২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পেটেভাতে মিমোদের হকি দল

-

বিজয় দিবস হকি টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ফেডারেশন আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বিভিন্ন ক্লাব, সংস্থা ও জেলা দলগুলোকে। বাহিনীগুলো অংশ নিলেও ক্লাবগুলো নানা অজুহাতে রাফজ হয়নি। তাতে কমপক্ষে ৮০ জন হকি খেলোয়াড়কে বসে থাকতে হচ্ছে। শুধুমাত্র খেলার আগ্রহ থেকেই সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন খেলোয়াড় মিলে ‘হকি খেলোয়াড় কল্যাণ ঐক্য পরিষদ’ নামে বিজয় দিবস হকিতে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করে। ফেডারেশনও সায় দেয়। তাতে তারাসহ সেনা, বিমান, নৌ, পুলিশ ও বিকেএসপিসহ মোট ছয় দল নিয়ে দীর্ঘ ৭ মাস পর মাঠে গড়ালো হকি।
এ টুর্নামেন্টে ফেডারেশন থেকে টাকা পাচ্ছেন ভলান্টিয়ার, আম্পায়ার, কোচ, জাজ, বল বয়, মাঠ কর্মী, টেকনিক্যাল অফিসিয়ালরা। বাহিনীর খেলোয়াড়রা সম্মানী পাবেন তাদের সংস্থা থেকে। শুধু অপাঙ্ক্তেয় থাকবেন কল্যাণ ঐক্য পরিষদের খেলোয়াড়রা। উল্টো নিজেদের টাকাতেই দল চালানোর ঘোষণা সার্ভিসেস, বিকেএসপির বাইরে থাকা হকি পাগল কয়েকজনের। পুস্কর খিসা মিমো আবেগী কণ্ঠে জানালেন, ‘টাকা-পয়সা তো নাই, ক্লাবগুলো অংশ নিলে হয়তো কিছু টাকা পেতাম। কিন্তু কত দিন আর বসে থাকবো। ৭ মাস আগে খেলেছি। শরীরে জং ধরে গিয়েছে। তাই খেলার প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমাদের এই উদ্যোগ।’

একটা দল চালাতে অনেক খরচ। নিজেরা কোন টাকা পয়সা না নিলেও আনুষঙ্গিক খরচও কম নয়। খাওয়া বাবদ ৮-১০ হাজার টাকা খরচ। ফেডারেশন ৪-৫ জন থাকার একটা রুম দিলেও দলের সদস্যরা কেউ কেউ নিজেরাই থাকার ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। কেউ কেউ সতীর্থদের বাসায় থাকছেন। মিমো জানান, ‘ঢাকার বাইরের ১০ জন খেলোয়াড় আছে। তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইও একটা বড় বিষয়। ভালোবেসে দল গড়ে যে এত পেরেশানি হবে আগে বুঝিনি। স্পন্সর খুঁজছি। ইতোমধ্যে জার্সির স্পন্সর পেয়েছি। কেউ যদি আমাদের খেলার কথা চিন্তা করে ভালোবেসে দায়িত্ব নেন তাহলে আমাদের ২০ জন খেলোয়াড়ের শান্তি লাগবে।’ পাশ থেকে একজন বলে উঠলেন, ‘ভাই এটা যেন আমাদের মানবেতর ক্লাব।’

জাতীয় দলের কোচ মাহবুব হারুন জানালেন, ‘আমি ওদের স্পন্সরের বিষয়ে একটু সহযোগিতা করতে পেরে ভালো লাগছে। ওরাই করেছে আমি শুধু সেটাকে একটু বাড়িয়েছি।’
মিমো যোগ করেন, ‘সদ্যই বিশ্বকাপ কোয়ালিফাই করে আসা দলের ৬ জন খেলোয়াড় আমাদের সাথে আছেন বিনা পারিশ্রমিকে। তারা হলেন আমিরুল, শিমুল, গোলরক্ষক আবু সাঈদ নিপ্পন, আবদুল্লাহ, চাঁদ ও প্রীতম। তারা যদি এখনই হকির এ অনিশ্চয়তা দেখে তাহলে ভবিষ্যতে কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা সহজেই অনুমেয়। আমি ছাড়াও দলে আছেন হাসান যুবায়ের নিলয়, প্রিন্স, রায়হানসহ আরো অনেকে।’

দেশের আইকন রাসেল মাহমুদ জিমি ও ৫ বার এশিয়ান গেমস খেলা মামুনুর রহমান চয়ন বলেন, ‘আসলেই এটা মর্মস্পর্শী। একজন হকি খেলোয়াড় কেন এত ডিপ্রেশনে থাকবে। খেলোয়াড়ের কাজ হচ্ছে খেলা আর সংগঠকদের কাজ হচ্ছে খেলানো। খেলোয়াড় যদি সংগঠকের কাজ করে তাহলে ব্যতিক্রম তো হবেই। অনেক দিন পর মাঠে খেলছি। সবারইতো মনে চায় খেলতে। এখন যদি সোনালী ব্যাংক, সাধারণ বীমাসহ আরো দু-একটি ক্লাব অংশ নিতো তাহলে ৮০ থেকে ১০০ জন খেলোয়াড়ের একটা সুরাহা হতো।’


আরো সংবাদ



premium cement