টুপ করে এসে টুক করে চলে যাওয়ার দিন শেষ
- জসিম উদ্দিন রানা
- ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৪৫
বিপিএলের অবস্থা মুলত দেশের শেয়ারবাজারের মতো, বিনিয়োগকারী সংশয়ে থাকেন! বিপিএলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পেশাদারির চর্চা নেই। বিসিবি উচিত সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত বিশেষ কোনো দল বা ক্রিকেটার নয়, মাঠের ক্রিকেটের স্বার্থে আয়োজন হোক বিপিএলের। শর্তসাপেক্ষে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির সাথে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে অংশীদারি দিতে হবে। আর অবশ্যই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে গ্যারান্টি মানি দিতে হবে, খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের সাথে চুক্তির বিস্তারিত জানাতে হবে বোর্ডকে। কোনো ফাঁক-ফোকর রাখলে সেখানেই ঘাপলা হবে। বিসিবি যদি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে বোকাভাবে কিংবা দলগুলোর কর্ণধাররাও যদি বিসিবিকে বোকা ভাবে তাহলে সেটি মোটেই সমীচীন হবে। এ ক্ষেত্রে চুক্তি কথা বলবে। তাই চুক্তির আগে আদ্যপান্ত ক্লিয়ার হয়েই বিসিবি কিংবা বিপিএল কমিটিকে এগোতে হবে। এমন অনিয়ন্ত্রিত আসরে একজন মালিক এক রকম আত্মগোপনে চলে গেছেন। আরেকজন ক্রিকেটারকে ‘অপমান’ করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সাথে একাধিক ম্যাচ ঘিরে জুয়ার সন্দেহের মাতাল হাওয়া বয়েছে। তাতে বিপিএলের ক্ষতিই হয়েছে। এখন থেকে টুপ করে এসে বিপিএল শেষে টুক করে চলে যাওয়ার দিন শেষ।
ভিনদেশি কোচরা এ দেশে রাজত্ব করেন। কিন্তু স্থানীয় কোচদের নিয়ে কেউ কথা বলে না। স্বভাবতই এ নিয়ে তাঁদের আক্ষেপ আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এফেক্টেড হতে পারেন খেলোয়াড়রাও। বিসিবির একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী বিপিএল থেকে সব বিদেশী ক্রিকেটারের যাবতীয় দায়দায়িত্ব নেবে বোর্ড। উদ্যোগী হয়ে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকের দায়িত্ব নিচ্ছে তারা। কিন্তু বিপিএলে তো শুধু বিদেশীরাই খেলেন না, বরং স্থানীয় খেলোয়াড়দের পাল্লা ভারী। সেটি সাধারণত ৬৫-৩৫ শতাংশ।
পারিশ্রমিক নিয়ে এবার প্রথম অভিযোগ করেছিলেন স্থানীয় ক্রিকেটাররা। ফ্র্যাঞ্চাইজি শুধু খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নিয়ে ফাঁকিঝুঁকি করে না। কোচিং স্টাফদের অভিযোগও রয়েছে, যা প্রকাশ্যে আসেন না। থাকে চাপা ক্ষোভ। কোচিং স্টাফ মানে কিন্তু শুধু হেড কোচ নন, টিম বয়সহ অনেকেই রয়েছেন। যাদের অভিযোগ জানানোর কোনো জায়গা নেই। যে কারণে অনেক কিছুই থাকে অজানা।
এবারের আসরে ছাড়িয়ে গেছে অতীতের সবকিছু। প্রথমে পাওনা পরিশোধ না করার অভিযোগ গড়িয়েছে টিম বাস কর্তৃপক্ষের বকেয়া আদায়ের। এরও আগে ক্রিকেটারদের কিটব্যাগ হস্তান্তরে অস্বীকৃতি। দৈনিক ভাতা বাকি, এমনকি সব ফেলে দেশে ফেরার টিকিটের জন্যও আকুতি জানিয়েছেন দুর্বার রাজশাহীর ভিনদেশী ক্রিকেটাররা। এতে ক্রিকেট বিশ্বে দুর্নামের দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে এবারে। সেই দুর্নাম ঘোচাতে বিদেশী ক্রিকেটারদের দেখভালের পূর্ণ দায়িত্ব নেয়ার কথা জানিয়েছে বোর্ড।
বিসিবির উচিত স্থানীয় ক্রিকেটারদেরও আর্থিক নিরাপত্তার বলয়ে নিয়ে আসা। সাথে অবশ্যই কোচিং স্টাফদেরও। প্রধান কোচ থেকে শুরু করে বল বয়দের পারিশ্রমিকের দায়ভার নিতে হবে বিসিবিকে। অবশ্য খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তার সাথে চুক্তির এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির। তবে সব চুক্তির ‘গ্যারান্টার’ সংশ্লিষ্ট ক্রিকেট বোর্ড। কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে দায় চুকাবে বোর্ড। এরপর আর্থিক অনিয়মে অভিযুক্ত ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেবে বোর্ড। অতীতেও অনেক খেলোয়াড়ের পাওনা পরিশোধ করেছে বোর্ড। তাই বলে ফ্র্যাঞ্চাইজির ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে জমা দেয়া ‘গ্যারান্টি মানি’ থেকে তা অ্যাডজাস্ট করে নেয় বোর্ড।
অথচ এবারের আসরে একটি ছাড়া কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি গ্যারান্টি মানি জমা দেয়নি। তাই রাজশাহীর মালিকের পেছনে উদভ্রান্তের মতো ছুটেছেন খোদ বোর্ড সভাপতি। এবারের আসরের সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল দুর্বার রাজশাহীর মাঠের বাইরের নানা কাণ্ড। আধুনিক ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরের পেমেন্ট মডেল খুব পরিষ্কার। বোর্ড ফ্র্যাঞ্চাইজি সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক সংক্রান্ত বিবাদ মীমাংসা করবে। এখানে বিদেশী কিংবা স্থানীয়, খেলোয়াড় কিংবা কর্মকর্তা ভেদাভেদ করার সুযোগ নেই।
আসলে ভেদাভেদটা হয় কঠোর নজরদারির অভাবে। ফ্র্যাঞ্চাইজিকে অবশ্যই পুরো টিম লিস্ট আয়োজক সংস্থাকে দিতে হবে। হঠাৎ কোনো খেলোয়াড়ের সাথে চুক্তি হলে বিষয়টি সংস্থাকে তাৎক্ষণিক জানাতে হবে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলকেও অনুধাবন করতে হবে যে কেউ চাইলেই ফ্র্যাঞ্চাইজির অংশ হতে পারেন না। বিপিএলের কোনো দলে নাম লেখানোর ক্ষেত্রে ন্যূনতম একটি মানদণ্ড থাকতে হবে। এবার অন্তত দু’টি ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড় বাছাই চমকে দিয়েছে সবাইকে। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ না খেলা ক্রিকেটারের গায়েও উঠেছে বিপিএলের জার্সি!
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা