ওরাও মানুষ
- মাহমুদ হাসান ফাহিম
- ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রাতের শহর। নির্জনতা জেঁকে বসছে চার দিকে। দমকা বাতাস রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা কাগজগুলো উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রাস্তার দু’ধারের পুরনো বাতিগুলো আলোর বদলে একটা ঝাপসা আবছায়া তৈরি করেছে। তাড়াহুড়ো করে রাস্তা পেরোচ্ছে মাজেদ। হঠাৎ দেখে, রাস্তার পাশে একটা মেয়ে বসে আছে। ওর ছেঁড়া পোশাক আর এলোমেলো চুল। নিচের দিকে তাকিয়ে ভাবছে আর কী যেন আঁকাআঁকি করছে। মনের অজান্তেই ওর পা থেমে গেল। সাহস করে কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল ‘তুমি কে? এই সময়ে এখানে কেন?’
এমন প্রশ্নেও চমকে উঠে মেয়েটা। আস্তে করে মাথা তুলে তার দিকে তাকায়। ধীরকণ্ঠে বলে, ওই তো রাস্তায় লোকদের ভিড়। গাড়ির হর্ন, হাঁকডাক- সব মিলিয়ে ব্যস্ত শহর। সবার লক্ষ্য, জীবনের পেছনে ছোটা। আমার লক্ষ্য শুধু বেঁচে থাকা। এ দিক দিয়ে হেঁটে যাওয়া লোকেরা আমার অস্তিত্বকেই উপেক্ষা করে। কেউ হয়তো বিরক্তি নিয়ে তাকায়, কেউবা পাশ কেটে চলে যায়। কিন্তু আমারো আছে গল্পের মতো জীবন। আছে তোমাদের জীবনের মতো সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার মিশেল বহু স্বপ্ন। শুধু নেই এমন একজন মানুষ যে আমার গল্পগুলো শুনবে। কেউ জানতে চায় না তাই আমিও নিজ থেকে কাউকে বলি না। আজ তুমি জিজ্ঞেস করলে তাই বললাম।
অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে যায় মাজেদ। ওর সব কথা মাজেদ ঠিক বুঝতে পারেনি। আবার জিজ্ঞেস করল তোমার বাড়ি কোথায়?
মেয়েটা মাথা নেড়ে জিজ্ঞেস করল ‘বাড়ি!’ কেমন বাড়ি? আমাদের আলিশ বাড়ি নেই। এই রাস্তাই আমাদের বাড়ি, এই ফুটপাথ আমাদের ঘর। এই বলে মেয়েটা আবার আঁকাআঁকি শুরু করল।
নির্বাক হয়ে শুনল মাজেদ। ওর মনে অপরাধ বোধ কাজ করছে। হ্যাঁ, তবে কি আমরা এই মানুষগুলোকেই অবহেলার চোখে দেখি। ওদের কষ্ট বুঝতে চাই না। অথচ ওরাও আমাদের মতোই মানুষ। মুহূর্তেই ভাবনার জগতে হারিয়ে গেল সে। অল্প কথায় মেয়েটা অনেক কিছু বলে দিলো। ওদের জীবন মানেই নিরাপত্তাহীনতা, অনিশ্চয়তা। ওদের চার পাশ অন্ধকার। কখনো পুলিশ এসে তাড়িয়ে দেয়। আবার কখনো বখাটেরা উত্ত্যক্ত করে। ফুটপাথ মানেই টিকে থাকার লড়াই। এর মধ্যেই তারা এক টুকরো সুখের আলো খোঁজে।
টঙ্গী, গাজীপুর
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা