তামান্নার মন খারাপ
- জোবায়ের রাজু
- ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গানের মেয়ে তামান্না এবার সেভেন পড়ে। ছোটবেলা থেকে গানের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে সে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে মানুষকে মুগ্ধ করার একটা গুণ তামান্নার আছে।
তামান্নাদের স্কুলে প্রতি বছর বিজয় দিবসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সেখানে তামান্নাকে গান করার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে এর বিনিময়ে সে পয়সা পায়। কর্তৃপক্ষ ভালোই পয়সা দেয়। তবে সে পয়সা তামান্না নিজের জন্য খরচ করে না। অনুষ্ঠান শেষে খামে ভরা যে টাকাগুলো আসে তামান্নার হাতে, ওই টাকাটা সে তুলে দেয় লোকমান মিয়ার হাতে। লোকমান মিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তিনি আজ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। অভাবের সাথে যুদ্ধ করছেন রোজ, যেমনটি যুদ্ধ করেছেন ১৯৭১ সালে।
তামান্না তার বাবা ও ভাইদের কাছে শুনেছে লোকমান মিয়ার রোজদিনের টানাপড়েনের গল্প। খুব দুঃখ লাগে তামান্নার। একজন বীর হয়েও দুস্থ জীবন কাটানোটা সত্যি মেনে নেয়া যায় না। বিত্তবান দশজন হয়তো লোকমান মিয়াকে সাহায্য করেন, কিন্তু চিরন্তন অভাব তো আর এতে ফুরায় না। তামান্নারও ইচ্ছে হয় লোকমান মিয়াকে সাহায্য সহযোগিতা করার। কিন্তু তার সে সাধ্য নেই। তবে যেহেতু সে প্রতি বিজয় দিবসে গান গেয়ে কিছু অর্থ পায়, সে অর্থটা তামান্না লোকমান মিয়াকে তুলে দিতে তাদের বাড়ি চলে যায়। এতটুকু মেয়ের এমন উদারতা দেখে লোকমান মিয়া আনন্দে কেঁদে ফেলেন আর তিনি দু’হাত তুলে তামান্না জন্য দোয়া করেন।
তবে এবার তামান্না লোকমান মিয়ার সে দোয়া থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ এবার বিজয় দিবসে সে গান করতে পারবে না। কেননা তামান্না কিছুদিন আগে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে কঠিন সময় পার করেছে এবং এখনো সে ডেঙ্গুজ্বরের থাবা থেকে পুরোপুরি মুক্ত হয়নি। ডাক্তার বলেছেন, বিশ্রামে থাকতে হবে দীর্ঘ সময় ধরে। তাই এবার বিজয় দিবসে তামান্না গান থেকে নিজেকে দূরে রাখার ব্যাপারে দুঃখিত না হলেও লোকমান মিয়ার জন্য দুঃখটা তার রয়ে গেছে। এবার টাকাটা সে লোকমান মিয়াকে দিতে পারবে না জেনে মন খারাপ করে বসে আসে।
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠিত। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তামান্নার বদলে গান করেছে তাদের গানের স্কুলের আরেক ছাত্রী মিম। মিমের গলা তামান্নার মতো ভালো না, তাই সে কখনো বিজয়ের আয়োজনে গান গাওয়ার সুযোগ পায় না। তবে এবার যেহেতু তামান্না গাইছে না, তাই কর্তৃপক্ষ মিমকে দিয়ে গাওয়াচ্ছে।
বিকেলে তামান্নাদের বাড়িতে মিমের আগমন। কেন মিমের এই আগমন, তামান্না জানতে চাইবার আগেই মিম বলল, ‘তুই তো সবসময় গান গেয়ে যে টাকা পাস, তা লোকমান চাচাকে দিস, তা আমি জানি। এবার তোর বদলে আমি গান করে টাকা পেলাম। ভাবলাম আমিও তোর মতো এই মহান কাজ করি। তাই গান গেয়ে আজ আমি যে টাকাটা পেলাম, সব লোকমান চাচাকে দিতে চাই। কিন্তু আমি তো তাদের বাড়ি চিনি না। তাই তোর কাছে টাকাটা দিতে এলাম। তুই উনাকে দিয়ে দিস।’
বলেই মিম তামান্নার হাতে টাকার খামটি তুলে দিলো। মিমের এই কার্যকলাপ দেখে তামান্না অবাক আর খুশি হয়ে মিমকে জড়িয়ে ধরে বলল, তুই এত ভালো কেনরে!
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা