টানা ৫ জয়ে কোয়ালিফায়ারে বরিশাল

পাঁচ দিন আগে চট্টগ্রামে বরিশালের বিপক্ষে ফাহিম আশরাফকে ছক্কা হাঁকিয়ে ৪৮ বলে ফিফটি করেছিলেন নাইম শেখ। ওই ম্যাচশেষে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল নাইমের ঢিমেতালের ব্যাটিং। গতকালের ম্যাচেও ৯ম ওভারে ফাহিমের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটি করেন, কিন্তু সেটা ২৬ বলে। ২৭ বলে ৫ চার, ৩ ছক্কায় ৫১ রান করে ফাহিমের বলেই আউট হন। এতে ৯ ওভার শেষে খুলনার সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ৯৯ রান। মাঝে গতি কমে গেলেও শেষতক ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৭ রানের পুঁজি পেয়েছে খুলনা। জবাব দিতে নেমে ৫ বল আর ৫ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ফরচুন বরিশাল। দুই ম্যাচ হাতে রেখে সেরা দুইয়ে থেকে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত হয়ে গেছে বরিশালের।

ফরচুন বরিশালের কাছে হেরে আগের দিন প্রথম দল হিসেবে চলতি বিপিএল থেকে বিদায় নিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। গতকাল তাদের দেখানো পথেই হাঁটল খুলনা টাইগার্স। সেই বরিশালের কাছেই হেরে দ্বিতীয় দল হিসেবে পাঁচে খুলনা। টাইগার্সের লড়াইটা ছিল প্লে-অফে খেলতে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার। আর ফরচুন বরিশালের লড়াইটা ছিল শীর্ষ দুইয়ে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করার। দিন শেষে লড়াইয়ে শেষ হাসিটা হেসেছে বরিশালই। এই জয়ে ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা রংপুরকে স্পর্শ করল বরিশাল। সমান পয়েন্ট রংপুর রাইডার্সেরও। তবে রানরেটে এগিয়ে তারা। ১০ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে মেহেদি মিরাজের দল।

শুরুর পাঁচ ব্যাটসম্যানই এদিন রান পেয়েছেন। কারো স্ট্রাইক রেট এক শ’র নিচে নামেনি। মিরাজ ও নাঈম উদ্বোধনী জুটিতে ৫.৩ ওভারে ৪৭ রান জমা করেন। এবারের বিপিএল আসরে প্রথমবার খেলতে নামা ইবাদত হোসেন ভাঙেন এই জুটি। মিরাজকে টো অ্যান্ড ইয়র্কারে বিট করে বোল্ড করেন দ্রুতগতির এই পেসার। খুলনার অধিনায়ক সাজঘরে ফেরার আগে ১৮ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৯ রান করেন। ক্রিজে এসে অ্যালেক্স রস তিন সুইপ শটে ছক্কা, চার ও চার হাঁকান। মোহাম্মদ নবীর বলে সাজঘরে ফেরার আগে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ১৫ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২০ রান। আফিফ হোসেন ২টি করে চার ও ছক্কা হাঁকালেও ২৭ বলে করেন মাত্র ৩২ রান।

আরেক বিদেশী ক্রিকেটার উইলিয়াম বোসিস্টো স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করেন ১৬ বলে ২০ রান করে। তখনো বোঝা যাচ্ছিল না সাতে নামা অঙ্কন কি করবেন। কিন্তু শেষের ব্যাটিং চিত্র পাল্টে দেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। ২২৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা অঙ্কন ১২ বল খেলেন। ২ চার ও ৩ ছক্কায় যোগ করেন ২৭ রান। তাতে খুলনার স্কোরবোর্ডে হাসি ফুটে। বরিশালের হয়ে ৪৯ রানে ২ উইকেট নেন ফাহিম আশরাফ। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন ফুলার, নবী ও ইবাদত।
১৮৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বরিশাল। দলীয় ১১ মাথায় আবু হায়দার রনির বলে আউট হন তৌহিদ হৃদয়। এরপর মালানকে নিয়ে তামিম গড়েন ৮৯ রানের জুটি। তামিম দেখেশুনে খেললেও একপ্রান্ত থেকে বোলারদের শাসন করে গেছেন ইংলিশ ব্যাটার। ১০২ রানের মাথায় ২৫ বলে ২৭ করে তামিম বিদায় নিলেও তার আগে অর্ধশতক তুলে নেন মালান। ১২১ রানের মাথায় ৩৭ বলে ৬৩ করে মালান আউট হলেও দলকে বিপর্যয়ে পড়তে দেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ১৩ বলে ২৪ রান আর মুশফিক ফেরেন ১৭ বলে ২৪ করে। শেষে ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ নবীর দৃঢ়তায় নিজেদের ৮ম জয় তুলে নেয় বরিশাল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
খুলনা টাইগার্স : ১৮৭/৫ (মিরাজ ২৯, নাঈম ৫১, রস ২০, আফিফ ৩২, বসিস্টো ২০*, মাহিদুল ২৭*, ফুলার ১/৩২, নাবি ১/২২, ইবাদত ১/৪৫, ফাহিম ২/৪৯)।
ফরচুন বরিশাল : ১৯.১ ওভারে ১৮৮/৫ (হৃদয় ১১, তামিম ২৭, মালান ৬৩, মুশফিক ২৪, মাহমুদউল্লাহ ২৪, ফাহিম ১৮*, নাবি ১৫, আবু হায়দার ২/৩৫, ইরশাদ ১/২১, আফিফ ১/১৩)।
ফল : ফরচুন বরিশাল ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : ডেভিড মালান।