৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

সব বিতর্ক ছাড়িয়ে ট্রফি জয়

বাংলাদেশের পক্ষে শিরোপা নিশ্চিত করা গোলের পর রিতুপর্না চাকমা (১৭)। গোল দিয়ে রিতু নেপালি দর্শকদের চুপ থাকতে বললেন। তার সাথে তহুরা খাতুন, দুই শামসুন্নাহার ও মারিয়া মান্ডারা : বাফুফে -


অনেক বাধাবিপত্তি, অনেক প্রতিকূলতাই ছিল। নতুন কোচ, দলীয় কোন্দলের মতো অদৃশ্য চ্যালেঞ্জ। তবে কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি সাবিনা খাতুনদের শিরোপা জেতার সামনে। নেপালকে তাদের মাটিতেই হাতাশার সাগরে ডুবিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট নিজেদের কাছেই রেখে দিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। সব প্রতিবন্ধকতাকে ফুৎকার দিয়ে উড়িয়ে ২-১ গোলে জয়ের আনন্দে ভেসেছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। টানা দুইবার সাফ জয়ের মধুর স্বাদ পাওয়া হয়ে গেল সাবিনাদের।
নেপালের দশরথ স্টোডিয়ামের এই মাঠেই আগেরবার একই প্রতিপক্ষেকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার ফাইনাল জয়ের নায়করা ছিলেন না এবার। ডাগ আউটে কোচ ছোটনের পরিবর্তে ইংলিশ কোচ বাটলারের উপস্থিতি। জোড়া গোল করা স্বপ্না ছেড়ে দিয়েছেন ফুটবলই। অন্য দিকে কৃষ্ণা রানী সরকার ভুগছেন চোটে। দু’জনই ছিলেন আক্রমণভাগের মধ্যমণি। কিন্তু গতকালের ফাইনালে কোনো ফরোয়ার্ড নয় জয়ের নায়ক ছিল মিডফিল্ডাররা। ৫১ মিনিটে নেপালের জালে প্রথম বল জড়ান মনিকা চাকমা। এরপর দলের জয়সূচক গোলটি করেন রিতুপর্ণা চাকমা। তা ৮০ মিনিটে। মাঝমাঠের দুই তারকা কাঁধে চড়েই শিরোপা ধরে রাখে বাংলাদেশ।

মিডফিল্ডারদের গোল থেকে জয় পাওয়া দলের গোল করতে পারা ফুটবলারদের গভীরতাই প্রকাশ পায়। ফরোয়ার্ডদের ওপর অতি নির্ভরশীল না হয়ে দলীয় প্রচেষ্টায় যে ম্যাচ জেতা সেটা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন রিতুপর্ণা চাকমারা। পুরো টুর্নামেন্টে দূরপাল্লার শটে গোলের চেষ্টা করেন রিতুপর্ণা। ভুটানের বিপক্ষে সফল হওয়ার পর কাল ফাইনালের মতো মঞ্চেও সফল। ভারতের বিপক্ষেও ম্যাচে একাধিকবার ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে বল জালে পাঠানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন। এই মিডফিল্ডারের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল সফল তিনি হবেনই। ৮০ মিনিটে দেখা মিলল সেই তীব্র কাক্সিক্ষত সফলতার। নেপালের বক্স থেকে অনেকটাই দূর থেকে ক্রস করেছিলেন ঋতুপর্ণা। তার সেই শট প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের হাতে লেগে জালে চলে যায়। এরই সাথে এগিয়ে যাওয়ার উচ্ছ্বাসে ভেসে যায় বাংলাদেশ।
সেমিফাইনালের পর কোচ বাটলার বলেছিলেন নিজের দলের এবং পরিবারের জন্য খেলতে। মাঠের ভেতর এবং বাইরের চ্যালেঞ্জ উত্তরিয়ে সাবিনারা ওই মন্ত্রণা নিয়েই হয়তো সবার আগে দলের জয়কে প্রাধান্য দিয়েছিলেন বলেই টানা দুই ফাইনাল জয়ের আনন্দে ভাসতে পেরেছে বাংলাদেশ।
সব বিতর্ক এবং নেপালি প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে বাংলাদেশের এই জয় বাফুফের নতুন কমিটির জন্য দারুণ এক উপহার। এখন নতুন কমিটি তাদের কি পুরস্কার দেন- সেটিই দেখার বিষয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement