কেমন হলো টি-২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াড
- জসিম উদ্দিন রানা
- ১৫ মে ২০২৪, ০০:০৫
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে নেতৃত্ব দেবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তাসকিন আহমেদ। নতুন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেল, প্রধান কোচ হাথুরুসিংহে ও অধিনায়ক মিলে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য শক্তিশালী দল গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড কেমন হচ্ছে, অনেকটা তা অনুমেয়ই ছিল। সে ধারাবাহিকতার বাংলাদেশের প্রাথমিক স্কোয়াডে প্রত্যাশিত কেউই বাদ পড়েননি।
অফ ফর্মে থাকা লিটন দাস উইকেটকিপার কোটায় দলে টিকে গেছেন। জিম্বাবুয়ে সিরিজে ব্যাট না হাসলেও শান্তই থাকছেন অধিনায়ক। অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকারদের সাথে তৌহিদ হৃদয়, তানজিদ হাসান তামিম, জাকের আলী অনিকরা সামলাবেন ব্যাটিংয়ের গুরুভার। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ফিট হতে পারলে পেস ইউনিটের নেতা হবেন তাসকিন। সঙ্গী অভিজ্ঞ মোস্তাফিজ ও শরিফুল ইসলাম। চতুর্থ পেসার হিসেবে তানজিম সাকিবও আছেন। দলে ঢোকার লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত সাইফউদ্দিনকে পেছনে ফেলেছেন এই তরুণ পেসার। টি-২০ সংস্করণের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ছাড়াও স্কোয়াডে আছেন তিন স্পিনার- শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন ও তানভীর ইসলাম।
প্রত্যাশা দ্বিতীয় রাউন্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে প্রথম পর্বেই কঠিন পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডস এবং নেপালের মতো খর্বশক্তির দল গ্রুপে থাকলেও সাউথ আফ্রিকা এবং শ্রীলঙ্কার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে হবে। আসন্ন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে বলেই বিশ্বাস প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর। ‘প্রত্যাশা অবশ্যই জাতীয় দলের কাছে। আমরা যেন প্রথম রাউন্ড পার করে পরের রাউন্ডে যেতে পারি। দ্বিতীয় রাউন্ডে গেলে সেখান থেকে আরো একটা প্রত্যাশা থাকবে পরের রাউন্ডে যাওয়ার।’
তিনি যোগ করেন, ‘প্রাথমিক পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি হবে চাপের। সেটি জিতলে পরের তিন ম্যাচের দুটো ম্যাচে জেতার খুব সম্ভাবনা দেখছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫০-৫০ লড়াই হবে। পরের দুটো ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা বেশি বলে দ্বিতীয় রাউন্ডে পথটা সুগম হতে পারে।’
এগিয়ে ছিলেন সাকিব
গত ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশ একটি খসড়া দল আইসিসির কাছে পাঠিয়েছিল। সেই দলে সাইফউদ্দিন ছিলেন। তবে চূড়ান্ত দলে নির্বাচকরা তানজিম হাসান সাকিবকে ফিরিয়েছেন। লিপুর কথায়, ‘সাকিবকে শ্রীলঙ্কা সিরিজেও আমরা দেখেছি। তার একাগ্রতা, মাঠে দেয়ার চেষ্টা সেটা সাইফউদ্দিনের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে রেখেছে। আমাদের দেখার প্রয়োজন ছিল সাইফউদ্দিন কেমন করেন। তার পারফরম্যান্সটাও এনালাইসিস করার দরকার ছিল। আস্থার জায়গা থেকে কিন্তু সাইফউদ্দিনকে নিয়ে ভেবেছিলাম। তাকে পর্যবেক্ষণ করে মনে হয়েছে প্রত্যাশার যে জায়গাটা, দলের আস্থার যে জায়গাটা-সেই জায়গায় কিছুটা এগিয়ে ছিল তানজিম সাকিব।’
ফর্মে ঘাটতি তারপরও লিটনে আস্থা
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের তিন ম্যাচ মিলিয়ে ৪৩ বলে ৩৬ রান। পরে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে একাদশে রাখা হয়নি। সবশেষ ১০ টি-২০তে তার ফিফটি নেই। ফর্মের বেহাল দশা সব সংস্করণেই। সবশেষ ১০ ওয়ানডেতেও তার ফিফটি নেই। টেস্টে সবশেষ সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চার ইনিংস মিলিয়ে ৬৭ রান। কয়েকটি ম্যাচে তার আউট হওয়ার ধরনও ছিল ভীষণ দৃষ্টিকটু। সব মিলিয়ে তার ব্যাটিংয়ের সামগ্রিক চিত্র যে দলের জন্য দুর্ভাবনার, সেটি অকপটেই মেনে নিলেন প্রধান নির্বাচক। তারপরও ফর্মহীন ব্যাটার লিটন দাসকে নিয়েই বিশ্বকাপে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
প্রধান নির্বাচকের কথায়, ‘লিটনের পরিবর্তে ভাবতে গেলে উইকেটকিপিং সামর্থ্যও সেখানে এসেছে। কারণ, দু’জন কিপার নিয়ে যেতেই হবে। শুধু ওপেনিংয়ের বিকল্প বললে হয়তো অন্য নাম আসতো। এ ক্ষেত্রে (কিপার ও ওপেনার) এনামুল হক বিজয়ের নাম আলোচনা করেছি। কিন্তু ফর্মের ঘাটতির পরও লিটনের ওপর আমরা আস্থা রেখেছি। তাকে নিয়ে কিন্তু কাজ করছে কোচিং স্টাফরা।’
দুশ্চিন্তা টপ অর্ডারেও
দুশ্চিন্তার জায়গা শুধু লিটনই নয়। টপ অর্ডারে নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকারের অবস্থাও তথৈবচ। লিটনের জায়গায় সুযোগ পেয়ে সৌম্য জিম্বাবুয়ে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে করেছেন ৩৪ বলে ৪১ ও ৭ বলে ৭। সবশেষ ২৩ টি-২০ ইনিংসে তার ফিফটি নেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ৫ ম্যাচ মিলিয়ে শান্তর রান ৮১। স্ট্রাইক রেট ১০৩.৮৪। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের ফর্ম নিয়ে নির্বাচক বলেন, ‘সত্যি বলতে, ফর্মের ঘাটতি তো অনেক বেশি। এটা বাস্তব সত্য। ফর্ম পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যাপক চেষ্টা করতে হবে। এই ফর্ম চলতে থাকলে অবশ্যই তা চিন্তার ব্যাপার। আমরা যেটা বলি যে, কোয়ালিটি ইজ পার্মানেন্ট, ফর্ম ইজ টেম্পোরারি। ওপেনিংয়ে তাদের সামর্থ্য ফিরে আসুক, স্বমহিমায় ফিরে আসুক। তাতে দলের জন্য উপকার হবে, নিজেদের জন্যও হবে। পরের ব্যাটারদের (মিডল ও টেল অ্যান্ডার) জন্যও সহজ হবে।’
তাসকিনের চোট ভাগ্যের লিখন
বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তো তাসকিন আহমেদ জায়গা পেলেন, কিন্তু কোনো ম্যাচে আদৌ কি খেলতে পারবেন? বড় প্রশ্ন এখন এটিই। স্বয়ং প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেনের কণ্ঠেই অনিশ্চয়তার সুর। বিশ্বকাপের ঠিক আগে এমন চোটের জন্য দুর্ভাগ্যকেই দায় দিলেন তিনি। ‘এটা আসলে দুর্ভাগ্য। চিকিৎসা বিভাগের তথ্যমতে, তাসকিন হয়তো বিশ্বকাপ চলার কোনো একটা পর্যায়ে সুস্থ হয়ে যাবেন। শেষ পর্যন্ত যদি তাসকিন সুস্থ হতে না পারেন, তাহলে বিকল্প পথে হাঁটবে দল। সুযোগ পেতে পারেন হাসান মাহমুদ।’
যাকে বিশ্বকাপে পাওয়া নিয়েই রয়েছে শঙ্কা, তার কাঁধেই কেনো সহ-অধিনায়কত্বের ভার! এই প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক অবশ্য বল ঠেলে দিয়েছেন বিসিবির কোর্টে। ‘তাসকিন আরেক প্রজন্মের উদীয়মান একজন ক্রিকেটার। পেস বিভাগকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিভিন্ন সংস্করণে দীর্ঘ দিন ধরে জাতীয় দলের হয়ে খেলছে। সে জন্য হয়তো তাকে যোগ্য মনে করেছে বিসিবি।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা