সেমিপাকা বাড়ি পাচ্ছে ইয়ারজানের পরিবার
- আসাদুজ্জামান আসাদ
- ২৮ মার্চ ২০২৪, ০০:৫২
অবশেষে কুঁড়েঘর থেকে সেমিপাকা বাড়ি পাচ্ছেন নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে বাংলাদেশকে চ্যম্পিয়ন করানো ইয়ারজান বেগমের পরিবার। ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে টাইব্রেকারে বিজয় ছিনিয়ে আনার মূল কারিগর ইয়ারজান। পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের খোপড়াবান্দি গ্রামে ইয়ারজানের বাবা আব্দুর রাজ্জাকের ভাঙাচোরা ঝুপড়ি ভেঙে সেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক সুবিধাসংবলিত দুই কক্ষের সেমিপাকা ঘর। জেলা প্রশাসক মো: জহুরুল ইসলামের উদ্যোগে ও নির্দেশনায় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জাকির হোসেনের তত্ত্বাবধানে বাড়ির নির্মাণ করা শুরু হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
ইয়ারজানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টের রোগী। চলাফেরা করতে পারলেও কোনো কাজ করতে পারেন না তিনি। মা রেনু বেগমই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। অন্যের বাড়ি এবং ক্ষেতখামারে কাজ করে যা আয় করতেন তা দিয়েই চলত দুই মেয়েসহ চার জনের সংসার। ইয়ারজান বেগমের অসাধারণ নৈপুণ্যে ভারতের বিপক্ষে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ের পর থেকেই দেশের ফুটবলপ্রেমীদের সাথে আনন্দে ভাসছে ইয়ারজানের পরিবারসহ এলাকার মানুষ। তার পারিবারিক অবস্থা তুলে ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অনেকে আসছেন তার পরিবারের বাস্তব অবস্থা দেখতে। চেষ্টা করছেন সাধ্যমতো সহযোগিতা করার। ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসন, সদর উপজেলা প্রশাসন, র্যাব-১৩-এর পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। তা দিয়েই মূলত চলছে তাদের সংসার।
ইয়ারজানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি শ্বাষকষ্টের রোগী। আমি দুইবার টিবির চিকিৎসা নিয়েছি। কোনো কাজ করতে পারি না। ইয়ারজানের মায়ের সামান্য আয় দিয়েই আমাদের খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। মেয়েকে ভালো কিছু খাওয়াতে পারিনি। আর আমার ডানপিটে সেই মেয়েই কপাল খুলে দিয়েছে। মা রেনু বেগম বলেন, খেলার জন্য আমার মেয়ে ইয়ারজানকে কত মারধর করেছি। পরে যখন বুঝলাম সে ভালো খেলছে, তখন আর গালি দিতাম না। এখন সে বিদেশের মাটিতেও খেলে ভালো করেছে। ডিসি স্যার আমাদের বাড়ি করে দিচ্ছেন। আমার মেয়ে এখন ঢাকায়। সে যখন বাড়ি আসবে, দেখবে আমাদের আগের বাড়ি আর নাই। আমরা বসবাস করছি পাকা বাড়িতে। সে যে কী আনন্দ পাবে।
হাড়িভাসা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামুস কিবরিয়া প্রধান বলেন, ইয়ারজানের নেতৃত্বে আমাদের স্কুল পরপর তিনবার স্কুল পর্যায়ে ফুটবলে জেলা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। শুধু ফুটবল নয়; হ্যান্ডবল ও কাবাডিও ভালো খেলে সে। আমাদের স্কুলে তার মতো একজন মেধাবী খেলোয়াড়কে পেয়ে আমরা গর্বিত। ইয়ারজান লেখাপড়াতেও বেশ ভালো।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জাকির হোসেন বলেন, সেমিপাকা ঘরের পাশাপাশি থাকবে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। সেমিপাকা ঘর হলেও তা করা হচ্ছে ফাউন্ডেশন দিয়ে। পরবর্তীতে তারা ইচ্ছে করলে ঘরের ছাদ এমনকি দুইতলার কাজও করতে পারবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা