০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ৮ শাবান ১৪৪৬
`

আগডুম-বাগডুম কবিতাবলি

-

ফুল পাখি প্রজাপতি
এ কে আজাদ

আমাদের ওই বাড়ির পাশে
বাগানটা যে আছে
আলতো শীতের সকালবেলা
গেছিলাম তার কাছে।

নরম নরম শীতের সকাল
লাগছিল যে কেমন!
মৌ মৌ মৌ গন্ধে মাতাল
আকুল হৃদয় যেমন!

ফুলগুলো সব আহা কি যে
রঙের সমাহার
বাগান জোড়া নয়ন ভরা
হরেক ফুলের বাহার!

কোনোটা যে গোলাপি রঙ
কোনোটা যে লাল
কোনোটাতে সাদা, হলুদ
রাঙে গাছের ডাল!

চোখ জুড়ানো রূপ যে এমন
আছে হৃদয় ছুঁয়ে
এই অপরূপ স্রষ্টার প্রতি
আসে মাথা নুয়ে

হঠাৎ দেখি-পুষ্প ঘিরে
কি যেন কি উড়ছে
ফুলের উপর বনবনিয়ে
চক্রাকারে ঘুরছে।

দেখতে পেলাম-মাতোয়ারা
মৌমাছি আর ভোমরা,
বলল ডেকে-এই ছেলেরা!
খেলবে নাকি তোমরা?

দেখছো কেমন ফুল পিন্দেছে
সবুজ পাতার অঙ্গে!
বসন্তে আজ ছেলেমেয়ে
খেলব রে এক সঙ্গে।

ওই যে দেখো পাতার ফাঁকে
পাখিরা গান গায়
ফুলের ওপর খুশির নাচন
প্রজাপতির পায়!

ফুল পাখি আর প্রজাপতির
অবাক সাড়া পেয়ে
আমরা তখন খেলতে নিলাম
পাড়ার ছেলেমেয়ে।


একুশ এলো
শাহজাহান মোহাম্মদ

শীতের পরই উষ্ণ পরশ
লাগল সবার গায়
ঋতুর রানী বসন্ত যে
আলতা রাঙা পায়।

টুকটুকে লাল পলাশ শিমুল
ফুটল সবুজ বনে
তাইতো কোকিল সুর ধরেছে
বাংলা মায়ের সনে।

আলপনাতে রঙের তুলি
বর্ণমালার সাজ
শহীদ ভাইয়ের রক্তে লেখা
একুশ এলো আজ।


ওরে শীত
শাহীন খান

শীতে করি ঠক ঠক
কাশে দাদু খক খক
চৌদিক কুয়াশা ঘেরা
টুপটাপ শিশিরে
ঘোরে মাসী পিসিরে
ঠোঁট ফেটে ছেড়াবেড়া

ঝরা পাতা ঝর ঝর
খোকা কাঁপে থরথর
লেপ কাঁথা উম উম ভাব
ওরে শীত ওরে শীত
থেমে যায় সঙ্গীত
দু’টি চোখে ঘুম ঘুম ভাব।

সূর্য ডুব ডুব
রাঙায় না সে তো পুব
পাখিদের গান নেই
ঘাস ভিজে একাকার
ক্ষেত ভিজে কদাকার
কোথাও প্রাণ নেই!


শীতের পিঠা
আসাদুজ্জামান খান মুকুল

শীতেরকালে বাংলাদেশে
জাগে সাড়া বেশ,
মায়ের হাতের শীতের পিঠা
আনে সুখের রেশ!

পিঠার সঙ্গে মায়ে মিশায়
খেজুর রসের গুড়,
খোকাখুকি রঙে তুলে
ছড়া গানের সুর।

রাতের বেলায় এই পার্বণের
লাগে ভীষণ ধুম,
হরষে মন সবার মাতে
হয় না কারো ঘুম।

প্রভাত বেলা পিঠার ঘ্রাণে
সবাই জড়ো হয়,
রৌদ্রে বসে খেয়ে যেন
শীতকে করে জয়।

শীতের পিঠার স্বাদ লভিতে
বাদ থাকেনি কেউ,
শিশু-বৃদ্ধ খেয়ে সবাই
তুলে সুখের ঢেউ!

 

শীতের বুড়ি
রুমানা নাসরীন

ঐ যে দেখো শীতের বুড়ি
বয়স যেন বছর কুড়ি
হাতে একটা মস্ত ঝুড়ি
খাচ্ছে শুধু চিড়ে মুড়ি
দুহাত ভরা রেশমি চুড়ি
যাচ্ছে কোথা বল?

শীত বলেছে আসি আসি
শীতের বুড়ির মুখে হাসি
এই গাঁয়ে তার বুড়ো মাসি
খাচ্ছে দেখো আস্ত খাসি
করবে উদর ঠাসাঠাসি
চোখদুটো জ্বলজ্বল।

 

রূপসুষমার কাল
আবু ইউসুফ সুমন

হাড় কাঁপানো শীত
হিম কুয়াশার ঘোমটা পরে
হলো উপস্থিত!

খেজুর গাছের রস
সরষে ক্ষেতের যতেœ চাষি
খাটছে নিরলস।

মিষ্টি পেঁপে ফল-
জলপাই কুল আমলকীরা
আনছে জিভে জল।

মাশকলাইয়ের ডাল
গোলাপ গাঁদা সূর্যমুখীর
রূপসুষমার কাল।

শিশিরভেজা ফুল
নরম রোদে উত্তরা বায়
উড়ছে খুকির চুল।

 

দাঁত নড়েছে
মিজানুর রহমান

দাঁত নড়েছে বাঘ ভালুকের
দাঁত নড়েছে আখির,
দাঁত নড়েছে আমার বাড়ির
ময়না, টিয়া পাখির।

দাঁত নড়েছে মশা, মাছির
শীতের আগমনে,
শিয়াল মামা ভয়ে কাঁদে
দুরন্ত ওই বনে।

 

অতিথি পাখি
সারমিন চৌধুরী

তীব্র শীতের আভাস পেয়ে
ভয়ে কিছু পাখি,
ছুটে আসে দলেদলে
করে ডাকাডাকি।

শনশনিয়ে বইছে বাতাস
কাঁপন ধরে গায়ে,
এই পাখিও ভিড় করে
এখন লোকালয়ে।

বুড়ো দাদু দেখতে পেয়ে
খোকাকে ডেকে বলে,
এদের পাথর ছুড়বেই না
নামলে দিঘির জলে।

এরা হলো অতিথি পাখি
প্রতি বছর আসে,
খেয়াল রাখতে হবে এদের
সবাই মিলেমিশে।


আরো সংবাদ



premium cement