১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

পাফার ফিশ

-

পাফার ফিশ। বিশ্বখ্যাত বিষাক্ত মাছ। বাংলাদেশে এটি পটকা মাছ বা বেলুন মাছ নামে বেশ পরিচিত। পাফার ফিশ বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে। বিশ্বজুড়ে শতাধিক প্রজাতির পাফার ফিশ রয়েছে। এ মাছের কিছু প্রজাতি বিষাক্ত। বাংলাদেশে তিন প্রজাতির পটকা মাছ আছে- সবুজ পটকা, গঙ্গার পটকা ও দাগফুটকি পটকা। পাফার ফিশ মিঠাপানি, নোনাপানি উভয়ই পরিবেশে বসবাস করে। বেশির ভাগ পাফার ফিশ উজ্জ্বল রঙের হয়। রোমান্টিক এ মাছের পুরুষ প্রজাতি শুধু বৃত্তের বাড়ি করেই সঙ্গীর মন পায় না। বাড়িগুলো সঙ্গীর পছন্দমতো হতে হয়। ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা হয়। বাচ্চা জন্মালে বাবা পাফার ফিশ বাচ্চা দেখাশোনা করে। আর মা পাফার ফিশ খাবারের সন্ধানে ছুটে বেড়ায়।
পাফার ফিশ যখন দেহ ফোলায় তখন ত্বক, অন্ত্র ও ডিম্বাশয় থেকে একধরনের রাসায়নিক উপাদান নিঃসৃত হয়। এই রাসায়নিক উপাদানের নাম হলো টেট্রাডক্সিন। এটি একধরনের নিউরোটক্সিন প্রকৃতির বিষ; যা ভয়ঙ্কর বিষাক্ত সায়ানাইডের চেয়েও এক হাজার ২০০ গুণ বেশি শক্তিশালী। একটি পাফার ফিশই যথেষ্ট প্রায় ৩০ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর জন্য।
কোনো মানুষ জেনে বা না জেনে যদি এ বিষে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে তার জিহ্বা ও ঠোঁট নিস্তেজ হয়ে পড়ে। প্রচণ্ড বমি হয়। হৃদযন্ত্র ও শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয়। পেশি অবশ হয়ে পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তি সর্বনিম্ন চার ঘণ্টা ও সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
যেহেতু পাফার ফিশের মারাত্মক বিষ ধারণের ক্ষমতা রয়েছে, সেহেতু রান্নার আগে এই মাছকে বিশেষ নিয়মে পরিষ্কার করা হয়। তাই এ মাছের রন্ধনপ্রণালীও অন্যান্য মাছের তুলনায় সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তবে নিয়ম মেনে রান্না না করে খেলে নির্ঘাত মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। জাপান, কোরিয়া ও চীনে পাফার ফিশ খুবই জনপ্রিয়। এই মাছ খেয়ে জাপান, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন, মেক্সিকো ও তাইওয়ানে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। যদি ও সে সংখ্যা এখন হাতেগোনা। কারণ এখন তাদের রয়েছে প্রশিক্ষিত শেফ। এসব শেফ জানে পাফার ফিশের ঠিক কোথায় বিষ থাকে এবং কিভাবে এ বিষ অপসারণ করতে হয়।


আরো সংবাদ



premium cement