আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করল নিগাররা
- ক্রীড়া প্রতিবেদক
- ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শ্রীলঙ্কা এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়। বাংলাদেশে আসার আগে এই জয়ের আত্মবিশ্বাসে শক্তিশালী ছিল আয়ারল্যান্ড। অন্যদিকে বাংলাদেশ দল লম্বা সময় ধরেই ওয়ানডেতে জয়ের দেখা পাচ্ছি না। তাই ভয় ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতিদের নিয়ে। তবে টাইগ্রেসদের সম্মিলিত দলীয় শক্তির কাছে পাত্তাই পেল না আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রত্যেকটিতেই সহজে বিজয়ের হাসি বাংলাদেশের। ফলে লাল-সবুজদের কাছে হোয়াইটওয়াশ তথা বাংলাওয়াশ হতে হলো আয়ারল্যান্ডকে।
কাল তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে সফরকারীদের দেয়া ১৮৫ রানকে ৩৭.৩ ওভারে টপকে যায় স্বাগতিকরা। হারায় ৩ উইকেট। ৩-০তে জয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ৬ পয়েন্ট পেল এই সিরিজ থেকে। যা তাদের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব এড়ানোর বড় একটি শক্তি হিসেবে যোগ হয়েছে। আর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনো দলকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। এর আগে ২০২১ সালে জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই করেছিল তারা।
আয়ারল্যান্ডের যে বোলিং লাইন আপ তাতে তাদের ১৯৩ বা ১৮৫ কোনো রানই বড় চ্যালেঞ্জ নয়। কাল সেটা ফের প্রমান করলেন ইনফর্ম ব্যাটার ফারজানা হক পিংকি এবং শারমিন আক্তার সুপ্তা। ওপেনিংয়ে মুর্শিদা প্রথম ম্যাচে ৩৮ রান করলেও দ্বিতীয় ম্যাচের মতো কাল তৃতীয় ওয়ানডেতেও ব্যর্থ। ভুল পুল শটে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ৮ রানে সাজ ঘরে ফেরেন। এরপর আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করার মিশনটা তরান্বিত করেন ফারজানা পিংকি ও এবং শারমিন সুপ্তা। দ্বিতীয় উইকেটে দুইজনের ১৪৩ রানের জুটিই দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যায়। সিরিজে টানা তিন ফিফটি করলেন বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান ফারজানা পিংকি। প্রথম ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৬১ ও ৫০ রান করার পর কাল তার ব্যাট থেকে আসে ৬১ রান। আর অনেক দিন পর জাতীয় দলে ফেরা শারমিন আক্তার সুপ্তার এই সিরিজটা কাটলো বেশ ভালোই। প্রথম ম্যাচে ৯৬ করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৪৩। আর কাল ৭২ রানের ইনিংস। ৮৮ বলে ১১ চারে এই রান তার। ফারজানার ইনিংসে ছিল ৬টি বাউন্ডারি। খেলেছেন ৯৯ বল।
দুইজন যেভাবে খেলছিলেন তাতে তারাই জয়ের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্রিজে থাকতে পারতেন। বোলারের হাতে রিটার্ন ক্যাচ দিয়েও রক্ষা পেয়ে ফিফটি করা ফারজানা এরপর উইকেট রক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন। ফারজানার শট পায়ে লাগায় পরে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে ব্যাট করেন সুপ্তা। কিন্তু তিনিও পাননি সেঞ্চুরি। তুলে মারতে গিয়ে কভারে ক্যাচ দেন। এর আগেও লাইফ পান তিনি। এরপর অধিনায়ক জ্যোতি ১৮ এবং সোবহানা মুস্তারি ৭ রানে অপরাজিত থাকায় ৭ উইকেটে দলের জয় নিশ্চিত হয়।
এর আগে টস জয়ী আয়ারল্যান্ড ১৮৫ রানে অলআউট হয়। আর এই সংগ্রহের নেপথ্যে অধিনায়ক গ্যাবী লুইসের ৫২ রানের ইনিংস। সেপ্টেম্বরে ডাবলিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি ( ১১৯) এবং বেলফাস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭২ রানের ইনিংস। অবশ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে গ্যাবি লুইসের ব্যাট থেকে আসে ৫ ও ২। তবে গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। ফাহিমা খাতুনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৭৯ বল খেলে হাঁকান ৯টি বাউন্ডারি। সাথে অ্যামি হান্টার ( ২৩), অর্লা পেন্ডারগাস্টার ( ২৭), আর্নেলে কেলি (১৮), অ্যালানা ডানজেল (১৯) এবং কারা মুরির ( ১৩) রান। এতেই আয়ারল্যান্ডের স্কোর ১৮৫। ইনিংসের একেবারে শেষ বলে ফাহিমার বলে জ্যোতির হাতে স্ট্যাম্পড আইমে মাগুইরে। এতে ৩-০তে সিরিজ জয়ের জন্য এই ম্যাচে ১৮৬ রানের টার্গেট পায় টাইগ্রেসরা। প্রথম ম্যাচে ৯৮ এবং দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৯৩ রান করেছিল আইরিশরা।
লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুনের বোলিং তোপের সাথে যুক্ত হয় অপর দুই স্পিনার সুলতানা খাতুন ও নাহিদা আক্তারের দাপট। যা সফরকারীদের ১৯০ও করতে দেয়নি। ১০ ওভারে ৪৩ রানে তিন শিকার ফাহিমর। ২৯ রানে সুলতানা ২ উইকেট নিয়েছেন। নাহিদার শিকার ২টি। তবে তিনি ছিলেন ব্যায় বহুল। ৫৫ রান দিয়েছেন ১০ ওভারে। একটি করে উইকেট রাবেয়া খাতুন ও স্বর্না আক্তারের।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন শারমিন আক্তার সুপ্তা। সিরিজ সেরা ফরজানা হক পিংকি।
টি-২০ দলে ডাক পেয়ে উৎফুল্ল সুপ্তা
অনেক দিন পর জাতীয় দলে ফিরলেন শারমিন আক্তার সুপ্তা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। প্রথম ম্যাচে ৯৬। পরের ম্যাচে ৪৩। আর গতকাল শেষ ওয়ানডেতে তার ব্যাট থেকে এলো ৭২ রান। প্রথম ম্যাচের মতো গতকালও শতরান করতে পারেননি এই ব্যাটার। এর পরও খুশি কামব্যাকের এই ইনিংস খেলে। মাস্কো ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে নিরলস অনুশীলন করে এবং কোচ সালাহউদ্দিনের গাইডে তিনি আবার জাতীয় দলে ফিরলেন। এবং দারুন তিন ইনিংস উপহার। এর পুরস্কারস্বরূপ পেলেন গতকাল শেষ ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার। ওয়ানডে সিরিজের পরই বিসিবি গতকাল ঘোষণা করে সিলেটে অনুষ্ঠিতব্য তিন টি-২০ ম্যাচের জন্য নারী দল। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে যখন সুপ্তাকে জানানো হলো আপনিতো টি-২০ দলে ডাক পেয়েছেন তখন এই ব্যাটারের হাসিমুখে বিস্ময়মাখা কণ্ঠে উত্তর , ‘তাই, আমি টি-২০ ডাক পেয়েছি ! আলহামদুলিল্লাহ।’ উল্লেখ্য ৫, ৭ ৯ ডিসেম্বর এই তিনটি টি-২০ ম্যাচ।
এরপর সুপ্তা জানান, আমি আসলে আসার ন্যাচারাল খেলাটাই খেলার চেস্টা করেছি। অনুশীলনে যা শিখেছি তা ম্যাচে প্রয়োগের চেস্টা করেছি। যোগ করেন, আমি যে মাস্কো অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করি তা আন্তর্জাতিক মানের। এরপর কোচ সালাহউদ্দিন আমাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন। ফলে আমি এখনও খেলা চালিয়ে যাচ্ছি। এবং গত লিগে এবং এই সিরিজে ভালো করতে পেরেছি।
তিন ম্যাচেই আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট অর্জন। যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতেও আরো ৬ পয়েন্ট পাওয়ার আত্মবিশ্বাস যোগাবে। ম্যাচ শেষে জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। আরো উল্লেখ করেন, আইরিশদের ওয়ানডেতে হোয়াইট ওয়াশ করার পর এখন টি-২০তে সফরকারীদের ধবল ধোলাইয়ের স্বপ্ন দেখছি। জ্যোতির মতে, খেলোয়াড়রা যখন ভালো করে তখন সবাই সেই ধারা ধরে রাখতে চায়। দেখুন টিমতো এখন ভালো করছে। এই ধারা যদি বহাল থাকে এবং ম্যাচ বাই ম্যাচ যদি পরিকল্পনা করে খেলতে পারি তাহলে টি-২০তেও তাদের সব ম্যাচে হারাতে পারবো।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা