০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

দেড় সেশন আগেই হার বাংলাদেশের

বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইনের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে ৩ উইকেট নেন রবীন্দ্র জাদেজা। এই স্পিনারকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন রোহিত শর্মা : ক্রিকইনফো -


বৃষ্টিতে ভেসে গেছে প্রায় আড়াই দিনের মতো। প্রথম চার দিন মিলিয়ে খেলা হয়েছে মাত্র ১২০ ওভার। তবুও ম্যাচটি সাত উইকেটে জিতল ভারত। শেষ দিনে কিছুটা কঠিন পরীক্ষা দিলো বাংলাদেশ। দুই উইকেটে ২৬ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করে প্রথম সেশন ব্যাটিং করে ১৪৬ রানে অলআউট হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সাদমান ইসলাম, শান্ত এবং মুশফিকুর রহিম ছাড়া এ দিন লড়তে পারেননি কেউই। ভারতকে ৯৫ রানের লক্ষ্য দেয় দলটি। সহজেই সেই লক্ষ্য তাড়া করে ভারত। ফলে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ।
প্রথম দিনে খেলা হয়েছে মাত্র ৩৫ ওভার। পরের দুই দিন তো বল মাঠেই গড়ায়নি। এমন অবস্থায়কে ভেবেছিল এমন ম্যাচেও ফলাফল আসবে? কিন্তু কাজটা সহজ করে দেয় বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ফলাফল আনার প্রাণপণ চেষ্টায় একের পর এক বাজে শটে উইকেট দিলেন বিলিয়ে। তাতে উল্টো এক সেশন হাতে রেখেই জয় তুলে নিল ভারত। গতকাল কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ৭ উইকেটে জয় পেয়েছে ভারত। বাংলাদেশের দেয়া ৯৫ রানের লক্ষ্য ১৭.২ ওভারেই করে ফেলে দলটি। দিনের খেলা তখনও বাকি ছিল ৪৪.৪ ওভার।
হারের শঙ্কাটা চতুর্থ দিনেই জাগায় টাইগার ব্যাটাররা। দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় ভারতীয়রা। একাধিক রেকর্ড গড়ে দারুণ শুরু করে দলটি। পরে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও আগ্রাসন থামেনি। ৯ উইকেটে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা।

চতুর্থ দিনের শেষ বেলাতে দু’টি উইকেট তুলে ইঙ্গিত দিয়ে রাখে ভারত। তাই শেষ দিনে ম্যাচ বাঁচাতে টাইগার ব্যাটারদের প্রয়োজন ছিল মাটি কামড়ে পড়ে থাকা। কিন্তু তা না করে নিয়মিত শট খেলতে থাকেন তারা। রিভার্স সুইপের মতো বিপজ্জনক শট খেলতে পিছ পা হননি। তাতে পড়েছে নিয়মিত উইকেটও। ফলে মাত্র ৯৪ রানের লিড নিতে পারে বাংলাদেশ। সে লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই আগ্রাসী ভারত। বিশেষ করে জয়সওয়াল ছিলেন দুর্দান্ত। ৪৫ বলে ৫১ রান করে জয় থেকে তিন রান বাকি থাকতে তাইজুল ইসলামের শিকার হন এই ব্যাটার। ৪৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করা এই ওপেনার নিজের ইনিংস সাজিয়েছেন ৮টি চার ও ১টি ছক্কায়। বিরাট কোহলি অপরাজিত থাকেন ২৯ রানে।

মাঝে ভারতীয় শিবিরে জোড়া ধাক্কা দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগ সীমানায় হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা (৮)। আর শুবমান গিলকে (৬) ফেলেছেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে। কোহলির বিপক্ষেও অবশ্য এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউতে ইমপ্যাক্ট বাইরে থাকায় বেঁচে যান এই ব্যাটার।
কানপুরে এর আগে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে শুরু থেকে দাপট দেখায় ভারতের বোলাররা। পঞ্চম দিনের প্রথম ওভারে লেগ স্লিপ রাখেননি রোহিত শর্মা। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সেই ওভারে পাঁচ রান নেয় বাংলাদেশ। বুমরাহর করা দ্বিতীয় ওভারেও পাঁচ রান নেয় বাংলাদেশ। মুমিনুলের জন্য অশ্বিনের করা দ্বিতীয় ওভারে লেগ স্লিপ রাখেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। দিনের তৃতীয় ওভারে পছন্দের সুইপ শট খেলতে গিয়ে মুমিনুল ধরা পড়েন সেখানেই। দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন লোকেশ রাহুল। দুই রান করে ফিরেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল।
এরপর বেশ ইতিবাচকভাবেই খেলছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সাথে ছিলেন সাদমান ইসলাম। এই দুজনের ব্যাটে লিড পায় বাংলাদেশ। কিন্তু সাদমানের সাথে ৫৫ রানের জুটি গড়ার পর ফিরে যেতে হয় বাংলাদেশের অধিনায়ককে। শেষ দিনে রবীন্দ্র জাদেজার করা প্রথম ওভারে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হওয়ার আগে ১৯ রান করেন শান্ত। শান্ত ফেরার ওভারেই হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন সাদমান। যদিও ভারতের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশী ওপেনার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করার পর বেশীক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি তিনি। ১০১ বলে ৫০ রান আসে তার ব্যাটে। হাফসেঞ্চুরির পর আকাশ দীপের পরের ওভারে অফ সাইডের অনেক বাইরের বল খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সাদমান। দারুণভাবে ক্যাচটি নেন জয়সাওয়াল।

৯১ রানে চতুর্থ উইকেট হারানো বাংলাদেশ সপ্তম উইকেট হারায় ৯৪ রানে। শেষ দিনে নিজের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট নেন জাদেজা। শেষ বলে লিটন দাসকে ফেরান এই অলরাউন্ডার। তার বাউন্স করা দ্রুতগতির বলটি লিটনের গ্লাভসে লেগে উইকেটরক্ষক রিশভ পান্তের মুঠোয় চলে যায়। ফেরার আগে আট বলে এক রান করেন লিটন। নিজের তৃতীয় ওভারে আবারো উইকেট নেন জাদেজা। সাকিব আল হাসানকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে বিদায় করেন জাদেজা। শূন্য রানে ফিরেন সাকিব। মাত্র তিন রানের ব্যবধানে চার উইকেট হারিয়ে মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। দলীয় শতরান পার করান এই দু’জন।
এরপর অবশ্য জসপ্রীত বুমরাহর ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশ। দারুণ এক ডেলিভারিতে মিরাজকে ফেরান তিনি। বুমরাহর বলে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক পান্তের কাছে ক্যাচ দেন ১৭ বলে ৯ রান করা মিরাজ। একটু পর তাইজুল ইসলামকেও ফেরান বুমরাহ। তাকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন। শেষ উইকেট হিসেবে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। ৬৩ বলে ৩৭ রান করে বুমরাহর বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ভারতের হয়ে বুমরাহ ১৭ রানে, জাদেজা ৩৪ রানে এবং অশ্বিন ৫০ রানে তিনটি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)-২৩৩/১০ (৭৪.২ ওভার) (জাকির ০, সাদমান ২৪, মুমিনুল ১০৭*, শান্ত ৩১, মুশফিক ১১, লিটন ১৩, সাকিব ৯, মিরাজ ২০)
ভারত (প্রথম ইনিংস)-২৮৫/৯ (৩৪.৪ ওভার) (জায়সাওয়াল ৭২, রোহিত ২৩, গিল ৩৯, পান্ত ৯, কোহলি ৪৭, রাহুল ৬৮, মিরাজ ৪/৪১, সাকিব ৪/৭৮) (ডি:)
বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ১৪৬/১০ (৪৭ ওভার) (সাদমান ৫০, মুশফিক ৩৭, শান্ত ১৯, বুমরাহ ৩/১৭, জাদেজা ৩/৩৪)
ভারত (দ্বিতীয় ইনিংস) (লক্ষ্য ৯৫ রান)- ৯৮/৩ (১৭.২ ওভার) (রোহিত ৮, জয়সাওয়াল ৫১, গিল ৬, কোহলি ২৯*, পান্ত ৪*)


আরো সংবাদ



premium cement
ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি কারাগারে কেমন আছেন ‘ভিআইপি’ বন্দীরা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান সংস্কারের পরই নির্বাচনী রোডম্যাপ নির্ধারণ হবে এমডির সহযোগিতায় ৭৫ কোটি টাকা লোপাট : পর্ষদ ভেঙে দেয়ার দাবি ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যার পানি কমলেও বাড়ছে ভাঙন রেমিট্যান্সে সেপ্টেম্বরে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি ৮০.২১ শতাংশ ‘ন্যায্যতাই’ কেবল বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক টেকসই করবে বিক্ষোভকারীদের ওপর ক্র্যাকডাউনে জড়িতদের জবাবদিহি করতে হবে : মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর

সকল