১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মা-হারা শালিক ছানা

মা-হারা শালিক ছানা -

বেশ কিছুদিন হয় শালিক ছানাটির মা মারা গেছে। এখনো তেমনভাবে নিজের খাবার নিজেই তুলে খেতে পারে না। মুখে তুলে দিতে হয়। কত কষ্ট একা, একা থাকে। কেউ দেখতে পারে না। যেখানেই যায় সবাই তাকে তাড়িয়ে দেয়। সবাই তাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে। বনের মধ্যে ওদের সাথেও তাকে ঘুমাতেও দেয় না। জঙ্গলের ভেতরে মশার কামড় খেয়ে রাতটা কষ্ট করে কেটে গেল তার বনে। ভোরবেলা সূর্যি মামা ওঠার আগেই কেউ যেন তাকে দেখতে না পায় সে খাবারের খোঁজে চলে গেল একটি নদীর তীরে। তবে মহাবিপদে পড়ে গেল। দু’টি জলহস্তী ও তিনটি কুমির এবং পাঁচটি সাপ তাকে ঘিরে ফেলল। খাবার সংগ্রহ করে এসব দেখেই ভয় পেয়ে বাঁচাও, বাঁচাও বলে চিৎকার দিলো। বনের সবাই ছুটে এলো। কেউ তাকে বাঁচায় না; বরং খুশি হয়েছে সবাই। হাউমাউ করে কান্না শুরু করল। আজ যদি মা বেঁচে থাকত, অবশ্যই তোমরা আমার জীবন নিয়ে এভাবে খেলা করতে পারতে না। তবুও কেউ তাকে বাঁচাতে আসে না। হঠাৎ করে একটি হাতি এসব দেখে ওখানে গেল। বলল, কী হয়েছে। কেউ কিছু বলে না। শুধু হাসে সবাই। তখন হাতিটি একটি গর্জন দিলো। পুরো বন কেঁপে উঠল। সবার মাথা নিচু হয়ে গেল। শালিক ছানাটি তখন হাতিকে সব কিছু খুলে বলল। হাতি সব শুনে বলে- ওর মা নেই দেখে সবাই ওকে নিয়ে মজা নাও। মজা নিতে, নিতে এমন কিছু হতে যাচ্ছে যা ওর জীবনটাই চলে যাওয়ার পথে। আজ যদি তোমাদের কারো মা মারা যায় বা তোমাদের বাচ্চা মারা যায় তখন তোমাদেরও যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে তোমাদের কেমন লাগবে। এসব শুনে সবাই সচেতন হলো। সবাই বলাবলি শুরু করল, আমরা যা করছি তা ঠিক নয়। সবাই একযোগে বলল, শালিক ছানাটিকে আজ থেকে তুমিও আমাদের সাথে থাকবে। তুমিও আমাদের পরিবারের একজন। হাতিটি তখন বলল, তোমরা সবাই বনে ফিরে যাও এখন তাহলে। ওরা তখন বলে, আমরা ওকেও সাথে নিয়ে যাব। হাতিটি বলল, ওকে আমার পিঠে নিয়ে সমস্ত বন ঘুরে বেড়াব। যাতে আর কেউ ওকে কিছু না বলে।


আরো সংবাদ



premium cement