২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কেসোয়ারি পাখি

কেসোয়ারি পাখি -

পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পাখি কেসোয়ারি। এ পাখি উড়তে পারে না। পৃথিবীতে প্রায় ৪০ প্রজাতির পাখি রয়েছে যারা উড়তে পারে না। এদের মধ্যে কেসোয়ারি একটি। প্রায় ছয় ফুট লম্বা এবং ওজন প্রায় ৬০-৭০ কেজি। সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার গতি সম্পন্ন এ পাখি। এরা প্রচণ্ড গতিতে ছুটে এসে প্রায় পাঁচ ফুট লাফিয়ে ওঠে শিকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং মুহূর্তের মধ্যে ধারাল নখ দিয়ে শিকারকে ফালা ফালা করে ফেলে। মূলত এরা বনের অনেক গভীরে বসবাস করে একাকী স্বভাবের ও লাজুক প্রকৃতির। কিন্তু যদি কেউ এদের উত্ত্যক্ত করে তাহলে সহজেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং আক্রমণ করে বসে। আর বেশির ভাগ সময় এদের আক্রমণের শিকার হয় মানুষ ও গৃহপালিত পশু। এ পাখির ডিম কাঁচা আমের মতো সবুজ। ডিমে তা দেয় পুরুষ কেসোয়ারি পাখি সাধারণত ৫০-৬০ দিন তা দেয়। এ সময় পুরুষ কেসোয়ারি পাখি সবচেয়ে হিংস্র হয়ে ওঠে। এদের মাংস খাওয়া যায় না। কারণ খুবই শক্ত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিদ্ধ করার পরও নরম হয় না।
ভয়ঙ্কর স্বভাবের হলেও দেখতে কিন্তু মন্দ না। মাথা থেকে ঘাড়ের দিকে নীল ও বেগুনি রঙের। চামড়া বাদে সারা শরীরই খরখরে। কুচকুচে কালো পালক দিয়ে ঢাকা থাকে। গলার দিকে লাল ও ঘাড়ের পেছনে কমলা রঙের ছোপ। ঠোঁট জোড়া খুবই ধারালো। মাথার উপর ছাঁই রঙের ঝুঁটি আর পায়ের উপরের অংশ নীলচে ও সবুজাভ ধূসর রঙের। তিন আঙুলবিশিষ্ট পায়ের পাতায় প্রতিটি আঙুল নখযুক্ত।
নিউগিনি ও কাছাকাছি দ্বীপের বর্ষাঘন অঞ্চল এবং অস্ট্রেলিয়ার নিরক্ষীয় বনাঞ্চলে ও এদের দেখা মেলে। ভয়ঙ্কর হলে ও কিছু ভালো দিকও এদের আছে। বীজের বিস্তরণের ক্ষেত্রে এরা গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী। এরা ফল খেয়ে বেঁচে থাকে। ফলের বীজ পরিপাকতন্ত্রে পরিপাক না হয়ে মলের মাধ্যমে বাইরে নিঃসরিত হয়। ফলের বীজ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করে। ফলে রেইন ফরেস্টের বিস্তৃতি বৃদ্ধি করে। তীক্ষè দৃষ্টি, খঞ্জরের মতো নখ এবং মরণঘাতী থাবার জন্য কেসোয়ারি পাখিকে আধুনিক যুগের ডাইনোসর বলা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement