২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
ঘরোয়া ফুটবল

সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন দেশী কোচরা

সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন দেশী কোচরা -


বসুন্ধরা গ্রুপ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চতুর্থ পর্ব শেষ। ফেডারেশন কাপেও কোনো দল দু’টি করে , কোনোটি একটি ম্যাচ ( ১১১) সম্পন্ন করেছে। এখন পর্যন্ত দলগুলোর যে সাফল্য তাকে দেশী কোচদেরও অবদানটা বেশি। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে এবার ক্লাবে ক্লাবে আর্থিক দৈন্যতা ছোবল দেয়। ফলে ঢাকা আবাহনীসহ বিভিন্ন ক্লাব তাদের বিদেশী কোচ নেয়ার চিন্তা বাদ দেয়। এতেই অল্প পয়সায় দেশী কোচরা তাদের ভরসায় পরিণত হয়। এর পরও ১০ দলের মধ্যে তিন ক্লাবে বিদেশী কোচ। অথচ নিকট অতীতে বিদেশী কোচদের কারণে স্থানীয় নামীদামি কোচদের ক্লাবহীন অবস্থায় থাকতে হয়েছিল। এবার বেশির ভাগ দেশী কোচ দায়িত্ব পেয়ে প্রমাণ দিচ্ছেন নিজেদের যোগ্যতার। লিগে এখন পর্যন্ত যে তিন দল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে তিন দলেরই কোচ বাংলাদেশী। চারে আছে গাম্বিয়ান কোচ ওমর সিসের ব্রাদার্স। ৫ নম্বরে রোমানিয়ান কোচ ভ্যালেরিও তিতার বসুন্ধরা কিংস। স্থানীয়রা নিশ্চয়ই এই ধারায় দলকে রেখে নিজেদের অপরিহার্যতা প্রমাণ করবেন ঘরোয়া ফুটবলে।

এবার তিন ক্লাবে বিদেশী কোচ। গত বারের ট্রেবল জয়ী বসুন্ধরা কিংসের ডাগ আউটে রোমানিয়ান কোচ তিতা। ব্রাদার্স ইউনিয়নে গাম্বিয়ান ওমর সিসে। আর প্রিমিয়ারে নবাগত ইয়ংমেন্স ক্লাব ফকিরেরপুলের দায়িত্বে উজবেকিস্তানের আলবার্ট লিয়াপিন। এদের মধ্যে হাই প্রোফাইলের কোচ ভ্যালেরিও তিতা। সিরিয়া জাতীয় দলের দুই দফা কোচ ছিলেন। তার সময়ে সিরিয়া হারিয়েছিল সৌদি আরব ও ইরাককে। তার কোচিংয়ে সিরিয়ার আল ইতিহাদ আলেপ্পো এএফসি কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০১০ সালে। এ ছাড়া সিরিয়া, কুয়েত, জর্দান, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং লেবাননের শীর্ষ ক্লাবের কোচ ছিলেন।

তবে যে আশা নিয়ে তিতাকে বসুন্ধরা কিংস দায়িত্ব দিয়েছিল তা পূরণ করতে পারছেন না এই রোমানিয়ান। তার অধীনে এই সিজনে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ফুটবল মিলে ১০ ম্যাচে ৬ হার বসুন্ধরা কিংসের। শুরুতে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে ভুটানের গিয়ে বসুন্ধরার টানা তিন পরাজয়ের সাক্ষী। দেশে ফিরে মোহামেডানকে হারিয়ে চ্যালেঞ্জ কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েও এরপর ছন্দ পতন। লিগে ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডান এবং ফেডারেশন কাপে ফর্টিস এফসির কাছে হার ভ্যালেরিও তিতার দল বসুন্ধরা কিংসের। তিতার দলের হার এই তিন ক্লাবের তিন স্থানীয় কোচ যথাক্রমে মারুফুল হক, আলফাজ আহমেদ এবং মাসুদ পারভেজ কায়সারের কাছে।

কায়সার এবং আলফাজ বিদেশী খেলোয়াড়দের নিয়েই হারিয়েছিল বসুন্ধরা কিংসকে। অন্য দিকে মারুফের আবাহনীর লিগে প্রথম বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে জয় ছিল শতভাগ দেশী ফুটবলার নিয়ে। দেশী কোচদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির কামাল বাবু। কখনো কোনো লেভেলে জাতীয় দলের দায়িত্ব না পাওয়া কামাল বাবুও এবার কোচিংয়ে আরো ভালো করছেন। এই কামাল বাবুর দল গতকাল হারিয়ে দিয়েছে গাম্বিয়ান কোচ ওমর সিসের দল ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। লিগে রহমতগঞ্জের অপর দুই জয় চট্টগ্রাম আবাহনী ও ফর্টিসের বিপক্ষে। আর ফেডারেশন কাপে রহমতগঞ্জের কাছে হেরেছে মোহামেডান।

যদিও গতকাল উজবেক কোচ আলবার্ট লিয়াপিনের ইয়ংমেন্স হারিয়ে দিয়েছে স্থানীয় কোচ সাইফুর রহমান মনির চট্টগ্রাম আবাহনীকে।
বাংলাদেশ পুলিশ দলে এবারের কোচ মাহাবুবুল হক জুয়েল। তার দল ফেডারেশন কাপে ফর্টিস এফসির সাথে ড্র করলেও লিগে হারিয়েয়ে ইয়ংমেন্স ও ওয়ান্ডারার্সকে। লিগে অবশ্য হার মোহামেডানের কাছে। এ ছাড়া ওয়ান্ডারার্সের কোচ শাহাদাৎ হোসেন। লিগে গতকাল ওয়ান্ডারার্স প্রথম পয়েন্ট পেয়েছে ফর্টিসের সাথে ড্র করে।
আসলেই এবারের ঘরোয়া ফুটবল দেশী ফুটবলার ও স্থানীয় কোচদের জন্য। বিদেশী হীন ক্লাবগুলোতে স্থানীয়রা যেমন ভালো করছেন, তেমনি দেশী কোচরাও নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন।


আরো সংবাদ



premium cement