আস্থার প্রতিদান দেয়া শুরু শ্রাবণের
- ক্রীড়া প্রতিবেদক
- ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০৫
ছিলেন বসুন্ধরা কিংসেরই গোলরক্ষক। অনুশীলনে বেশ ভালো করছিলেন। কিন্তু আনিসুর রহমান জিকোসহ অন্য কিপারদের জন্য খেলারই সুযোগ হচ্ছিল না মেহেদী হাসান শ্রাবণের। তাই গত মৌসুমে তাকে লোনে দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রে। যেমন শেখ মোরসালিনকে মোহামেডানে দিয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। গত সিজনে মুক্তিযোদ্ধা রেলিগেটেড হয়ে গেলেও শ্রাবণ ছিলেন পোস্টের নিচে আস্থার প্রতীক। ফলে ফের তাকে নিয়ে আসে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। এবার কপালই খুলে যায় এই কিপারের। ক্লাব ফুটবলে জিকোর সাসপেনশন, অপর গোলরক্ষক মেহেদী হাসানের বাজে ফর্মই একাদশে ঠাই করে দেয় টিনএজ কিপারকে। ম্যাচের পর ম্যাচ ভুল করলেও তার ওপর আস্থা না রেখে উপায় ছিল না কোচের। শেষ পর্যন্ত নিজের সেরা ম্যাচ যেন খেলে ফেললেন এই উঠতি গোলরক্ষক। পরশু এবারের স্বাধীনতা কাপে তার প্রবল প্রতিরোধই সেমিফাইনালে ঢাকা আবাহনী বাধা টপকানো রবসন রবিনহোদের।
২০ বছর পেরুনোর আগেই জাতীয় দলে খেলে ফেলেছেন শ্রাবণ। সেটাও মূল কিপারের ইনজুরির সুবাদে। পায়ের চোট নিয়েই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলেন মিতুল মারমা। সেই ইনজুরি ভালো না হলেও সাহস নিয়ে লেবাননের বিপক্ষে পোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে যান তিনি। কিন্তু ইনজুরির অসহ্য ব্যথা প্রথমার্ধ শেষে আর মাঠে নামতে দেয়নি মিতুলকে। ফলে কোচ হাভিয়ার কাবরেরার হাতে বিকল্প ছিল পাপ্পু হোসেন ও মেহেদী হাসান শ্রাবণ। শ্রাবণ এই আগেই বসুন্ধরা কিংসের হয়ে এএফসি কাপে দু’টি ম্যাচ খেলেছেন। বাংলাদেশ দলের কোচ কাবরেবা তাই বসুন্ধরার এই কিপারকেই নামিয়ে দেন বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে। সেই ম্যাচে লাল-সবুজ জার্সিতে অভিষেক ঘটিয়ে ভুল করলেও দল হারেনি। তার মিস পাসের সুযোগে লেবানন লিড নিলেও পরে বাংলাদেশ সমতা আনে। এর পর থেকে কাবরেরা এবং বসুন্ধরার কোচ অস্কার ব্রুজন পাশে দাঁড়াতে থাকেন শ্রাবণের। তাদেই এই সার্পোটই ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে আগামীর ভবিষ্যৎ এই কিপারকে।
এএফসি কাপ খেলে মালদ্বীপ থেকে ফেরার পথে বিমানে মদ বহনের জন্য সাসপেন্ড হন বসুন্ধরা কিংস ও জাতীয় দলের এক নম্বর কিপার জিকো। ফলে কোচ দ্বিতীয় গোলরক্ষক মেহেদী হাসানকে সুযোগ দেন এএফসি কাপে উড়িষ্যার এফসির বিপক্ষে। অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে দুই ম্যাচে টাইব্রেকার ঠেকানো এই কিপার সে ম্যাচে ভালো করতে না পারায় শ্রাবণ হয়ে যান কোচ ব্রুজনের শেষ ভরসা। প্রায় প্রতি ম্যাচে হয় বক্সের সামনে ভুল পাস দিয়ে গোল খাইয়েছেন এই শ্রাবণ। অথবা বলের ফ্লাইট মিস করে। কিন্তু সেমিতে ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে যেভাবে তিনি পোস্টকে অক্ষত রেখেছেন তাতেই তার প্রতিভার স্বাক্ষর। নবীন এই গোলরক্ষকের হাতে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার তুলে নেয়া বাফুফে সদস্য মহিদুর রহমান মিরাজ বলেন, শ্রাবণতো আবাহনীর বিপক্ষে তার ক্যারিয়ার সেরা ম্যাচ খেলেছে। তিনটি নিশ্চিত গোল থেকে রক্ষা করেছেন প্রথমার্ধে। এতেই বসুন্ধরা কিংস লড়াই করার শক্তি অক্ষুণœ রাখে।
২৬ মিনিটে তিনি বাম দিয়ে শূন্যে শরীর ভাসিয়ে কর্নার করেন আবাহনীর এমেকা অগবগের শট। তাতেই বুঝিয়েছেন ম্যাচে পূর্ণ মনোযোগ থাকলে তিনিই সেরা কিপার। উল্লেখ্য, শ্রাবণের খেলা ম্যাচে এ পর্যন্ত হারের ঘটনা একটিই। আর তা এএফসি কাপের শেষ ম্যাচে উড়িষ্যার বিপক্ষে ০-১ গোলে।
কুমিল্লার ছেলে শ্রাবণ। জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার এনামুল হক শরীফের বিবিরবাজার ফুটবল একডেমিতে তার ফুটবলে হাতেখড়ি। সেখান থেকে বসুন্ধরা কিংসের অনূর্ধ্ব-১৮ দলে ডাক পান। পরে লোনে মুক্তিযোদ্ধায় যাওয়া। বসুন্ধরা কিংস ক্লাব সূত্রে জানা গেছে আবাহনীর গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের পর জাতীয় দলে দীর্ঘদেহী গোলরক্ষক এই শ্রাবণ। এই শারীরিক উচ্চতার জন্যই তার প্রতি বিশেষ কদর ক্লাবের কোচিং স্টাফদের। কারণ পোস্টের নিচে দীর্ঘদেহী গোলরক্ষকই থাকা অত্যাবশ্যক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা