একই দিনে দুই দিপুর স্বর্ণ
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০৫
এক দিকে ট্রফিসহ কর্মকর্তাদের নিয়ে বাংলাদেশ আনসার কুস্তি দুলের মিছিল। অন্য দিকে ফেডারেশন কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তোলায় ব্যস্ত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের পদকজয়ী কুস্তি দল। গতকাল হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে শেষ হওয়া জাতীয় কুস্তিতে এই দুই লড়াইয়ের সাথে দারুণ এক ঘটনা ঘটে গেলে দুই দলের দুই দিপুর জন্য। গতকাল এই দুই দিপু স্বর্ণ জিতেছেন ভিন্ন দুই দলের হয়ে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিপু চন্দ্র রায় ৭৯ কেজিতে স্বর্ণ জয় করেছেন। অন্য দিকে আনসারের মোহাম্মদ দিপু স্বর্ণপদক গলায় তুলেছেন। ৭০ কেজিতে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে তার প্রথম হওয়া। পুরুষ ও মহিলা দুই বিভাগেই চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ আনসার। তারা পুরুষ বিভাগে ৭ স্বর্ণ এবং একটি করে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ জয় করে। মহিলা বিভাগে তাদের অর্জন ৬ স্বর্ণ ও একটি করে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ। পুরুষ বিভাগে বিজিবি ২ স্বর্ণ, রৌপ্য ও ১ ব্রোঞ্জ পেয়ে রানার্সআপ হয়েছে। মহিলা বিভাগে সেনাবাহিনী রানার্সআপ হতে পেয়েছে ৩ স্বর্ণ ও ৪টি ব্রোঞ্জ।
বিজিবিতে কর্মরত দিপুর বাড়ি দিনাজপুর। ব্যাটালিয়ান আনসারে চাকরি করা মোহাম্মদ দিপু কুমিল্লা জেলা থেকে উঠে এসেছেন। দু’জনই বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলোয়াড়। লক্ষণীয় বিষয় দু’জনই দু’টি করে কন্যাসন্তানের জনক। দিপু রায়ের অবশ্য যমজ কন্যা।
৩৯ বছর বয়স দিপুর। এই বয়সে তার খেলাই ছেড়ে দেয়ার কথা। অথচ ম্যাটে নেমেই এবার গলায় তুলেছেন স্বর্ণ। জাতীয় কুস্তিতে এটি দিপু চন্দ্রের তৃতীয় স্বর্ণ। এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ প্রথম হয়েছিলেন। এর মধ্যে ২০১২ সালের স্বর্ণই তার স্মরণীয়। কারণ সেই স্বর্ণ তাকে সেরা খেলোয়াডের মর্যাদা এনে দিয়েছিলেন। আট বছর পর এবার স্বর্ণ জয়ের নেপথ্য উল্লেখ করে দিপু চন্দ্র বলেন, এবার প্রস্তুতিটা ভালো হয়েছে। তাই আশাবাদী ছিলাম স্বর্ণ পারো।
সিনিয়র দিপু যেবার প্রথম স্বর্ণ পান সে বছরই জাতীয় কুস্তিতে আগমন জুনিয়র দিপুর। জুনিয়র দিপুও সেই বছর স্বর্ণ পান। এরপর টানা স্বর্ণ জিতে আসছেন। মাঝে ২০২৩ সালে প্রথম হতে পারেননি। রৌপ্যতে সন্তুষ্টি খুঁজতে হয়। মোহাম্মদ দিপু জানান, আমি সেই ২০১২ সাল থেকেই টানা স্বর্ণ জিতে আসছে। শুধু গত বছর সেনাবাহিনীর প্রতিপক্ষের কাছে হারতে হয়েছিল। আর ২০১৪ সালে সেরা কুস্তিগীর হয়েছিলাম।
২০১৩ সালে দু’জনের প্রথম পরিচয়। এরপর হৃদ্যতা। সিনিয়র দিপুকে উদ্দেশ করে মোহাম্মদ দিপু বলেন, দাদা দারুণ এক মানুষ। যেমন বড় ভাই। তেমনি সিনিয়রদের মধ্যে সেরা। দারুণ উনার ব্যবহার। দুই দিপুর আরেকটি মিল, উভয়ের কেউই এসএ গেমসে পদক জিততে পারেননি। নেই আন্তর্জাতিক পদকও।
দিপু চন্দ্র রায় ২০১৪ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমস এবং ২০১৮ সালে আজারবাইজানের বাকুতে হওয়া ইসলামী সলিডারিটি গেমসে অংশ নেন।
মোহাম্মদ দিপু ২০১৩ সালে থাইল্যান্ড বীচ কুস্তিতে অংশ নিয়েছেন। ২০২২ সালে তুরস্কের কোনিয়ায় হওয়া ইসলামী সলিডারিটি গেমস দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এ ছাড়া ২০১৬ সালের এসএ গেমসের অংশ নেন। ২০১৬ সালে ইরানেও যান টুর্নামেন্ট খেলতে। সিনিয়র দিপুর অবশ্য সুযোগ হয়নি এসএ গেমসে খেলার।
ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসে জাতীয় কুস্তিতে তৃতীয় স্বর্ণ। দিপু চন্দ্রের মতে, আমাদের খেলার পাশাপাশি সীমান্ত রক্ষার কাজ করতে হয় দেশের স্বার্থে। এর পরও আমাদের প্রতিষ্ঠান বিজিবির ঐকান্তিক চেষ্টায় আমরা খেলে যাচ্ছি ও সাফল্য পাচ্ছি।
বয়স হয়ে গেছে সিনিয়র দিপুর। খেলছেন বাহিনীর স্বার্থে। তবে এখনো টগবগে যুবক মোহাম্মদ দিপু। টানা সাফল্যে তার কাছে এসএ গেমসে স্বর্ণের দাবি সবার। এ ক্ষেত্রে দিপুর জবাব, আমরা যে খেলে পদক জিতছি এটাই তো অনেক। আমাদের ফেডারেশনের তো নিজস্ব কোনো ভেনুই নেই। এসএ গেমসে ভালো করতে হলে বিদেশী কোচ এবং দেশের বাইরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা