০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

দেশের হকিতে হচ্ছেটা কী

-


হকিতে মুখোমুখি অবস্থান নেয়া নতুন কিছু নয়। প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে থাকে। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের জন্য গঠিত হয়েছে সার্চ কমিটি। এই কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ দিকে সার্চ কমিটি নিয়ে প্রথমে সমালোচনা শুরু হয় আহ্বায়ক জোবায়েদুর রহমান রানাকে নিয়ে। তার সময়েই ব্যাডমিন্টনে যত অপকর্ম হয়েছে অন্য কোনো আমলে তার অর্ধেক কিংবা সিকি অংশও হয়নি। পরে অবশ্য ব্যাডমিন্টনে নির্বাচিত সহসভাপতির পদে ইস্তফা দিয়েছেন। পরে বিতর্ক ওঠে সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ বুলবুলকে নিয়ে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় পরে বুলবুলকে কমিটি থেকে বাদ দিয়ে নতুন সদস্য নিয়েছে। এবার সার্চ কমিটির সদস্য মেজর (অব:) ইমরোজ আহমেদকে নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে হকির সাবেক খেলোয়াড়রা। আজ বেলা ৩টায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামনে ফের বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি।

মাঠ ও মাঠের বাইরে গণ্ডগোল কিছুতেই এড়াতে পারছে না বাংলাদেশ হকি। মাঠে খেলা চলাকালে হট্টগোল দেখা যায় নিয়মিত। মাঠের বাইরেও বরাবর আলোচনায় থাকে খেলাটি। ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারে গঠিত সার্চ কমিটি ইস্যুতে এবার আলোচনায় হকি। সাবেক হকি খেলোয়াড়দের একটি পক্ষ ইমরোজের বিপক্ষে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে তার অপসারণ চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বরাবর। তারা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামনে প্রতিবাদ সভাও করেছে। পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে সাবেক খেলোয়াড়দের আরেকটি পক্ষ গতকাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামনে প্রতিবাদ সভা করেছে। তাদের দাবি সার্চ কমিটির সদস্য ইমরোজ আহমেদের বিপক্ষে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে।
এ দিকে সার্চ কমিটির আহ্বায়ক জোবায়েদুর রহমান রানা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইমরোজ সবার আগে একজন খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি যোগ্য লোক হিসেবে সার্চ কমিটিতে আছেন। তার প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়ের আগে তিনি একজন সাবেক খেলোয়াড়। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে আমরা সেটা নিয়ে আলোচনা করব। যে কেউ-ই প্রতিবাদ করতে পারেন। তবে প্রতিবাদ কিংবা অভিযোগের ভাষা হতে হবে মার্জিত।’

সাবেক হকি খেলোয়াড় এবং সার্চ কমিটির অন্যতম সদস্য মেজর (অব:) ইমরোজ আহমেদকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন মোহামেডান ক্লাবের সাবেক-বর্তমান হকি খেলোয়াড়রা। গত ৩ অক্টোবর দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামনে সার্চ কমিটি থেকে ইমরোজ আহমেদের অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে। হকি খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সভাপতি, সাবেক হকি খেলোয়াড় এবং সংশ্লিষ্টরা এ মানববন্ধন করেছেন। ক্রীড়া উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে। তাদের দাবি, সম্প্রতি সার্চ কমিটি হকি সংক্রান্ত সভায় কয়েকজনকে ডেকেছেন, যা আমাদের কাছে পক্ষপাতমূলক মনে হয়েছে। এজন্য আমরা অভিযোগ করছি। মোহামেডান ও আবাহনীর কোনো কর্মকর্তাকে সভায় ডাকা হয়নি। তা ছাড়া নিয়ম অনুযায়ী বাহফে যুগ্ম সম্পাদক আরিফুল হক প্রিন্স চিঠি পাওয়ার কথা। অন্যান্য ফেডারেশনে সাধারণ সম্পাদক সার্চ কমিটির ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী খেলোয়াড়-সংগঠকদের নিয়ে সভায় উপস্থিত থাকেন। তাহলে হকিতে কেন ব্যতিক্রম হবে। মোহামেডান কেন ডাক পাবে না- এটাতেই প্রমাণিত হয়ে সার্চ কমিটি একটা পক্ষকে সুবিধা দিচ্ছে।

হকির লিজেন্ডারি প্লেয়ার রফিকুল ইসলাম কামাল সার্চ কমিটির সভায় ডাক পেয়েছিলেন বাহফে সভাপতির প্রতিনিধির অনুরোধে। তিনি জানান, ‘সার্চ কমিটি কি প্রক্রিয়ায় ডেকেছে সেটি আমি জানিনা তবে সভাপতির প্রতিনিধির অনুরোধে সভায় গিয়েছিলাম। সেখানে উন্নতি কল্পে কথা হয়েছে, কোনোরকম কমিটির আলোচনা হয়নি। তবে সেখানে আবাহনী ও মোহামেডানের কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না।’
গতকালের প্রতিবাদ সভা নিয়ে কামাল জানান, ‘হকি যখনই একটা ভালো দিকে যেতে চায় তখনই কোনো না কোনো বাধার উদ্রেক হয়। সার্চ কমিটি যখন হকিকে ঢেলে সাজানোর একটা ছক কষছে তখনই একটা গ্রুপ সার্চ কমিটির সদস্য মেজর ইমরোজের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যারা রূপরেখা দাঁড় করাবে তাদেরই যদি প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় তাহলে কিভাবে এগোবে হকি। যে কারণে আমরা শতাধিক সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড় প্রতিবাদ করেছি।’
জোবায়দুর রহমান রানা জানান, ‘চিঠি তো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে ইস্যু হয়। তারা ফেডারেশনে চিঠি দেয় সে মোতাবেক তারা আসেন। আমরা তো এখানে কমিটি করছি না। ফেডারেশনের গঠনতন্ত্র নিয়ে কারো যদি কোনো কথা থাকে সেটি শুনি। পজিটিভ দিকগুলো বিবেচনায় নিচ্ছে সার্চ কমিটি। এখন কে এলো আর কে এলো না সেটি তো আমাদের এখতিয়ার না।’

 


আরো সংবাদ



premium cement