০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ২ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

সিরিজ জেতাই লক্ষ্য টাইগারদের

বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের প্রথম টি-২০ আজ
অনুশীলনের ফাঁকে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত’র সাথে কথা বলছেন কোচ চন্দ্রিকা হাথুরুসিংহে : বিসিবি -


২০১৯ সালের সর্বশেষ সফরে টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ভারতকে হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ১৪ টি-২০ খেলে এই একটি ম্যাচেই বাংলাদেশ জয় পেয়েছে। এবার সামনে আরেকটি টি-২০ সিরিজ। গোয়ালিয়রে শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের প্রথম টি-২০। এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের ব্যাটার তৌহিদ হৃদয় জানিয়েছেন সিরিজের শুরুতেই ধামাকা দেখানোর কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। তবে সিরিজ জেতার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
গতকাল গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে হৃদয় বলেছেন, ‘ধামাকা বা এ রকম কিছু মাথায় নেই সত্য কথা। যেটা আগেও বললাম অবশ্যই আমরা ইন্টেন্ট নিয়ে খেলব। আমাদের চেষ্টা থাকবে যাতে সিরিজটা জিততে পারি, ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। এটাই, আমরা ওই রকম চিন্তা-ভাবনা করছি না। ম্যাচ কিভাবে ভালো করা যায় সেটা চিন্তা করছি।’

২০০৭ বিশ্বকাপে ডাউন দ্য উইকেটে এসে জহির খানকে ছক্কা মেরে তারকা বনে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। ভারতের বিপক্ষে ভালো খেলে জনপ্রিয় হয়েছেন মুশফিকুর রহিম, সাকিবরাও। ভারত সিরিজে এমন সুযোগ থাকছে হৃদয়েরও। তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে ভালো করতে পারলে তারকা হয়ে উঠতে পারেন তিনি। হৃদয় অবশ্য এসব নিয়ে ভাবছেন না। আপাতত ভালো পারফর্ম করতে চান তরুণ এই ব্যাটার। ‘সুপারস্টার তৈরি হওয়ার বিষয়টা আমি বলতে পারব না। এটা সময়ই বলে দেবে। দিন শেষে আগে পারফর্ম করাটা ম্যাটার করে। পারফর্ম যদি করি, দলের রেজাল্ট যদি ভালো হয়, দেখা যাবে এখান থেকেই ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে আসবে অনেকেই; আসার সম্ভাবনা আছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম ছাড়া আসলে আলটিমেটলি কোনো কিছু চিন্তা করা যায় না। সবাই পারফর্ম করতে চায় এবং চেষ্টা করব ভালো কিছু করতে।’
ঘরের মাঠে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে সাদা পোশাকের জার্সি তুলে রাখতে চেয়েছেন তারকা অলরাউন্ডার সাকিব। নিরাপত্তার সমস্যা কাটিয়ে সাকিব দেশে ফিরতে পারবেন কি না তা এখন নিশ্চিত নয়। যদিও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সব ধরনের নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সাউথ আফ্রিকা সিরিজ দিয়ে টেস্টকে বিদায় বলার কথা থাকলেও টি-২০তে নিজের শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন সাকিব। সবশেষ টি-২০ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুপার এইটের ম্যাচটিই বাংলাদেশের হয়ে তার ২০ ওভারের ক্রিকেটের শেষ ম্যাচ বলে নিশ্চিত করেছেন। যার ফলে সাকিবকে ছাড়াই টি-২০র চ্যালেঞ্জ নিতে হবে বাংলাদেশকে।

সাকিব না খেললে একজন বাড়তি ব্যাটার কিংবা বাড়তি বোলার নিয়ে খেলতে হয়। অনেক বছর থেকেই এই চর্চা বাংলাদেশের ক্রিকেটে। আগে তা মাঝেমধ্যে হলেও এখন এটা হবে নিয়মিত। এরমধ্যেই টি-২০ ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ভারত সিরিজে তাই সাকিবের শূন্যতা পূরণও বড় চ্যালেঞ্জ টাইগারদের জন্য। সাকিবের বিকল্প হিসেবে আরেক স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকে নেয়া হয়েছে। কিন্তু সাকিবের অভাব পূরণ করা মিরাজের জন্য অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে।
সাকিবকে ছাড়া খেলার চাপটা কেমন তা জানতে চাওয়া হয় এই তরুণের কাছে। উত্তরে হৃদয় বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চাপ সব সময়ই থাকে। যদি সেটা মাথায় থাকে তাহলে তো পারফর্ম করা যাবে না। আমাদের প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে, ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। আর সাকিব ভাই নেই। অবশ্যই আমরা সাকিব ভাইকে মিস করব। কিন্তু এখান থেকে এক দিন না এক দিন সবাইকে যেতেই হবে। আশা করি, আমরা সাকিব ভাইয়ের শূন্যতা ভালোভাবে পূরণ করব।’
সাকিবকে ছাড়াই এই সিরিজে ভালো করার প্রত্যয় এই তরুণের, ‘আমরা এখানে আসার আগে বেশির ভাগ ক্রিকেটারই দেশে অনুশীলন করেছি। আশা করছি আমরা ভালো করব। এখানকার গরম আমাদের জন্য তেমন দুশ্চিন্তার বিষয় নয়। আমরা এই গরমে খেলে অভ্যস্ত। বাংলাদেশেও একই আবহাওয়া। এখানে আমাদের খুব ভালো সুযোগ আছে পারফর্ম করার। আমরা অবশ্যই জিততে চাইব। এটাই আর কিছু নয়।’

সাকিব না থাকায় টাইগার ব্যাটারদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে হৃদয়কেও আরো ওপরে ব্যাট করতে দেখা যেতে পারে। নিজের পছন্দের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে খোলাসা না করলেও বাংলাদেশের এই ব্যাটার অবশ্য জানিয়েছেন যেখানেই ব্যাটিংয়ের সুযোগ হোক না কেন অবদান রাখার চেষ্টা করবেন তিনি। ‘এটা আমি বলতে চাচ্ছি না (পছন্দের ব্যাটিং পজিশন)। আমি মনে করি দল যখন যেখানে আমাকে নামাবে ওইখানেই অবদান রাখার চেষ্টা করি। সেটা ফিল্ডিং, ব্যাটিং, যেভাবেই হোক আমি চাই দলের জন্য অবদান রাখতে।’
সাকিবের অবসর পরবর্তী সময়ে প্রথমবারের খেলতে নামবেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। হৃদয় জানিয়েছেন, সাকিবকে তারা মিস করবেন। তবে অলরাউন্ডার সাকিবের শূন্যতা পূরণের আশা ব্যক্ত করেছেন তরুণ এই ব্যাটার। ‘আমাদের প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে, ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। আশা করি, আমরা সাকিব ভাইয়ের শূন্যতা ভালোভাবে পূরণ করব।’

টি-২০তে বাংলাদেশ দলের মিডল অর্ডারের অন্যতম ভরসা এখন তৌহিদ হৃদয়। অভিষেকেই যিনি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৯২ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেছিলেন। মাঝে কিছুটা ছন্দপতন ঘটলেও হৃদয় ফিরেছেন নিজের সেরা ছন্দে। তার কাছে দলের যেমন প্রত্যাশা, তেমনি দলের প্রতি রয়েছে তার দায়িত্বও। ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটার জানালেন, এবার তার লক্ষ্য দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাওয়া। ‘আমরা এখানে খেলার সুযোগ পাচ্ছি, এটা আমাদের জন্য বড় ব্যাপার। আমি জয়ের জন্য মুখিয়ে আছি। দেশে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি এবং আশা করছি, এখানে সফল হবো।’
ভারতের মাঠে টি-২০ ম্যাচগুলো সাধারণত হাই-স্কোরিং হয়ে থাকে। এ বছরের আইপিএলে গড় রান ছিল প্রায় ২০০-এর কাছাকাছি। গোয়ালিয়রের নবনির্মিত সিন্ধিয়া স্টেডিয়ামেও কি তেমনই কোনো হাই-স্কোরিং ম্যাচ হবে? এ প্রশ্নের জবাবে হৃদয় বলেন, ‘জানতাম এখানে ঘরোয়া লিগে দুই শর ওপর রান হয়েছে। তবে ঘরোয়া ম্যাচ আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ এক নয়। আমরা ম্যাচের উইকেটের চরিত্র অনুযায়ী মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব এবং দলীয় পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলব। এখানে দুই দিন অনুশীলন করেছি। উইকেট সেøা এবং লো। আমরা এখানে গ্রাউন্ড স্টাফদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছি। এটি একটি ধীর উইকেট হবে তবে আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব।’

 


আরো সংবাদ



premium cement