দিয়ে শেষ করতে চাই। বাংলাদেশ শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। সুপার এইট নিশ্চিত করতেই জয়ের জন্য মরিয়া থাকবে তারা। তবে আমরা শেষ ম্যাচে নিজেদের সেরাটা দিতে মুখিয়ে আছি।’
সাউথ আফ্রিকাকে হারাতে না পারলেও বাংলাদেশকে হারিয়ে সেই আক্ষেপ মেটাতে চায় নেপাল। অধিনায়ক যোগ করেন, ‘সুপার এইট নিয়ে অবগত ছিলাম। আজ (গতকাল) জিতলে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটা নকআউট হতো। এটা যেহেতু হয়নি, পরের ম্যাচ গর্বের জন্য খেলব। আমরা টেস্ট খেলুড়ে দেশকে হারাতে চাই। আজকের (গতকাল) ম্যাচটা বাংলাদেশের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাস জোগাবে।’


আরো সংবাদ



premium cement