জবাবটা মাঠেই দিচ্ছেন আল আমিন
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:৫৩
৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে বহু ফুটবলারের কপাল পুড়েছে। লে. শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব এবং শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র দল না গড়ায় এবং দুই আবাহনীর সাথে বাংলাদেশ পুলিশ এবং অন্য ক্লাব পর্যাপ্ত বাজেট জোগাড় করতে না পারায় বেকায়দায় পড়ে যান অনেক ফুটবলার। ফলে যে ফুটবলার ঢাকা আবাহনী থেকে ৬৫ লাখ টাকা পেয়েছিলেন তাকে এবার মাত্র পাঁচ লাখে খেলতে হচ্ছে রহমতগঞ্জে। এমনই ভুক্তভোগী ফুটবলার আল আমিন। এ বছর শেখ জামালে ২২ লাখ টাকায় চুক্তি হয়েছিল তার। অথচ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়নরা এবার দল না গড়ায় নাম কাওয়াস্তে তাকে খেলতে হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশে। অনেক চেষ্টার পর পুলিশ দল তাকে নিয়েছে। শেখ জামালে খেলতে না পারার পর তিন ক্লাবে খেলার জন্য যোগাযোগ করে কার্যত অপমানিতই হয়েছেন আল আমিন। তবে পুলিশ তাকে সুযোগ দেয়ায় ওই তিন ক্লাবসহ অন্যদের জবাব দিচ্ছেন এই ফরোয়ার্ড। লিগে তিন ম্যাচে চার গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় উঠতি এই স্ট্রাইকার। দেশের শীর্ষ লিগে এবারই প্রথম গোল পাওয়াও তার।
২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ দলের সদস্য আল আমিন। সেবার তার একটি ম্যাচ খেলা হয়েছিল বদলি হিসেবে নেপালের বিপক্ষে। সে বছরই থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত উয়েফা অনূর্ধ্ব-১৬ আসরে তিনি লাল-সবুজ জার্সিতে মাঠে নামেন সাইপ্রাস ও মালদ্বীপের বিপক্ষে। ক্লিয়ারম্যান অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল দলের অংশ হিসেবে ম্যানচেস্টার সিটি ক্লাব পরিদর্শনে তার যাওয়ার কথা ছিল ইংল্যান্ডে। তবে করোনার কারনে যাওয়া হয়নি। গত বছর শেখ জামালে পাঁচ লাখ টাকা পান তিনি। এর আগে আরামবাগ বিপিএল থেকে যেবার সাসপেন্ড হয়েছিল তখন মতিঝিলের এই ক্লাবে ছিলেন।
নীলফামারী সদরের সন্তান আল আমিন এলাকায় স্ট্রাইকার পজিশনে খেললেও ঢাকার ফুটবলে কখনও উইং পজিশনে কখনো অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় দলে রাইট ব্যাকে খেলেছেন। দেশে সাধারণত বিদেশীদের জন্য স্ট্রাইকিং পজিশন হারান স্থানীয়রা। অথচ ব্যতিক্রমী ঘটনার জন্ম দিয়েছেন স’মিল (করাত কল) এর শ্রমিকের এই ছেলে। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সেরে জন্য পুলিশের কোচ মাহবুবুল হক জুয়েলের কাছ থেকে। প্যারাগুয়ের স্ট্রাইকার নেলসন কুইন্টানা মার্টিনেজকে বাদ দিয়ে নিয়মিত খেলাচ্ছেন আল আমিনকে। এরইমধ্যে পেশাদার লিগের একমাত্র সার্ভিসেস দলটির দলটির তিন ম্যাচে দুই জয়েই বিশাল ভূমিকা তার। ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে দলের ৪-০তে জয়ে দুই গোলই তার। এরপর ইয়ংমেন্স ক্লাব ফকিরেরপুলের বিপক্ষেও আল আমিনের দুই গোল। সে ম্যাচে দল জিতেছে ৪-১-এ।
চার গোল দিয়ে মোহামেডানের সোলেমান দিয়াবাতের সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন আল আমিন।
লিগে এখন পর্যন্ত হালি গোল দিয়ে আত্মবিশ্বাসে উড়ছেন তিনি। জানান, সবারই বড় লক্ষ্য থাকে। আমার আপাতত লক্ষ্য লিগে কমপক্ষে সাত-আটটি গোল করা। চাই মার্চের ফিফা উইন্ডোতে জাতীয় দলে ডাক পেতে। যদি আমাকে ডাকা না-ও হয় এর পরও আরো গোল করে সবার নজরে আসতে চাই। যোগ করেন, ‘বেশি গোল করলে সবাই আমাকে নিয়ে আলোচনা করে। আগামীবার বেশি টাকায় বড় ক্লাবে যেতে পারব।’
বিদেশী স্ট্রাইকারকে টপকে একাদশে জায়গা পোক্ত করা আল আমিন জানান, আমি গত বছর শেখ জামালে ফিরতি পর্বে কয়েকটি ম্যাচে স্ট্রাইকিং পজিশনে খেলেছিলাম। যদিও গোল পাইনি। ঢাকার ফুটবলে এবারই প্রথম গোলের দেখা। এ জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হচ্ছে। বিদেশীকে ডিঙ্গিয়ে একাদশে খেলছি, গোলও পাচ্ছি এখন এই স্থানটা ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ।
এবার দল বদলের সময় তারকা ফুটবলারদের মতো অসহায় হয়ে পড়েছিলেন আল আমিনও। জানান, যখন শুনলাম শেখ জামাল দল গড়বে না তখন অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আবার এবার খেলা। কয়েক ক্লাবের সাথে মধ্যস্থতাকারীর সাহায্যে যোগাযোগ করেছিলাম। বলেছিলাম, আপনারা আমার ক্যারিয়ারটা দেখুন। দেখুন আমার আগের পারফরম্যান্স। কিন্তু ইতিবাচক সাড়া পায়নি। উল্টো সেখান থেকে অপমানজনক উত্তরই আসে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ দলের খেলোয়াড় ঈসা ফয়সাল ভাই এবং ফুটবলার জয়ন্ত দাদার কারণেই এই দলে সুযোগ পেয়েছি। তাই এখন মাঠে খেলেই জবাবটা দিচ্ছি।
আরো জানান’ এবার ক্লাব না পেলে বিভিন্ন স্থানে খ্যাপ খেলে সময় কাটাতে হতো। এতে টাকা ভালোই আয় হয়। তবে ইনজুরির মারাত্মক শঙ্কা থাকে।
আল আমিনের খেলার স্টাইলে মুগ্ধ বাংলাদেশ পুলিশ দলের গোলরক্ষক কোচ এবং জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক নিজাম মজুমদারও। তার মতে, জাতীয় দলের ফুটবলার রাকিব হোসেনের মতোই ক্ষীপ্র গতির ফরোয়ার্ড আল আমিন। তবে বল হারানোর পর দ্রুতগতিতে ফিরে আসায় রাকিবের চেয়েও এগিয়ে সে। জাতীয় দলে যোগ্য বিকল্প হওয়ার মতো খেলোয়াড় উঠতি এই আল আমিন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা