আগডুম বাগডুম : কবিতা
- ০১ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
গোসলচোরা
আবু সাইদ কামাল
বাবুল মিয়ার গ্রামের বাড়ি ‘বাকলজোড়া’
শীতের দিনের উপাধি তার ‘গোসলচোরা’।
গরু নিয়ে সারাটাদিন কাটায় মাঠে,
বাড়ি ফিরে সূর্য যখন নামে পাটে।
বাড়ির মালিক গোসল করার তাগিদ দিলে
জবাবে কয়, তেমন কি আর সময় মিলে!
দুপুর বেলায় রোদের সময় গরু চড়াই,
তখন কি আর সুযোগ আসে স্নানে জড়াই!
সন্ধ্যা বেলায় শীতের মাঝে গাঙে নামা
কেমন করে সম্ভব আপনি বলুন মামা!
মালিক বলে, তুমি যে এক গোসলচোরা
বাহানা দাঁড় করাও কেন অলস ছোড়া।
কিশোর ছেলে বছর বাঁধা রাখাল বলে
অনাদর আর অবহেলায় দিন যায় চলে।
মা-বাবা নেই বলে কিশোর কামলা থাকে,
অনাথ ছেলের যতে্নর খবর কে বা রাখে!
শীত এসেছে বুঝি
চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু
আকাশ থেকে পড়লে শিশির
তখন বোঝা যায়,
শীত এসেছে সারা দেশে
সবুজ শ্যামল গাঁয়।
খেজুর গাছে মাটির কলস
যখন ঝুলে থাকে,
শীত এসেছে কষ্টে তখন
পাখিরা সব ডাকে।
আগুন নিয়ে মানুষগুলো
যখন থাকে ঘিরে,
তখন বুঝি শীতের রাজা
আসলো দেশে ফিরে।
যখন দেখি পিঠা পুলি
ঘরে ঘরে হয়,
কষ্ট করে সবাই তখন
শীতের কষ্ট সয়।
রোদ পোহানের ধুম
সরকার জাহিদুল ইসলাম
রোদ পোহাচ্ছে কাঁথা কম্বল
রোদ পোহাচ্ছে তুলোর বালিশ
রোদ পোহাচ্ছে দাদু দাওয়ায়
করছে গায়ে তেল যে মালিশ।
রোদ পোহাচ্ছে আচার-বয়াম
রোদ পোহাচ্ছে উলের কাপড়
রোদ পোহাচ্ছে মাছের শুঁটকি
রোদ পোহাচ্ছে আলুর পাপড়।
রোদ পোহাচ্ছে দোয়েল-কোয়েল
রোদ পোহাচ্ছে সূর্যমুখী
রোদ পোহাচ্ছে ফুপির কোলে
দু’মাসের ওই ছোট্ট খুকি।
শীত এসেছে পাড়ায় পাড়ায়
শীত এসেছে ঘরে ঘরে
রোদ পোহাচ্ছে কুয়াশাও
একটু দূরে থরে থরে।
শীতের সকাল মানেই আহা
রোদ পোহাবার দারুণ ধুম
শীতের সকাল রোদের চোখে
মাখা থাকে খোকার ঘুম।
বুবুর কানের দুল
নাসির ফরহাদ
হারিয়ে গেছে আমার বুবুর
কানের সোনা দুল
তুলতে গিয়ে ফুল
শিমুল গাছের তলে,
দুলের শোকে বুবুর গায়ে জ্বর
বুক কাঁপে থরথর
ভাসছে দু’চোখ এক সাগরের জলে।
সখ করে বোন দুল কিনেছে
বোশেখ মাসের মেলায়
হারাবে ক্যান হেলায়?
মা বলছে রেগে,
কেমন করে হারালো দুল ওরে
লাফাচ্ছিলি জোরে!
চোখ থাকেনি জেগে?
যেমন মেয়ে হাড়হাভাতে
বেশ হয়েছে বেশ!
বুবুর এলো কেশ
চোখের পাতায় ঝোলে,
বুবুর মনে দুঃখ গোলাপ ফোটে
কষ্ট লেপা ঠোঁটে
কি করে সে দুলের কথা ভোলে!
তার হাসিতে মেঘ জমা হয়
আমারো যে দুখ জমা হয়।
আর কাঁদিস না বোন
আমার কথা শোন,
বলছি আমি বড় হয়ে
কিনে দেব দুল,
আর যেন তোর হয় না এমন ভুল!
শীতের অনুভূতি
গোলাম আযম
শীত সকালের অনুভূতি
বুঝতে হলে ঢের
মুয়াজ্জিনের আজান শোনে
উঠে পড়ো ফের!
রোজ সকালে শিশিরকণা
টুপটুপাটুপ পড়ে
খালি পায়ের আলতো ছোঁয়ায়
উঠে নড়েচড়ে!
কিচিরমিচির পাখির ডাকে
ভাঙে সবার ঘুম
দূর্বাঘাসে শিশিরকণা
দেই আদুরে চুম!
শীত আমেজে খালে বিলে
পাখপাখালির ঝাঁক
মিনার থেকে আসে ভেসে
নামাজ পড়ার ডাক!
রসের হাঁড়ি
রেজা কারিম
খেজুর গাছে রসের হাঁড়ি
ঝুলছে সারি সারি
দেখতে হলে যেতে হবে
শহর ছেড়ে বাড়ি।
রসের হাঁড়ি যাচ্ছে নিয়ে
ঐ যে দেখো গাছি
তার পেছনে দলবেঁধে সব
শিশুর নাচানাচি।
খেজুর গাছের রসের হাঁড়ি
যেন গাছের শিশু
কোলে নিয়ে দুগ্ধ খাওয়ায়
দিক না করে হিসু।
মাথার মুকুট ডালপালারা
যেন মাথার চুল
একপায়ে সে রয় দাঁড়িয়ে
শক্ত ভীষণ মূল।
দেহের পানি দেয় বিলিয়ে
মিষ্টি শিরার রসে
চুপটি করে ভাবো দেখি
একটুখানি বসে।
ইচ্ছে করে যেতে
মাসুম হাসান
মামার বাড়ি রসের হাঁড়ি
পাতা খেজুর গাছে
মিষ্টি রসে ঠোঁট ডুবিয়ে
ফিঙে-শালিক নাচে।
আমন ধানের মুড়ির সাথে
কামড়ে খেজুর গুড়
টাটকা রসের স্বাদটা বড়
লাগে যে মধুর।
রসে ভেজা চিতই পিঠা
ভাপা পিঠা খই
দাওয়ায় বসে খেতে খেতে
করব যে হইচই।
সাত সকালে রসের পায়েশ
আয়েশ করে খেতে
আমার ভীষণ ইচ্ছে করে
গাঁয়ে ছুটে যেতে।
শীতের দিনে
নুশরাত রুমু
শীত ছুটিতে সূর্য মামা
গেল মেঘের আড়ে
কুয়াশাতে আঁধার হলো
গাঁয়ে, নদীর পাড়ে।
হিমেল বাতাস বইছে ভীষণ
শীত করেছে কাবু
গরম জামা, জুতা-মোজায়
সাজল সবাই বাবু।
ছেলে বুড়োর সর্দি লেগে
নাক হয়েছে লাল
শীতের দিনে গোসল নিয়ে
বেঁধেছে গোলমাল।
আগের মতো খেজুর রসের
পায়েস হয় না আর
মায়ের হাতের ভাঁপা পিঠাই
মন ভোলায় সবার।
শীত বসেছে জেঁকে
মুহাম্মাদ আলী মজুমদার
শীত বসেছে জেঁকে
দেখবে বলো কে কে?
এসো তবে গাঁয়
রঙ-বেরঙের শীতের জামা
পাচ্ছে শোভা গায়।
খেজুর গাছে রসের হাঁড়ি
পিঠাপুলি বাড়ি বাড়ি
পাচ্ছি মজা খুব
আগের মতো পুকুর-জলে
দিই না এখন ডুব।
একটুখানি সুযোগ পেলে
ছেলের দলে আগুন জ্বেলে
তাড়াই শীতের দৈত্য
সুরুজ দাদার পাই না দেখা
আসে যখন শৈত্য।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা