০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ২ শাবান ১৪৪৬
`

কঠোর হুঁশিয়ারি বিসিবি সভাপতির

-

চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে উঠেছে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ। অন্তত আটটি ম্যাচ সন্দেহের তালিকায় রয়েছে, যা নিয়ে তদন্তে নামছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু)। বিষয়টি নিয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, যদি ফিক্সিংয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এবারের বিপিএলে বেশ কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা গেছে। অনেক বল হয়েছে ওভারস্টেপ, কেউ কেউ প্রায় এক ফুট দূরে পা ফেলে বল করেছেন। এমনকি পিচের বাইরেও বল ফেলতে দেখা গেছে কয়েকবার। খেলোয়াড় বাছাই প্রক্রিয়াতেও অস্বাভাবিকতা ছিল বলে মনে করছে আকসু।
অন্তত ১০ জন ক্রিকেটার ও চারটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এই ১০ জনের মধ্যে ছয়জন বাংলাদেশ জাতীয় দলের, দু’জন বয়সভিত্তিক পর্যায়ের ও দুইজন বিদেশী ক্রিকেটার। সন্দেহের তালিকায় থাকা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে দুর্বার রাজশাহী ও ঢাকা ক্যাপিটালসের নাম শীর্ষে রয়েছে। রাজশাহী ও ঢাকার বিরুদ্ধে ১২টি, সিলেট স্ট্রাইকার্সের ছয়টি এবং চিটাগং কিংসের দু’টি সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড শনাক্ত করা হয়েছে।

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বিষয়টি নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই তদন্ত হবে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে।’
তিনি যোগ করেন, ‘পুরো তালিকা তৈরি হয়েছে, ঘটনা নোট করা হয়েছে। তদন্ত শেষে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। আর আমি যদি নিজে কিছু পাই, তাহলে তাদের জীবন কঠিন হয়ে যাবে। আমি কাউকে ছাড় দেব না। এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, যা ভবিষ্যতে উদাহরণ হয়ে থাকবে।’

জুলকারনাইনের অনুসন্ধানী রিপোর্ট
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে। ইতোমধ্যে বিপিএলে ম্যাচ পাতানো নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরার বাংলাদেশী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামি।
বিপিএলে বেশ কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি আপত্তি জানিয়েছিলেন, এবারের আসরে ম্যাচ পাতানোর গন্ধ পাচ্ছেন তারা। আলোচিত এই অনুসন্ধানী সাংবাদিক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘বিপিএলের ২২ শতাংশ ম্যাচ পাতানো বা ফিক্সড বলে চিহ্নিত করেছে আন্তর্জাতিক বেটিং নজরদারি একটি সংস্থা, যা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে (বিসিবি) ইতোমধ্যেই জানানো হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আটটি ম্যাচকে বেটিংয়ের জন্য পাতানো বলে তারা বিসিবিকে জানিয়েছে।’

পাতানো ওই আট ম্যাচের তালিকাও দিয়েছেন তিনি। তাতে পাতানো ম্যাচগুলো হলো- ‘রাজশাহী-বরিশাল, রংপুর-ঢাকা, ঢাকা-সিলেট, রাজশাহী-ঢাকা, চিটাগং-সিলেট, বরিশাল-খুলনা, ঢাকা-সিলেট ও রাজশাহী-রংপুর ম্যাচ।
যে ক্রিকেটার এবারসহ আগের বিপিএলগুলোতে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে, তাদের তালিকাও দিয়েছেন সামি। সেই ক্রিকেটাররা হলেন- দুর্বার রাজশাহীর এনামুল হক বিজয়, সিলেট স্ট্রাইকার্সের আল আমিন হোসাইন। পাশাপাশি আগের আসরগুলোতে ম্যাচ পাতানোর সাথে জড়িতদের নাম উল্লেখ করেছেন সামি। যেখানে আছেন বাংলাদেশের আরিফুল হক, ইংল্যান্ডের বেনি হায়েল, ওমানের বিলাল খান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাডওয়িক ওয়ালটন, শ্রীলঙ্কার চতুরঙ্গা ডি সিলভা, দক্ষিণ আফ্রিকার কলিন ইনগ্রাম, শ্রীলঙ্কার ধানুস্কা গুনাতিলাকা, আফগানিস্তানের দারবিশ রসুলি ও বাংলাদেশের দেলওয়ার হোসেন।


আরো সংবাদ



premium cement