১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৩ শাবান ১৪৪৬
`

সাবিনাদের কী গতি হবে

-

সাবিনা খাতুনের সাথে দুই দফা আলোচনা বাফুফে সভাপতি তাবিথ আওয়ালের। সর্বশেষ গত পরশুও বাংলাদেশ মহিলা দলের অধিনায়ক সাবিনাকে ডেকে তার সাথে কথা বলেন তাবিথ। এর পরও মন গলেনি বাংলাদেশ ক্যাপ্টেনের। অনড় অবস্থানে তার নেতৃত্বে ১৮ ফুটবলার। বাফুফে অবশ্য আপাতত এই বিদ্রোহী ফুটবলারদের চুক্তির বাইরে রেখেছে। চুক্তিতে নতুন ফুটবলাররা। সাবিনাদের দাবিকে আমলে না নেয়া, কোচ হিসেবে পিটার বাটলারকে বহাল রেখেই অন্যদের নিয়ে অনুশীলন চালানো এবং বিদ্রোহীদের চুক্তির বাইরে রাখা সবই কিন্তু সাবিনাদের বিষয়ে বাফুফের কঠোর মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ। এর পরও নড়চড় নেই সাবিনাদের অবস্থানের। তারা পিটাল বাটলার থাকলে অনুশীলনই করবে না। ১৮ ফুটবলার নিজ উদ্যোগে জিম সেশন করছে। তবে এভাবে চলতে থাকলে ফিটনেসে একেবারেই পিছিয়ে পড়বেন সাবিনারা। তখন ফের অবস্থানের বদল হলেও ফিটনেস ঘাটতির জন্য দলে জায়গা পাওয়া কঠিনই হয়ে যাবে তাদের। এতে জাতীয় দল সাময়িক ভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই গ্যাপ হয়তো বাংলাদেশ কিছু দিন পরেই পুষিয়ে নেবে; কিন্তু এই বিদ্রোহীরা বাতিলের খাতায় চলে গেলে তাদের ফেরা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে লাল-সবুজ জার্সিতে। এতে ক্রমেই হারিয়ে যাবেন এই তারকা ফুটবলাররা।
বাংলাদেশের নারী ফুটবলে প্রতিভার অভাব নেই। একজন চলে গেলে অন্যজন সেই জায়গা পূরণ করে নিচ্ছেন দ্রুতই। ২০২২ মহিলা সাফে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দল থেকে পরে সরে যান ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন ও সিরাত জাহান স্বপ্না। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারকে ছাড়াই গত বছর সাফ শিরোপা ধরে রাখে বাংলাদেশ। ২০২২ এর চ্যাম্পিয়ন দলের অন্যতম এবং ফাইনালে জোড়া গোল করা কৃষ্ণা রানী সরকার গত সাফের দলে থাকলেও নিয়মিত খেলতে পারেননি। তার অভাবও বুঝতে দেননি অন্যরা। এর আগে ডিফেন্ডার নার্গিস, মিডফিল্ডার মৌসুমী, স্ট্রাইকার আনু চিংরা বাদ গেলেও দলের কোনো সমস্যা হয়নি। এতেই বুঝা যাচ্ছে একজনের গ্যাপ পূরণে অন্যজন বেশ ভালোভাবেই সক্ষম। এমনিতেই সিনিয়রদের জায়গা টালমাটাল হয়ে গেছে উঠতিদের পারফরম্যান্সের কারণে। বাফুফের সুদৃঢ় পাইপলাইনের কারণেই একের পর এক প্রতিভা উঠে আসছে এবং প্রমাণও দিচ্ছে মাঠে। এখন এই বিদ্রোহ আরো বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে সাবিনাদের।
মোটামুটি নিশ্চিত কোচ বাটলারকে কোনোভাবেই বাদ দেবে না বাফুফে। আবার সাবিনাদের কোচ বয়কটের আন্দোলনের পরও বাফুফে এখনো তাদের নিয়েই আগামী জাতীয় দল গঠনেরই পক্ষে। যে কারণে এত বড় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কাজ করলেও এখনো তাদের বহিষ্কার করা হয়নি। ক্যাম্পে রেখে খাওয়ানো হচ্ছে। সভাপতি তাবিথ আওয়াল চাচ্ছেন কোচ বাটলার আর সাবিনাদের মধ্যে সুসম্পর্ক রেখেই জাতীয় দলের সাফল্যকে এগিয়ে নিতে। তাই ফের সাবিনাকে আলোচনার টেবিলে ডাকা বাফুফে সভাপতির। তবে এর পরও যদি ১৮ ফুটবলার তাদের আন্দোলন চালিয়ে যান তাহলে বাফুফেকে কঠোর হতেই হবে। তখন এই বিদ্রোহের অপরাধে বাদ পড়ার মতো শাস্তি পেতে হবে ১৮ ফুটবলারকে।
বাদ পড়লে যে তারা নিজ পারফরম্যান্সের গুণে ফিরে আসবে জাতীয় দলে সেটাও বেশ কঠিন। ফেরার মাধ্যম লিগ বা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। এই লিগগুলো কবে হবেÑ সেটিরও ঠিক নেই। তাই নিজেদের অপরাধের জন্য ১৮ ফুটবলার যদি বাদ পড়েন জাতীয় দল থেকে তাহলে তারা অস্তিত্বের সঙ্কটেই ভুগবে। তখন হয়তো বিভিন্ন জেলার অনুপযুক্ত মাঠে খ্যাপেই হবে ভরসা। কেউ কেউ খেলায় ছেড়ে দেবেন। বিষয়টিকে নিয়ে কেউ কেউ ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছেন। তবে এই ফুটবলাররা বাদ পড়লে তখন আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এ দিকে গতকালও বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার সাবিনাদের ডেকে বুঝিয়েছেন। বলেছেন, তোমাদের চুক্তিপত্র প্রস্তুত। অনুশীলনে যোগ দিয়ে চুক্তিপত্রে সই করো। তবে প্র্যাকটিসে না গেলে চুক্তিতে সই করা যাবে। সেখানেও অনড় অবস্থান ১৮ ফুটবলারের। সূত্র মতে, নারী উইং থেকে যা যা করণীয় তা করা হয়েছে। এখন সিদ্ধান্ত বাফুফের হায়ার অথরিটির।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল