ডেথ গ্রুপে কী করবে বাংলাদেশ
- জসিম উদ্দিন রানা
- ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দেড় যুগ পর এশিয়া মহাদেশে হবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর। ২০০৬ সালে সবশেষ ভারতে হয়েছিল বৈশ্বিক এই প্রতিযোগিতা। এরপর ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০১৩ ও ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে দুই আসরের পর আবার এশিয়া মহাদেশে ফিরেছে আট দলের টুর্নামেন্ট।
ক্রিকেটের ওয়ানডে ফরম্যাটে দীর্ঘদিন শক্তিমত্তা দেখানো বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা করুণ। লিটন-শান্তরা কেমন যে খাপছাড়া। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর সম্প্রতি দু’টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজেই দলের পারফরম্যান্স ছিল পুরোপুরি হতাশার। আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছে। অথচ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সন্নিকটে।
পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘হাইব্রিড মডেলে’ অনুষ্ঠিতব্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ কঠিন গ্রুপে পড়েছে। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে আছে ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। দুবাইয়ে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ আসর শুরু করবে। সমস্যা হলো তিনটি দলই প্রতিপক্ষ হিসেবে ভীষণ কঠিন। বাংলাদেশ দলের অবস্থা একটু বেশিই শোচনীয়।
২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডকে গ্রুপ পর্বে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। সেটিই এখন পর্যন্ত আট দলের আসরে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য, যাতে বৃষ্টির সহায়তাও ছিল। ওই টুর্নামেন্টের পেরিয়ে গেছে সাত বছরের বেশি সময়। এরপর ওয়ানডে সংস্করণের দু’টি আইসিসি টুর্নামেন্টে প্রত্যাশা মেটাতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৯ বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে তারা জিতেছিল তিনটি। আর গত বছর জয় মাত্র দুটি। সবশেষ টি-২০ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্বের বাধা পেরিয়েছিল। তবে সামগ্রিক পারফরম্যান্সে বিশ ওভারের বৈশ্বিক আসরেও সন্তোষজনক কিছু করতে পারেনি তারা।
ভারতের বিপক্ষে ৪১ ওয়ানডের ৩২টিই হেরেছে বাংলাদেশ। তবে সর্বশেষ পাঁচ ওয়ানডেতে আছে তিন জয়। দুবাইয়ে ভারত ম্যাচ শেষে টুর্নামেন্টের বাকি অংশের জন্য পাকিস্তানে যাবে বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে তারা। প্রায় ২১ বছর পর এই মাঠে ওয়ানডে খেলবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সবশেষ আসরে কিউইদের বিপক্ষে স্মরণীয় জয় টাইগারদের। কার্ডিফে ২৬৬ রানের লক্ষ্যে মাত্র ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। চাপের মুখে পঞ্চম উইকেটে ২২৪ রানের রেকর্ডগড়া জুটি গড়েন মাহমুদুল্লাহ ও সাকিব আল হাসান। দু’জনের সেঞ্চুরিতে অনেক দিন মনে রাখার জয়ে সেমিফাইনালের টিকিট পায় বাংলাদেশ। এর আগে ২০০২ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার বাংলাদেশকে মাত্র ৭৭ রানে অলআউট করে ১৬৭ রানে জিতেছিল কিউইরা। সার্বিক পরিসংখ্যানেও এগিয়ে কিউইরা। ৪৫ ম্যাচে তাদের জয় ৩৩টি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৯ ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশের জয় মাত্র দু’টি। তবে রাওয়ালপিন্ডিতে সর্বশেষ দুই টেস্টের সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। সেই অর্জনই হতে পারে শান্তদের জন্য অনুপ্রেরণা। অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজদের বিপক্ষে সে প্রেরণা মোটেই কাজে দেয়নি। অবশ্য এটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। একটু বদলের আশা করতেই পারে লাল-সবুজের ক্রিকেট ভক্তরা।
হাইব্রিড মডেলে ভ্রমণঝক্কি ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ থাকলেও বাংলাদেশ এ বাস্তবতা মেনেই নিচ্ছে। ২০২৩ এশিয়া কাপের আয়োজক পাকিস্তানে ভারত খেলতে না যাওয়ায় শ্রীলঙ্কাকে সহ-আয়োজক বানিয়ে সমস্যার সমাধান করা হয়েছিল। ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিরও আয়োজক পাকিস্তান। এবারো একই জটিলতা। তবে এবার সমাধানটা হয়েছে দীর্ঘ মেয়াদে। আইসিসির সামনে যে টুর্নামেন্ট ভারত কিংবা পাকিস্তান আয়োজন করছে, প্রতিটিই হবে হাইব্রিড মডেলে।
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফীস জানালেন, প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি তাদের এখনো জানায়নি আইসিসি। তবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশে একটা প্রস্তুতিমূলক ক্যাম্প করবে বাংলাদেশ। ৩০ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া বিপিএলের শেষ দিকে প্রধান কোচ ফিল সিমন্স আসবেন ঢাকায়। তার অধীনে প্রস্তুতি শুরু করবে বাংলাদেশ। নতুন কোনো নাটকীয় ঘটনা না ঘটলে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে যাবে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলা নিয়ে নিশ্চিত কিছু বলতে পারেনি বিসিবি।
দেশীয় স্বনামধন্য কোচ সালাউদ্দিন জানান, ‘সবাই মোটামুটি টি-২০ খেলছে। টেস্ট-ওডিআই-টি-২০ তিনটি ফরম্যাটই ভিন্ন। বিপিএল হচ্ছে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হবে ৫০ ওভারে। এখানে খেলে মারার যে প্রবণতা সেটি পরিস্থিতি বিবেচনায় নিতে হবে। টার্গেট মিনিমাম ২৭০-৩০০ থাকতে হবে। দু-তিনটি বড় জুটি হলেই অবস্থার পরিবর্তন হবে। চাপ নিলেই সমস্যা। খেলাটাকে উপভোগ করে ডেথ গ্রুপের বেড়াজাল পার হতে হবে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা