আমিতো স্কলারশিপও পাইনি : আসিফ রেজা
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অ্যাথলেটিক্সে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে জিতলে দ্রুততম মানব-মানবী। আর সাঁতারে ৫০ মিটার ফ্রি- স্টাইলে প্রথম হলে দ্রুততম সাঁতারু। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দ্রুততম মানব-মানবীর যতটুকু কদর ও প্রচারণা এর ছিটে ফোঁটাও নেই সাঁতারে। তাই এবারের জাতীয় সাঁতারে পুরুষ বিভাগে দ্রুততম সাঁতারু হয়েও আড়ালেই ছিলেন আসিফ রেজা। সাক্ষাৎকারে সেই কস্ট এবং আরো কিছু না পওয়ার কথাই জানাচ্ছেন নৌবাহিনীতে চাকরি করা কুষ্টিয়ার এই সাঁতারু।
প্রশ্ন: এবার তো পুরনায় দ্রুততম সাঁতারুর খেতাব জিতলেন। এ নিয়ে কতবার দ্রুততম সাঁতারু হলেন?
আসিফ রেজা: ৬/৭ বার তো হবে।
প্রশ্ন: অ্যাথলেটিক্সে দ্রুততম মানব হলে অনেক গুরুত্ব। কিন্তু দ্রুততম সাঁতারু হলে তা জোটে না। এতে কেমন লাগে আপনার?
আসিফ রেজা: এ নিয়ে আফসোস তো অবশ্যই আছে। যদি ফেডারেশন আমাকে হাইলাইটস না করে তাহলে কে করবে। অ্যাথলেটিক্সের যে সাবেক দ্রুততম মানব ইসমাইল ভাই, উনিতো নৌবাহিনীতে আমার বিল্ডিংয়েই থাকে। এর আগে দ্রুততম সাঁতারু মাহফিজার রহমান সাগর, সে আমার বয়সে বিদেশে স্কলারশিপ পেয়েছে। আমি কিন্তু স্কলারশিপ পাইনি। কেন আমি পাইনি তা জানি না।
প্রশ্ন: এই না পাওয়াটা আপনাকে কতটুকু কষ্ট দেয় ?
আসিফ রেজা: অবশ্যই ভীষণ কষ্ট দেয়। মাঝখানে খেলাধুলাই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাহিনী এবং আমার স্ত্রীর অনুপ্রেরণাতেই পুলে সাঁতার কেটে যাচ্ছি। নৌবাহিনী আমাকে বলেছে যদি ফেডারেশন কিছু নাও করে আমারা তো আছি।
প্রশ্ন: দ্রুততম সাঁতারু হওয়ার পর নৌবাহিনী কতটুকু সম্মান করে?
আসিফ রেজা: নৌবাহিনীই তো আমার সব। দ্রুততম সাঁতারু হয়ে ফেডারেশন থেকে তেমন সম্মান না পেলেও আমি ইন্টার সার্ভিসে দ্রুততম সাঁতারু হলে নৌবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমাকে মাথায় তুলে রাখে। সে জিনিসটা আমার কাছে অনেক কিছু।
প্রশ্ন: প্রথম কবে দ্রুততম সাঁতারু হয়েছিলেন?
আসিফ রেজা: ২০১৯ সালে আমি প্রথম ৫০ মিটার ফ্রি-স্টাইলে প্রথম হই।
প্রশ্ন: মোট কয়টি ইভেন্টে আপনি স্বর্ণের জন্য লড়াই করেন?
আসিফ রেজা: আমি এবার ৫০, ১০০ ও ২০০ মিটার ফ্রি-স্টাইলে অংশ নিয়েছি। এর মধ্যে ৫০ মিটারে স্বর্ণ। আসলে ১০০ ও ২০০ মিটারে স্বর্ণ জয়ের মতো প্রস্তুতি আমার ছিল না। আমার সমস্ত ফোকাসই ছিল দ্রুততম সাঁতারু হওয়ার জন্য। যদিও অনেকের সাথে আমার কোচেরও আত্মবিশ্বাস ছিল না আমি যে স্বর্ণ জিতবো। কিন্তু আমার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার টুম্বা এবং আমার ওয়াইসি নাদিউজ্জামান স্যার আমার উৎসাহ দাতা। এই দুইজনকে আমার বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ।
প্রশ্ন: প্রথম কবে সাঁতার শুরু করেছেন। কার মাধ্যমে সাঁতারে আসা।
আসিফ রেজা: আমি ২০০৩ সালে প্রথম সাঁতার শুরু করি। সাঁতার ফেডারেশন কর্মকর্তা এবং কোচ আমিরুল ইসলাম আমার মামা। উনিই আমাকে এই খেলায় নিয়ে আসেন। তাছাড়া আমরা সাঁতার পরিবারের সদস্য। অনিক ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, লাবনী আক্তার জুঁই, সবুরা খাতুন, শরীফুল সবাই আমার আত্মীয়।
প্রশ্ন: এখন বয়স কত। আর কত দিন খেলতে চান। আর পরবর্তী লক্ষ্য কি?
আসিফ রেজা: আমার এখন বয়স ৩০। আমি সাঁতার ছেড়েই দিতে চেয়েছিলাম। আম্মুও বলেছে অবসরে যেতে। কিন্তু আমার স্ত্রী নারাজ। এখন আমার লক্ষ্য, যেহেতু এবার দ্রুততম সাঁতারু হয়েছি, তাই পরবর্তী লক্ষ্য এই ইভেন্টে রেকর্ড করা। আমি কিন্তু এখনো জাতীয় দলের ক্যাম্পে।
প্রশ্ন: রেকর্ড কয়টি আছে আপনার?
আসিফ রেজা: ব্যক্তিগততে আমার একটিই রেকর্ড। তা ২০১৯ সালে এই ৫০ মিটারেই। এ ছাড়া রিলে ইভেন্টে আরো তিনটি রেকর্ড আছে।
প্রশ্ন: আপনার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার টুম্মা এবারও ১১টি স্বর্ণ জয় করেছেন। তিনি প্রায় সব ইভেন্টেই অংশ নেন। আপনি কেন ৩/৪টি ইভেন্টে লড়েছেন।
আসিফ রেজা: আমার স্ত্রী বাংলাদেশের অন্যতম সেরা সাঁতারু। তার পক্ষে এতো ইভেন্টে অংশ নেয়া সম্ভব হলেও আমার পক্ষে তা সম্ভব নয়। আমি মূলত ৫০ মিটার ফ্রি-স্টাইলকেই হাইলাইটস করি।
প্রশ্ন: এস এ গেমসে কয়টি পদক আছে আপনার? দেশে মোট কয়টি স্বর্ণ?
আসিফ রেজা: দেশে আমার মোট ৩৫টির মতো স্বর্ণ। আর ২০১৯ কাঠমান্ডু এস এ গেমসে একটি রৌপ্য ও একটি ব্রোঞ্জ জিতেছি ১০০ মিটার ফ্রি-স্টাইল রিলে ও মিডলে রিলেতে।
প্রশ্ন: এস এ গেমসে স্বর্ণ জিততে পারেননি, এ নিয়ে কি আফসোস নেই?
প্রশ্ন: আফসোস তো আছেই। তবে অন্য দেশের সাঁতারুদের যে অনুশীলন ও কোচ সেটার সাথে আমাদের আকাশ পাতাল পার্থক্য। আমি যখন ২০১৯ সালে ২৩.৮৫ সেকেন্ডে রেকর্ড করি তখন ছিলেন কোরিয়ান কোচ। এরপর দুই জাপানি কোচের অধীনে আমার টাইমিং ছিল ২৩.০৪ সে:। এরপর আমি আর ২৩ সেকেন্ডে সাঁতার কাটতে পারিনি। তাই এস এ গেমসে স্বর্ণ পেতে হলে বিদেশী কোচ লাগবে। অথবা আমাদের দেশী কোচদের উন্নতি করাতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা