সব ফরমেটেই কার্যকর জাকের
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৩
বাংলাদেশের ক্রিকেটে কিছু ক্রিকেটারকে নির্দিস্ট ফরমেটে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। যেমন মমিনুল হক এখন শুধু টেস্টেই খেলেন। এমন আরো আছেন যারা টেস্টে দলে চান্স পান না। ওয়ানডে বা টি-২০-এর জন্য ফিট। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছেন জাকের আলি অনিক। ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক টি-২০তে অভিষকে তার। আর টেস্ট ও ওয়ানডেতে তার ডেব্যু এ বছরই। আর কাকতালীয় ভাবে বাংলাদেশের বছরের শেষ দুই টেস্ট ও টি-২০ ম্যাচে জয়ে বিশাল অবদান জাকের আলির। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে কিংস্টনে ৯১ রান করেন দলের অতিগুরুত্বপূর্ণ সময়ে। প্রথম টেস্টে করেন ৫৩ ও ৩১ রান। আর এবারের তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে তার স্কোর ২৭ ,২১ ও ৭২ রান। সেন্ট ভিনসেন্টের কিংস টাউনে প্রথম টি-২০তে তার স্কোর ছিল ২৭ বলে ২৭। এরপর দ্বিতীয় টি-২০তে ২০ বলে ২১ রান। আর গতকাল তার টি-২০তে ক্যারিয়ার সেরা ৪১ বলে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস। এতে ছিল তিনটি বাউন্ডারি এবং ছয়টি বিশাল ছক্কা। মিডল অর্ডারে তার এই ঝড়ো ইনিংসের উপর ভর করেই বাংলাদেশের সাত উইকেটে ১৮৯ রান। যা আর তাড়া করতে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা।
টেস্ট ও টি-২০ এর বাইরে ওয়ানডেতেও সফল তিনি। এ বছর এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক তার। শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ছয় আর এক চারে ২৭ বলে ৩৭ রানে তার শুরু। যদিও পরের ম্যাচে এক রানে আউট। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশ তিন ওয়ানডেতে হারলেও তার স্কোর ছিল ৪৮, ৩ ও ৬২। প্রথম ওয়ানডেতে ৪০ বলে তিনটি করে ছক্কা আর বাউন্ডারিতে ৪৮ রান তার। শেষ ওয়ানডেতে ৫৭ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকা। এর মধ্যে ছক্কা ছিল দু’টি। বাউন্ডারি পাঁচটি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন প্রতিভাই দরকার। যারা সব ফরমেটেরই দলকে সার্ভিস দিতে পারবেন। নির্দিষ্ট ফরমেটে আটকে থাকলে চলবে না। সাকিব আল হাসানের পর ব্যাট হাতে এমন দায়িত্বই নিতে হবে কাউকে। সেখানে জাকির আলি অনিক যদি এই ধারায় থাকেন তাহলে তিনি হতে পারেন তিন ফরমেটেই নির্ভর যোগ্য।
এ বছর টেস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেক। তখন ব্যাট করতেন লোয়ার অর্ডারে। তবে অক্টোবরে মিরপুরে প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ (২ রান) হলের দ্বিতীয় ইনিংসে ১১১ বলে ৫৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও জ্যামাইকার কিংস্টনে রান পাননি তিনি। এক রানে বিদায়। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করলেন ওয়ানডে স্টাইলে। ১০৬ বলে ৯১ রান করেন তিনি। এর মধ্যে ছিল আটটি চার ও পাঁচটি বিশাল ছক্কা।
এই উইকেট রক্ষক ব্যাটারের ব্যাটিং স্টাইল হলো তিনি বিগ হিটে অভ্যস্ত। তা টেস্ট, ওয়ানডে বা বিগ হিটের স্বর্গ টি-২০তে। কাল তো ৭২ রানের ইনিংসে ছয়টি ছক্কা মেরে ম্যাচ জয়ে ভূমিকা রেখে দলকে জিতিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
কাল শেষ ম্যাচে ১৫তম ওভারের খেলা চলাকালীন ১১৪ রানে ছয় উইকেট হারানোর পর মনে হয়েছিল ১৫০-১৬০ এর মধ্যে আটকে যাবে বাংলাদেশ। কারণ, তখন জাকের আলিই ছিলেন শেষ স্বীকৃত ব্যাটার। তার সাথী ছিলেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
তানজিমকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে ঝড়ের বেগে ছক্কা ও চার হাঁকিয়ে জাকের আলী তুলে নিলেন ৫০ রান। শেষ ৩০ বলে হলো ৭৫ রান। যার বড় অংশই এসেছে জাকের আলির ছক্কা-চার থেকে।
জাকের প্রমাণ করলেন, ব্যাটারদের কেউ না থাকলেও এক বুক সাহস নিয়ে দলকে বড় পুঁজি গড়ে দেয়ার কাজটা ভালোমতো পালন করতে পারেন। একা দল টানার সামর্থ্য রাখেন। শেষ টেস্ট ও শেষ টি-২০ দেখার পর তাকে ঘিরে আগামীর বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ হওয়ার আশা করাই যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা