০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`
আজ শুরু টি-২০

চা শ্রমিকের বেশে জ্যোতি-লুইস

লাক্কাতুরা চা-বাগানের ভিতরে চা শ্রমিকের বেশে টি-২০ সিরিজের ট্রফি হাতে বাংলাদেশ অধিনায়ক জ্যোতি ও আয়ারল্যান্ডের গ্যাবি লুইস : নয়া দিগন্ত -


প্রথম দেখায় বোঝার কোনো উপায় নেই তারা ক্রিকেটার। পিঠে ঝুলানো পাতা সংগ্রহের ঝুড়ি, পরনেও চা শ্রমিকের পোশাক। প্রকৃতি-পরিবেশের সাথে মিশে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি আর আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক গ্যাবি লুইস। তাদের হাতে ট্রফি ধরা না থাকলে ছবিটি বিভ্রান্ত করতে পারত যেকোনো চক্ষুযুগলকে। বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের টি-২০ সিরিজের আগে এমন বিশেষ ফটোসেশনই হয়ে গেল সিলেটে। বাংলাদেশ অধিনায়ক জ্যোতির ভাষায়, যা নারী ক্রিকেটকে ভিন্নভাবে প্রমোট করবে।

লক্কাতুরা চা বাগানের মাঝে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে, যেখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আলাদাভাবে নজর কাড়ে। এবার সেই সৌন্দর্যকে ধারণ করা হলো ভিন্নভাবে। ওই এলাকায় আছে দেশের সর্বপ্রথম চা বাগান মালানীছড়া, যার বয়স ১৭৫ বছর। সেখানে গিয়ে ক্ষণিকের জন্য চা-শ্রমিক বনে গেলেন দুই ক্রিকেটার। পরে সংবাদ সম্মেলনে জ্যোতি আলাদা করে প্রশংসা করলেন এ উদ্যোগের, ‘অবশ্যই বিশেষ ফটোসেশন। এর আগে ছেলেদের ক্রিকেটে চা বাগানের ভেতর করা হয়েছে ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন। এবার বিশেষ পোশাক পরে ঐতিহ্যগতভাবে হলো; যা ছিল কল্পনার বাইরে। এটি ভিন্নভাবে নারী ক্রিকেটকে প্রমোট করবে।’
আজ বেলা ২টায় সিলেটে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পায়নি আয়ারল্যান্ড। তিনটি ম্যাচই হয়েছে ভীষণ একপেশে। দাপট দেখিয়ে প্রতিপক্ষকে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করে এবার টি-২০ মিশন। তবে এই সংস্করণে ভিন্ন চ্যালেঞ্জে পড়ার জন্য নিজেদের তৈরি রাখছে বাংলাদেশ। আইরিশদের তাই হালকাভাবে নেয়ার কারণ দেখছেন না জ্যোতি। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডের চেয়ে টি-২০তে আয়ারল্যান্ডের পরিসংখ্যান ভালো। ২০ ওভারের ক্রিকেটে ১১ দেখায় তিনবার জিতেছে আইরিশরা। ৮ জয় নিয়ে যদিও অনেকখানি এগিয়ে বাংলাদেশই।

ওয়ানডে সিরিজ খেলা হয়েছিল মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। উইকেট যেখানে স্পিন সহায়ক, মন্থর। আয়ারল্যান্ডের জন্য যা বেশ কঠিন কন্ডিশন। টি-২০ হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। যেখানকার উইকেট তুলনামূলক ভালো। সিরিজ শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে জ্যোতি বলেন, ‘আমরা সিলেটেই বেশি খেলি। এখানের উইকেট অনেক ভালো হয়। কোনো কিছু হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। ম্যাচ বাই ম্যাচ পরিকল্পনা করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। অবশ্যই সিরিজ জেতার চিন্তা থাকবে। আমাদের মোমেন্টামটা ধরে রাখলে ভালো হবে।’

জ্যোতি জানান মিরপুরের থেকে কন্ডিশন ও ফরম্যাট ভিন্ন হওয়ায় আয়ারল্যান্ডকে পাওয়া যেতে পারে ভিন্ন মেজাজে, সেজন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখছেন তিনি, ‘আমি অনেক বেশি ইতিবাচক। আত্মবিশ্বাসী কিন্তু অতিরিক্ত নই। দলীয়ভাবে পারফর্ম করলে ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নেমেই জিতে যাবো তা কিন্তু না, ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। প্রথমত, ওয়ানডে তারা ভিন্নভাবে খেলেছে হয়তোবা, কন্ডিশন ভিন্ন ছিল। সেকেন্ড ওয়ানডেতে তারা ভালো ব্যাট করেছে, তৃতীয় ম্যাচেও ভালো ব্যাট করেছে। হালকভাবে নেয়ার কোনো চিন্তাভাবনা নেই।’

ওয়ানডে সিরিজে সর্বোচ্চ রান করে টি-২০ দলেও এসেছেন শারমিন আক্তার সুপ্তা। তার ব্যাটে দেখা গেছে আগ্রাসী অ্যাপ্রোচ; যা বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে সচরাচর দেখা যায় না। সব মিলিয়ে খেলোয়াড় ও দলের ছন্দ নিয়ে আশাবাদী জ্যোতি, ‘প্রথমত টি-২০ দলে অনেক বদল আছে। সুপ্তা আপু অনেক ভালো খেলার কারণে তার ইন্টেন্ট ভিন্ন ছিল। তাকে এ জন্য টি-২০তে সুযোগ দেয়া হয়েছে। খেলোয়াড়রা ভালো টাচে আছে, গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের ওই ধারাবাহিকতা থাকবে কি না। ভিন্ন সংস্করণ, ভিন্ন কন্ডিশন। অবশ্যই প্রথম ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ।’


আরো সংবাদ



premium cement