ভাইয়ার চেয়ারে বসাটা হৃদয়বিদারক
- জসিম উদ্দিন রানা
- ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১১
‘কী হতে পারত, আর কি হলো। বিশ্বাসই করতে পারছি না ভাইয়া নেই। ভাইয়ার ব্যাপারে মিশ্র অনুভূতি কাজ করছে। তার চেয়ারে বসাটা শকিং।’ ইউনেক্স-সানরাইজ আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনের সমাপনী দিনে এভাবেই সংক্ষিপ্ত কথাগুলো বলেন ডেপুটি রেফারি শামীম হাসান সৈকত।
শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে হয়ে গেল ইউনেক্স-সানরাইজ জুনিয়র ও সিনিয়র ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট। এই টুর্নামেন্টে ডেপুটি রেফারি হিসেবে কাজ করার কথা ছিল বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার্ল্ড ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের (বিডব্লিউএফ) তালিকাভুক্ত আম্পায়ার ইসমাইল নজীব রাসেলের। গত ৭ ডিসেম্বর তার অকাল মৃত্যুতে সেই ভার পড়েছে তারই শিষ্য এবং চাচাতো ভাই শামীম হাসান সৈকতের ওপর। রাসেলের পর বিডব্লিউএফ আম্পায়ার একমাত্র শামীম। পাইপলাইনে আছেন আয়াজ আল আমিন, আমিনুল ইসলাম ও ফয়সাল কবির। এরা সবাই নজীব রাসেলের হাত ধরেই এসেছেন। শুধু তারাই নন, বাংলাদেশের বর্তমান যারা আম্পায়ার আছেন তারা কোন না কোনোভাবে রাসেলের সহযোগিতা পেয়েছেন।
শামীম বলেন, কারো জন্য কোনো কিছুই থেমে থাকে না। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ভাইয়ার তরতাজা স্মৃতি বুকে নিয়েই টেকনিক্যাল সাইডটা দেখতে হয়েছে। এই হাতেই তো দাফন করে এলাম ক’দিন আগে। সে হাতেই কম্পিউটারে ইনপুট দেয়ার সময় কিংবা কিছু লেখার সময় নিজের অজান্তেই অশ্রু সংবরণ করতে হয়েছে। চাপা কষ্ট। যেটি কাউকে দেখানো যায় না, বুঝানো যায় না।
কথাগুলো বলার সময় তার গলা ভারী হয়ে আসছিল। তিনি যোগ করেন, মাঝে মধ্যেই আনমনা হয়ে গিয়েছি। তখন মনে হয়েছে জীবন থেকে কয়েকটি সেকেন্ড স্থবির হয়ে গিয়েছে। সম্বিত ফিরে পেতেই মনোযোগ দিতে হয়েছে কাজে। প্রফেশন বলে কথা। যেখানে ভালোবাসা-বন্ধনের চেয়ে, আবেগ-অনুভুতির চেয়ে কাজটাই বড়। আরো জানান, ভাইয়ার শিষ্য হিসেবে কতটুকু করতে পেরেছি তা এশিয়া-ওয়ার্ল্ড ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন দেখবে। তবে আমি এটা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি ভাইয়ার প্রতি অমর্যাদা কখনো করিনি। ভাইয়ার শেখানো পথে ব্যাডমিন্টনকে, দেশকে শতভাগ দিতে প্রস্তুত।
২০১৩ সালে আম্পায়ারিং কোর্স দিয়ে শামীমের হাতেখড়ি রাসেলের কাছেই। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কায় আরেকটি কোর্স করেন যেটিতে পাস করলেই কেবল মেইন পরীক্ষার জন্য সিলেক্ট হবে। সেটি হয়েছে ২০২৩ সালে এর পরও ২০১৫ সালে ব্যাডমিন্টন এশিয়ার অ্যাক্রিডেটেড হন। ২০১৭ সালে চায়নাতে সার্টিফিকেট কোর্স করেন। ২০১৯ সালে তাইওয়ানে কোর্স করার পর কোভিডের কারণে উন্নতির গ্রাফ থমকে যায়। পরে ২০২৩ সালে সিঙ্গাপুরে পরীক্ষা দিয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাডমিন্টনের তালিকাভুক্ত আম্পায়ার হন। বাংলাদেশী এই আম্পায়ার ৯৮ মার্ক পেয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। তা ছাড়া বিডব্লিউএফ তালিকায় সবচেয়ে কনিষ্ঠ আম্পায়ার হিসেবে নাম লিখান। ২০২৩ সালে ভারতে রেফারি কোর্স করে এশিয়ার তালিকাভুক্ত হন। এ ছাড়া ২০২৩ সালে আইনজীবী হিসেবেও অভিষেক ঘটে শামীমের।
দেশের পতাকা বহন করা যেকোনো ক্ষেত্রেই সম্মানের। নতুন কেউ যদি এ পেশায় আসতে চায় তাহলে আমার সমর্থন তো থাকবেই পাশাপাশি তাকেও পুরোপুরি মাইন্ড সেট করতে হবে। প্রচুর পড়ালেখা করতে হবে ধৈর্য ধরতে হবে। আপাত দৃষ্টিতে সাধারণ ও স্বাভাবিক মনে হলেও এশিয়া কিংবা বিডব্লিউএফ আম্পায়ার হওয়া বলতে গেলে সাধনার বিষয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা