২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মেট্রোকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা রংপুরের

প্রথম এনসিএল টি-২০-এর শিরোপা জয়ের পর কর্মকর্তাদের সাথে রংপুরের খেলোড়াররা : বিসিবি -


ফাইনাল ম্যাচ। শিরোপা নির্ধারণী লড়াই। টুর্নামেন্টের সেরা দুই দল আরেকবার মুখোমুখি। অথচ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে ম্যাচটা হলো একেবারেই উত্তাপহীন, ম্যাড়ম্যাড়ে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ফাইনাল শেষে বিজয়ের হাসিটা রংপুর বিভাগের। জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-২০র শিরোপা জিততে একপর্যায়ে ৫৪ বলে ৬ রান লাগত রংপুরের। হাতে ৫ উইকেট। স্পিনার রাকিবুলের দুই শর্ট বলে দুই চার মেরে এনামুল হক মিলিয়ে দেন সমীকরণ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে মাত্র ৬২ রানে গুটিয়ে যায় মেট্রো। রান তাড়ায় ৫ উইকেট হারালেও ৫২ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আকবর আলির নেতৃত্বাধীন দল রংপুর বিভাগ। ব্যাটিং ব্যর্থতায় জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের সংস্করণের মতো টি-২০তেও রানার্সআপ হলো ঢাকা মেট্রো।
স্বীকৃত টি-২০ টুর্নামেন্টের ফাইনালে এর চেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার ঘটনা আছে আর মাত্র দু’টি। গত মার্চে জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় ডারহামের ২২৯ রানের জবাবে মাত্র ১৬ রানে গুটিয়ে যায় মাশোনাল্যান্ড ঈগলস। আর জুনে শ্রীলঙ্কার মেজর ক্লাব টি-২০তে নন্দেস্ক্রিপ্টসের বিপক্ষে ব্লুমফিল্ড ৫৪ রানে হারায় সব ক’টি উইকেট। বাংলাদেশের মাঠে কোনো টি-২০ টুর্নামেন্টের ফাইনালে একশ’র কম রানে অলআউট হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। ২০১৬ সালের বিপিএলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ১০৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল রাজশাহী কিংস।

গতকাল দুই দলের ব্যাটিংয়ে ছিল একই চিত্র। টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটাররা মেতে উঠে আসা-যাওয়ার মিছিলে। ঢাকা মেট্রো ১৬ রান তুলতে হারায় ৫ উইকেট। রংপুর ১৮ রানে ৪ উইকেট। সেখান থেকে আরিফুলের ও তানভীরের ২৪ রানের জুটি রংপুরকে জয়ের পথ দেখায়। স্পিনার রাকিবুলকে এক ছক্কা ও চার উড়ানোর পর আরিফুল ১৪ রানে সাজঘরে ফিরলেও তানভীর শেষ ম্যাচের মতো দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
এর আগে আলিস আল ইসলামের তৃতীয় ওভারে ঢাকা মেট্রো জোড়া সাফল্য পায়। আব্দুল্লাহ আল মামুন স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন। নাঈম কাটা পড়েন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। আবু হায়দার রনি নিজের প্রথম ওভার করতে এসে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রিজওয়ানকে। এরপর আকবর আলী তাহজিবুলের সরাসরি থ্রোতে গোল্ডেন ডাকের তিক্ত স্বাদ পান।

দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়লেও রংপুরের শিরোপা হাতছাড়া হয়নি। টুর্নামেন্টের শেষ হাসিটা তারাই হেরেছে। এর আগে রাউন্ড রবিন লিগে তারা ঢাকা মেট্রোর কাছে হেরেছিল। কিন্তু প্রথম কোয়ালিফায়ারের পর ফাইনাল ম্যাচ জিতে মধুর প্রতিশোধ নিলো তারা।
রংপুরের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে ঢাকা মেট্রোর ইনিংসেও ছিল একই চিত্র। স্কোরবোর্ডে ১৬ রান হতেই ৫ ব্যাটসম্যান সাজঘরে।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মোসাদ্দেক ও শামসুর ১৭ রান যোগ করেন। কিন্তু মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে এই দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরলে ঢাকা মেট্রোর বড় ইনিংসের আশা শেষ হয়ে যায়। দলের আট ব্যাটসম্যান যেখানে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেনি সেখানে বড় পুঁজির আশা সম্ভব ছিল না। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও আলাউদ্দিন বাবু ৩টি করে উইকেট নিয়ে ছিলেন রংপুরের সেরা। ১ উইকেট করে নেন রবিউল, রিজওয়ান ও আরিফ।
১২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ফাইনাল সেরা রংপুরের মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা মেট্রো : ১৬.৩ ওভারে ৬২/১০ (ইমরানউজ্জামান ৪, নাঈম ০, আনিসুল ৩, শামসুর ১৪, আমিনুল ০, তাহজিবুল ২, মোসাদ্দেক ৬, আবু হায়দার ১৩, শহিদুল ৬, রকিবুল ৩, আলিস ০*; মুকিদুল ৩/১২, আলাউদ্দিন ৩/১২, রবিউল ১/৯, রিজওয়ান ১/১২, আরিফ ১/১৪)।
রংপুর : ১১.২ ওভারে ৬৫/৫ (রিজওয়ান ৯, মামুন ২, নাঈম ০, তানবীর ৮*, আকবর ০, আরিফুল ১৪, এনামুল ১৪*; আবু হায়দার ১/৮, আলিস ২/১৩, রকিবুল ১/২৪)।
ফল : রংপুর ৫ উইকেটে জিতে চ্যাম্পিয়ন।
ম্যাচ সেরা : মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ (রংপুর)।
টুর্নামেন্ট সেরা : আবু হায়দার রনি (১৩ উইকেট ১২৩ রান) ঢাকা মেট্রো।


আরো সংবাদ



premium cement