১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ মাঘ ১৪৩১, ১৫ রজব ১৪৪৬
`

সীমানা ছোট হচ্ছে না সাগরিকায়

-


ঢাকা পর্বে আট ম্যাচে হয়েছে ২৬৪৮ রান। সিলেট পর্বে হয়েছে ১২ ম্যাচে ৪১৫৪ রান। দুই পর্ব শেষে আজ থেকে সাগরিকায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে চট্টগ্রাম পর্ব। এখানেও হবে ১২ টি ম্যাচ। সিলেটে আড়াই শ’ রান পার করেছে ঢাকা ক্যাপিটালস। চট্টগ্রামের ভক্তরাও আশায় ছিল, তারাও দেখতে পাবে আড়াই শ’ ছাড়ানো ইনিংস। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটবে ক্রিজে। আর গ্যালারিতে গগণবিদারী আওয়াজ তুলবেন দর্শকরা। তাদের এই আশায় কিছুটা পানি ঢেলে দিলেন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজা। উইকেট বা মাঠ নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও ঈঙ্গিত পাওয়া গেল, ঢাকা-সিলেটের মতো ছোট বাউন্ডারি থাকছে না চট্টগ্রামে।
সাগরিকার ২২ গজ বরাবরই কথা বলে ব্যাটসম্যানদের হয়ে। এবারো ব্যতিক্রম হওয়ার কারণ নেই। তবে সিলেটের মতো ছোট সীমানার বাড়তি সুবিধাটুকু এখানে ব্যাটসম্যানরা পাবে না। সিলেট পর্বে প্রায় সব ম্যাচেই আলোচনায় ছিল মাঠের সীমানা। এবার সীমানা তুলনামূলক ছোট ছিল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামেও। তবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সীমানা ছিল চোখে পড়ার মতো ছোট। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল সীমানা বড় করার সুপারিশ করেন।
প্রায় সব ম্যাচেই ৫৮ থেকে ৬০ মিটার সীমানা দেখা গেছে সিলেটে। এমনকি ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে মাত্র ৫২ মিটার ছক্কাও দেখা গেছে ওই মাঠে। অথচ সীমানা দড়ির পর গ্যালারি পর্যন্ত পড়ে ছিল বিস্তর জায়গা। সেই জায়গা ব্যবহার না করায় বেশ সমালোচনা হয়েছিল সীমানা নিয়ে। সিলেটে ছোট সীমানার সুবিধা কাজে লাগায় প্রায় সব দল। বিপিএলের গত আসরে সিলেটে হওয়া ১২ ম্যাচে প্রথম ইনিংসের গড় ছিল ১৫১.২৫ রান। এবার সেটি এক ধাক্কায় বেড়ে হয়েছে ১৮১.৫৮ রান। প্রথম ইনিংসে দুই শতাধিক রান হয়েছে তিন ম্যাচে। ১৭০ ছাড়ানো স্কোর ছিল ৯টি। মোট ছক্কা ছিল ২১০টি।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অন্য সময়ের চেয়ে এবার সীমানা ছিল ছোট। টুর্নামেন্টের প্রথম ৮ ম্যাচে ছক্কা হয় মোট ১৩২টি। চট্টগ্রামে অবশ্য সীমানা ছোট করা ছাড়াই বিপিএলের গত আসরে দেখা গেছে রানের জোয়ার। গত বছরের ১২ ম্যাচে প্রথম ইনিংসে গড়ে ১৭৭.৯১ রান করেছে দলগুলো। দুই শ’ ছাড়ানো স্কোর ছিল দুই ম্যাচে। আর ১২ ইনিংসের ৮টিই ছাড়িয়ে যায় ১৬০ রান।
এবারো সীমানা ছোট করার কোনো আভাস মেলেনি বন্দরনগরীর স্টেডিয়ামে। বরিশাল ও ঢাকা ক্যাপিটালস ম্যাচের আগের দিন বিকেল পর্যন্ত স্বাভাবিক দূরত্বেই দেখা গেছে সীমানা দড়ি। সূত্রমতে, চট্টগ্রামে উইকেটের সোজা দুই পাশে সীমানা রাখা হবে ৭০ মিটার করে। আর স্কয়ারে এক পাশে থাকবে ৬৭ মিটার ও অন্য পাশে ৬৯ মিটার।
ঢাকার ওপেনার তানজিদ হাসান জানান, ‘বাউন্ডারি সেভাবে দেখতে পারিনি। সেন্টার উইকেটে দাঁড়িয়ে বোঝা যায় না ওভাবে। খেললে বলতে পারব। তবে চট্টগ্রামের বাউন্ডারি সব সময় একই থাকে।’
বরিশালের কোচ মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্পোর্টিং হতে পারে চট্টগ্রামের উইকেট। যতটুকু বুঝলাম, দেখতে খুবই ভালো। ব্যাটসম্যানরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। বোলাররাও সঠিক লাইনে বল করলে ভালো ফল পাবে। ট্রু উইকেট বলা যায়। বাউন্ডারিও শুনেছি সামনে ৭০ মিটার, স্কয়ারে ৬৭ মিটার। এটা ঠিক আছে।’

শুরুর জয়ই টার্গেট সবার
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ বেলা দেড়টায় প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল ও ঢাকা ক্যাপিটালস। রাত সাড়ে ৬টায় দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক চিটাগং কিংসের মোকাবেলা করবে খুলনা টাইগার্স। প্রতিটি দলই চাইছে সাগরিকায় প্রথম ম্যাচ জিতে এগিয়ে থাকতে।
ঢাকার অধিনায়ক তানজিদ জানান, ‘জয়ের জন্যই তারা মাঠে নামবে। পেছনে ফেরার কোন সুযোগ নেই। সিলেটে সর্বশেষ ম্যাচ জেতার প্রেরণা নিয়েই এগুতে চাই। সতীর্থ লিটনের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি থেকে বাদ পড়া প্রসঙ্গে বলেন, খারাপ খেললে বাদ পড়তেই হবে। বরিশালের কোচ মিজানুর রহমান বাবুল জানিয়েছেন, ডেথ ওভারের বোলিং নিয়ে কাজ করছেন তারা। ওই জায়গাটা পূরণ হয়ে গেলেই দলটা পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে। উইকেট সিলেটের মতোই হবে মনে হচ্ছে। ব্যাটাররা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে।
চিটাগংয়ের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন জানান, ‘নিজেদের মাঠ, পরিবেশ সব কিছুই অনুকূলে। আমরা পজিশন ধরেই এগোতে চাই। ম্যাচ যত কম হয়ে আসবে ততই চ্যালেঞ্জ বেশি থাকবে। শুরুটা ভালো হলে পরেরগুলোও ভালো হবে আশা করি।’
খুলনার অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ দৃঢ় কণ্ঠেই জানান, ‘কেউ কি হারতে মাঠে নামে! আমরাও নিশ্চয়ই হারতে নামব না। চিটাগংয়ের মাঠ, মানসিকভাবে একটু এগিয়ে তো থাকবেই। তাদের সমীহ করেই জিততে চাই।’

 


আরো সংবাদ



premium cement