০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, empty
`

১৮ বছর পর কেন এই বিতর্ক?

সন্দেহে সাকিবের এই বোলিং অ্যাকশন -

বিস্ময়ই জন্ম নিয়েছে গত দু’দিনে। ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই প্রথম শোনা গেল সাকিব আল হাসানের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ। গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের পাকিস্তান ও ভারত সফরের মাঝখানে কাউন্টি ক্রিকেটে সারের হয়ে খেলার সময় সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্রিকেটে এমন ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন বোলারের অ্যাকশন নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে। নিষিদ্ধও হয়েছিলেন কয়েকজন। পরে বোলিং অ্যাকশন শুধরে বোলিং করার অনুমতি পেয়েছেন তারা। তবে এত বছর পর সাকিবই প্রথম।
ওয়ানডে অভিষেকের পরপরই ২০০১ সালে জানুয়ারিতে বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হয় মোহাম্মদ রফিক ও নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের। আইসিসি জানায়, ২০০০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে ভারতের বিপক্ষে এই দুই বোলারের বোলিং অ্যাকশন সন্দেহজনক ছিল। তবে আইসিসি তাদেরকে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। আইসিসির বিধিমালা মেনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নিয়োগ দেয়া বোলিং বিশেষজ্ঞরা তাদের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে ছয় সপ্তাহ কাজ করেন।
২০০৪ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে অভিষেকের পরই বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হয় আবদুর রাজ্জাকের। সতর্ক করে দিয়ে তাকে অবশ্য খেলা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। চার বছর পর আর সেই সুযোগ পাননি রাজ্জাক। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আবার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হন রাজ্জাক। পরীক্ষা দিয়ে চার মাস পর ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ফেরার অনুমতি পান এই বাঁহাতি স্পিনার।
২০১৪ সালে বাংলাদেশের আরো দুই বোলারের বোলিং নিয়ে প্রশ্ন তোলে আইসিসি। অফ স্পিনার সোহাগ গাজী ও পেসার আল আমিন হোসেনকে নিষিদ্ধ করে আইসিসি। দু’বার অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়ে ফেরার অনুমতি পান দু’জনই।

২০১৬ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে ধর্মশালায় বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস প্রথম পর্বের ম্যাচটির পর পেসার তাসকিন আহমেদ ও বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশনকে অবৈধ ঘোষণা করে আইসিসি নিষিদ্ধ করে দু’জনকে। সানির অ্যাকশন নিয়ে আগে থেকেই আলোচনা ছিল। তবে পেসার তাসকিনের অ্যাকশনও অবৈধ হওয়াটা ছিল বিস্ময়। সন্দেহভাজন হওয়ায় বিশ্বকাপ চলাকালেই চেন্নাইয়ে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন দু’জনেই। সেখানেও তাদের অ্যাকশন অবৈধ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় তাদের। ছয় মাস পর সেপ্টেম্বরে পরীক্ষায় পাস করে আবারো বোলিংয়ের অনুমতি পান তারা। যেটিকে ক্রিকেট ভক্তরা ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছিলেন।
৭১টি টেস্ট, ২৪৭টি ওয়ানডে, ১২৯টি টি-২০। দুনিয়ার সব বড় বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেছেন। কোথাও কেউ কোনো দিন সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কিঞ্চিৎ সন্দেহও প্রকাশ করেনি। তার দুই গুরু নাজমুল আবেদীন ফাহিম এবং মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের অভিজ্ঞতাতেই নেই, সাকিব কোনোকালে বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সমস্যায় ভুগেছেন। ইংল্যান্ডে যে সমস্যায় পড়েছেন, সেটাকেও গুরুতর কিছু বলে মনে করছেন না ফাহিম ও সালাউদ্দিন। ফাহিমের বিশ্বাস, ‘হাত কনুই বাঁকানোর গ্রহণযোগ্য সীমা অতিক্রম করবে না, তারপরও এতে কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকা হবে বলে আমার মনে হয় না। পরীক্ষা দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটা বড় কোনো সমস্যা নয়। এমন নয় যে, এখন আর কোথাও সে বোলিং করতে পারবে না। শুধু ইসিবির অধীন খেলায় বোলিংটা বন্ধ রাখতে হবে। অন্য সব জায়গাতেই সে বোলিং করতে পারবে।’


আরো সংবাদ



premium cement