হৃদয়ে ফিলিস্তিন
- সাদিকুর রহমান
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আমাদের মাথার ওপর আসমান নামের একটা ছাদ রয়েছে। আসমানের নিচে আমরা তীব্র শীতে কোমল রোদেলা সকালে দুপুরে কিংবা সন্ধ্যা বেলায় নিজ শরীরকে তাপ দেই। উষ্ণ করি। নিজ পছন্দের মানুষকে নিয়ে গল্প করি এবং আনন্দে ভরপুর হয়ে ওঠে আমাদের আড্ডাখানার মজলিসটা। আবার সন্ধ্যার পর বন্ধুরা মিলে চুলা কিংবা লাকড়ি দিয়ে যে আগুন জ্বালাই তার পাশে গা ঘেসে দাঁড়াই। কখনো বারবি কিউ করি। কখনো এ আড্ডাগুলো ছোট হয় আবার কখনো হয় বেশ লম্বা। আবার যখন তীব্র গরমের মৌসুম আসে তখনো আমরা উলঙ্গ আকাশের নিচে কোনো প্রাচীন বৃক্ষ, যে কি না তার ডালপালা ছড়িয়ে বহু ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার নিচে শীতল হাওয়ার জন্যই আশ্রয় নেই। কখনো তো মশারি টানিয়ে সেই উলঙ্গ আকাশটার নিচেই শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ি! কারণ আমার এ আকাশ নিরাপদ। আমার আছে শক্তিশালী সার্বভৌম। যার সীমানা নিশ্ছিদ্র নিরাপদ ও স্বাধীন। কিন্তু এ তীব্র শীতের রাতে কিংবা তীব্র গরমের রাতে কোনো গাছের ছায়ার নিচে বসে আরাম করি ও শান্তি খুঁজি। অথচ ফিলিস্তিনির এরকম আকাশ নেই। আমার হৃদয়ের সবচেয়ে দুর্বলতম জায়গা যেখানে ফিলিস্তিনের বসতি, তাকে দেখি সে অনিরাপদ। সেখানকার শিশু, বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ ও শক্তিশালী তরুণ ও তরুণীরা কাঁদছে। আর বলছে হে আল্লাহ; আমাদের ওপর কবে তোমার সাহায্য আসবে? তখন মানবতার বন্ধু মোহাম্মদ সা:-এর ঘটনা, যা তিনি আনাস রা:-কে বলেছিলেন। তা আমাদের আর সন্তুষ্ট করে না; বরং আমরা তাদের কান্না আর অসহায় আর্তনাদ দেখে অস্থির ও ধৈর্যহারা হয়ে পড়ি। কেন তোমার নির্মিত এ আসমান ভেঙে পড়ে না? কেন তোমার নির্মিত এ জমিন দুইভাগ হয়ে যায় না? এবং সেখানে আমরা লুকিয়ে পড়ি কিংবা মাটি চাপায় শেষ হয়ে যাই!
ফিলিস্তিনের অসহায় মা-বোন, ভাই-পিতাদের করুণ চাহনি যদি বিশ্ব মানবতার ফেরিওয়ালাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে না পারে তাহলে তুমি এ ব্রহ্মাণ্ডকে তছনছ করে দাও! যে ব্রহ্মাণ্ডে তোমার সৃষ্ট শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ এবং যারা তোমার ওপর বিশ্বাস রাখে ও রাতের গভীরে তোমাকে স্মরণ করে তাদের জন্য যদি আসমান থেকে তুমি সহযোগিতা করতে না পারো তাহলে তোমার প্রতি আমরা কি ক্ষোভ জানাব না? তুমি কি তোমার দাসদের অদৃশ্যভাবে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দাওনি? তুমি কি বলোনি যে, যারা মজলুম যারা শিশু ও বৃদ্ধ তুমি তাদের আর্তনাদ কিংবা অশ্রুকে সহ্য করতে পারো না? তাহলে কেন তোমার আরশ এখনো কেঁপে উঠছে না? তোমার সাহায্য কবে আসবে? যদি দ্রুত আসবে বলে তুমি আমাদের সান্ত্বনা দিতে চাও তাহলে এ দ্রুত সময়টুকুতে আর কত মা-বোন ধর্ষিত হলে তোমার সেই সাহায্যের প্রতিশ্রুতির সময় আসবে? যারা তোমার ইবাদত করে, যারা তোমার কাছে সহজ সরল পথের সন্ধান চায়- তুমি কি তাদের সাহায্য করবে না? তুমি কি তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল, নিরাপদ একখণ্ড ভূমি দান করবে না? তুমি কি সেই শাসকদের মতো যার কাছ থেকে বিক্ষোভ কিংবা অনশন করে কোনো প্রত্যাশা পূরণ করতে হয়? তুমি তো তাদের মতো নও। তোমার ৯৯ ভাগ রহমত আর সংরক্ষণে রেখো না; বরং এ জমিনের ফিলিস্তিনে কিছুটা হলেও ঢেলে দাও! এই ফিলিস্তিনিদের নিরাপদ ভূমি দান কর। দান কর তাদের এমন আসমান, যে আসমান থেকে উল্কার মতো বোমা আসবে না; কিংবা মিসাইল এসে নিরাপদ আশ্রয়স্থলকে নস্যাৎ করে দেবে না।
তুমি রাজাধিরাজ ও শেষ বিচারের মালিক। আমরা তোমার ওপর ক্ষোভ হতে ভয় পাই। তাই তুমি এ জাতিকে একতার ছায়ায় এনে ফিলিস্তিনকে নিরাপদ আবাসে পরিণত করে দাও। তোমার কোনটা পছন্দ? শিশুদের হাস্যোজ্জ্বল চেহারা নাকি ক্রন্দনরত কোনো শিশুর অসহায় আর্তনাদ ও বুক ফাঁটা চিৎকার? যেটি তোমার পছন্দ সেটিই না হয় তুমি এ ফিলিস্তিনিদের দান কর!
শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা