৮ ম্যাচে ২৬৪৮ রান দুই সেঞ্চুরি
ঢাকা পর্ব- জসিম উদ্দিন রানা
- ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪৩
টি-২০তে যে মারকাট ক্রিকেট দেখার আশা থাকে দর্শকদের, সেই চাহিদা এখন পর্যন্ত ভালোভাবে মিটিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। প্রতি ম্যাচেই দেখা গেছে চার-ছক্কার ফুলঝুরি। বিগত আসরগুলোতে দর্শকদের রানের ক্ষুধা মিটত সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। এবার ঢাকা পর্বেই সেই স্বাদ পেয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। ঢাকায় ৮ ম্যাচে সবমিলিয়ে এসেছে ২৬৪৮ রান। ম্যাচ প্রতি রানের গড় ৩৩১। আগের আসরে যা ছিল ৩শ’র নিচে। ইনিংস প্রতি ১৬৫.৫ রান। আগের দুই বিপিএল থেকে রানের হিসেবে যা অনেকটাই এগিয়ে। ঢাকা পর্বেই দর্শকরা সাক্ষী হয়ে দু’টি সেঞ্চুরি হাঁকানো ইনিংসের। চিটাগং কিংসের উসমান খাজা করেছেন ১২৩ রান। আর ঢাকা ক্যাপিটালসের অধিনায়ক থিসারা করেছেন অপরাজিত ১০৩ রান। যদিও পরশু তার এই শতক বৃথা গেছে খুলনা টাইগার্সের কাছে দলের ২০ রানে হারের ফলে।
সর্বোচ্চ ২২৯ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন পাকিস্তানের ফাহিম আশরাফ। বাংলাদেশীদের মধ্যে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ২০৬.৮১, শামীম হোসেন ১৯৫.১২, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৯৪ ও নুরুল হাসান সোহান ১৮৮ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করে বিনোদন জুগিয়েছেন। রানবন্যার এমন অবস্থার মধ্যেই এক ম্যাচে ১৯ রানে ৭ উইকেট শিকারের বিরল কীর্তি গড়েছেন গতির তারকা তাসকিন আহমেদ। বিপিএলে এটি সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড তো বটেই, টি-২০ ইতিহাসেই তৃতীয় সেরা বোলিংয়ের কীর্তি। গতি আর বাউন্সে ব্যাটসম্যানদের মনে কাঁপন ধরিয়ে নাহিদ রানা নিয়েছেন তিন ম্যাচে ৬ উইকেট। স্পিনে রহস্য ছড়ানোয় সফল আলিস আল ইসলাম, মিতব্যায়ী ছিলেন শেখ মাহেদি হাসান। মিরাজরাও ছিলেন স্বরূপে।
প্রতিবার বিপিএলে উইকেট নিয়ে ওঠা নানা সমালোচনা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক ছিল বিসিবি। যা ফুটে উঠেছে সভাপতি ফারুক আহমেদের বক্তব্যে, ‘নির্দেশনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক জায়গা থেকে তিন-চার রকম নির্দেশনা গেলে কিউরেটরের জন্যও কাজটা কঠিন। এবার দেখতে চেয়েছিলাম ভালো ব্যাটিং উইকেট। সেই সাথে যেন বাউন্সও থাকে। এ ধরনের উইকেটে খেললে বোলাররাও শিখবে, আর ব্যাটসম্যানরা তো শিখবেই।’
ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক ও দেশের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তামিম ইকবাল টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন বলেছিলেন, ‘কেবল কনসার্ট ছাড়া ভিন্ন কিছু চোখে পড়ছে না।’ তবে টুর্নামেন্ট শুরু হতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। প্রথম ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীর ১৯৭ রান তাড়া করে দারুণ জয় পায় তামিমের বরিশাল। ৮ ম্যাচে স্রেফ একবারই প্রথম ইনিংসে দেড় শ’ ছুঁতে পারেনি কোনো দল। সব মিলিয়ে ১৬ ইনিংসে ১৬০ ছাড়ানো স্কোর দেখা গেছে ৯টি।
উদ্বোধনী ম্যাচ থেকেই পাল্লা দিয়ে চলেছে দর্শকের ঢল ও রানের জোয়ার। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ৮ ছক্কায় ৪৭ বলে ৯৪ রানের ইনিংস দিয়ে বিপিএলের উড়ন্ত সূচনা করে দেন দুর্বার রাজশাহীর ইয়াসির আলি চৌধুরী। ২০০ ছুঁইছুঁই লক্ষ্যে তাণ্ডব চালান মাহমুদুল্লাহ। মাত্র ২৬ বলে করেন ৫৬ রান। ফাহিম আশরাফের ব্যাট থেকে আসে ২১ বলে ৫৪ রান। ম্যাচে মোট ছক্কা হয় ২৯টি, যা বিপিএলের রেকর্ড।
সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচে ছক্কা হয়েছে মোট ১৩২টি। ম্যাচপ্রতি দাঁড়ায় ১৬.৫টি। শেষ দুই দিন ঘন কুয়াশার মধ্যেও চার ম্যাচে ৫৮টি ছক্কা মারেন ব্যাটসম্যানরা। এত বেশি ছক্কার কারণ অবশ্য সীমানা ছোট করে দেয়া। তিন ইনিংসে ১৪৬ রান করে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এনামুল হক বিজয়। ছয় ছক্কায় ২২ বলে ৫৯ রানের ইনিংসে বিপিএলে দ্রুততম ফিফটি করেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
শহীদ মুগ্ধ কর্নারে বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছে পানি। পাশাপাশি মাঠে খাবারের দামও এবার তুলনামূলক কম। এ ছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকেও দেয়া হয়েছে বাড়তি নজর। মাঠে ঢোকার পর দর্শকদের অভিজ্ঞতা আগের তুলনায় ভালো হলেও মাঠের বাইরের চিত্র ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। খেলা শুরুর আগের দিন দুপুর পর্যন্ত টিকিটের কোনো তথ্য জানায়নি বিসিবি। ফলে স্টেডিয়ামের বাইরে সৃষ্টি হয় উত্তাল পরিস্থিতি। এমনকি উদ্বোধনী ম্যাচের দিন মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন বিক্ষুব্ধ দর্শকরা।
সব কিছু মাত্রা ছাড়িয়ে যায় বৃহস্পতিবার। সুইমিং কমপ্লেক্সের বুথে টিকিট না পেয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ দর্শকরা। প্রথম কয়েক দিনের পরিস্থিতি দেখেই ঢাকা পর্বের শেষ দিন শুক্রবার নিরাপত্তার দায়িত্ব যায় সেনাবাহিনীর কাছে।
প্রশ্ন থেকে যায় অনলাইন টিকিটের ব্যবস্থা নিয়ে। বিশেষ করে দর্শক পর্যন্ত সঠিক নির্দেশনা পৌঁছতে দেরি হওয়ায় বিশৃঙ্খলা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। সরেজমিন টিকিট বিক্রির প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দর্শকরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা