আবার জাতীয় দলে ফিরতে চাই
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিদেশী স্ট্রাইকারদের ভিড়ে দেশী স্ট্রাইকারদের খেলারই সুযোগ হয় না। গোল পাওয়া তো দূরের কথা। আর হ্যাটট্রিক। সেটিতো কল্পনাতেই পরিণত হয়েছিল স্থানীয় স্ট্রাইকারদের জন্য। এবার কয়েক দলে বিদেশী ফরোয়ার্ডদের অনুপস্থিতি। সেই দলগুলোর দেশী ৯ নম্বর জার্সিধারীরা এখনো হ্যাটট্রিক পাননি। তবে ব্রাদার্স ইউনিয়নের চট্টগ্রামের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন নিজ দলের গাম্বিয়ান ফুটবলারের সাথে পাল্লা দিয়েই করেছেন হ্যাটট্রিক। আফ্রিকান দেশ গাম্বিয়ান মোস্তফা দ্রামেহর কারণেই অল্পের জন্য চলতি সিজনের প্রথম হ্যাটট্রিক করা হয়নি সাজ্জাদের। পরশু বসুন্ধরা গ্রুপ ফেডারেশন কাপে ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে আগে তিন গোল পূর্ণ করেন মোস্তফা। পরে হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয় সাজ্জাদ। আর এতে চলতি ২০২৪-২৫ সিজনে স্থানীয়দের মধ্যে প্রথম হ্যাটট্রিককারী হয়ে গেলেন তিনি। এই হ্যাটট্রিক আরো গোল করার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে সাজ্জাদের। জানান, প্রতিপক্ষের জালে আরো বল পাঠিয়ে ফিরতে চাই জাতীয় দলে।
কোনো ধরনের বয়সভিত্তিক জাতীয় না খেলে সরাসরি বাংলাদেশ সিনিয়র জাতীয় দলে খেলা। দেশের ফুটবলে এমন অল্প কয়েক খেলোয়াড়ের মতোই সাজ্জাদ। ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ফিফা প্রীতিম্যাচে লাল-সবুজ জার্সিতে অভিষেক তার। এরপর জাতীয় দলে আরো ৫টি ম্যাচ খেলে বাদ পড়া। বাংলাদেশ দলের হয়ে একমাত্র গোল ২০২২ সালে নেপালের মাটিতে তাদের বিপক্ষে প্রীতিম্যাচে। ২০১৬ সালে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে যাত্রা শুরু সাজ্জাদের। ২০১৮ সালে এই দলের হয়ে বিপিএলে খেলেছেন। সেই থেকে প্রতি সিজনেই গোল তার। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবে দুই সিজনে ৫টি করে, ২০২১-২২ এ মোহামেডানের হয়ে ৫টি এবং গত বছর লে. শেখ জামালের জার্সিতে পাঁচ গোল তার। তা লিগ ও অন্য টুর্নামেন্ট মিলে। ২০১৬ সালে সাইফকে বিসিএল থেকে প্রিমিয়ারে তুলতে ২ গোল ছিল তার।
চট্টগ্রাম লিগে দুটি হ্যাটট্রিক পেলেও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবের হয়ে এই প্রথম হ্যাটট্রিক তার। পরশু পরপর তিন গোল করে সাজ্জাদ তা প্রথমে উদযাপন করেন ব্রাদার্সের রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড়দের সাথে। কারণ তারাই বেশি প্রেরণা জুগিয়েছেন। ফেডারেশন কাপের দুই ম্যাচে তিন গোল করলেও লিগের তিন ম্যাচের দুইটিতে খেলে এখনো গোল পাননি। তাই লিগে ১০টির বেশি গোল করতে চান। জানান, ‘এবার তো লিগের ম্যাচ কম। তা ছাড়া সুস্থতা এবং কার্ডের বিষয় আছে। এ জন্য দশের অধিক গোলই আমার এবার টার্গেট।’ ঘরোয়া ফুটবল ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ মিলে ২১টি গোল তার। তবে স্মরণীয় নেপালের বিপক্ষে কার গোল এবং ফেডারেশন কাপের নকআউটে ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে ১১৯ মিনিটে করা স্মরণীয় গোল। আরামবাগের মাঠে মুন্সীগঞ্জের মাঠে লিগে পাঁচজনকে কাটিয়ে করা গোলটিও ভুলতে পারছেন না সাজ্জাদ। দেশি স্ট্রাইকাররা গোল করলে তাদের জাতীয় দলে ডাকা হবে। এটাই স্বাভাবিক। তবে সাজ্জাদের মতে, গোল করলেই যদি জাতীয় দলে ডাক পাওয়া হয় তাহলে ২০২-২১ সালে আমি কেন বাংলাদেশ দলে ডাক পাইনি। তা ছাড়া গোলের পাশাপাশি মাঠে একজন খেলোয়াড়ের কার্যকরে ভূমিকা কতটুকু সেটাও কিন্তু বিবেচ্য হয়। এর পরও জানান, আসলে যতই ভালো খেলিনা কেন দিন শেষে গোলই বিবেচনায় আসবে। যদিও এবারের হ্যাটট্রিক আমাকে গোল পেতে আরো আত্মবিশ্বাসী করবে। আসলে গোল পেলে সবাইর ভালো লাগে।
২০১৫ সালে ঢাকার ফুটবলে অভিষেক তৃতীয় বিভাগের দল কদমতলা সংসদের হয়ে। সে বার চার ম্যাচে ২ গোল ছিল তার। আর সাইফে আসা ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম আবাহনীর সাথে ফটিয়া উপজেলার একটি প্রীতিম্যাচে। সেই খেলায় সাজ্জাদের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আরমান আজিজ তাকে সাইফ স্পোর্টিংয়ে নিয়ে আসেন।
জাতীয় দলে ২০২২ সালে স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবনের বদলে নেয়া হয় সাজ্জাদকে। বিলম্বে ক্যাম্পে আসার জন্য জীবনকে নেননি কোচ হাভিয়ার কাবরেরা। তাই সাজ্জাদ যখন জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর পান তখন চট্টগ্রাম থেকে বাসে ঢাকায় না এসে বিমানে চড়েন। সাজ্জাদের মতে, বাসে আসতে দেরি হলে যদি কোচ আমাকেও বাদ দিয়ে দেন এই শঙ্কায় বিমানে আসি। এরপর তিন দফা সাফ ফুটবল, মালদ্বীপের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই প্লে অফে এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ডাক পেলেও চূড়ান্ত দলে জায়গা হয়নি।
এখন জাতীয় দলে ডাক পেতে হলে গোল পাওয়া স্থানীয়দের সাথে তুমুল লড়াই করতে হবে। রোনালদো নাজারিও গোল স্কোরিং দক্ষতাকে নিয়মিত অনুসরণ করা সাজ্জাদ বললেন, ‘দেশী ফুটবলাররা গোল পাচ্ছেন এতে খুব ভালো লাগছে। এতে দেশের ফুটবলাররা উপকৃত হবে।’ ফারইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র এই ফুটবলার বিদেশীদের টেক্কা দিয়ে এবং স্থানীয়দের বিপক্ষে লড়াই করেই ফিরতে চান লাল-সবুজ জার্সিতে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা