৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আদিলের বন্ধু ঘাসফড়িং

আদিলের বন্ধু ঘাসফড়িং -


একটি সুন্দর গ্রামে বাস করত একটি ছেলে। নাম আদিল। আদিল ছিল অত্যন্ত হাসিখুশি এবং প্রাণবন্ত। তার ছোট্ট গ্রামে অনেক ধরনের পাখি এবং প্রাণী ছিল, কিন্তু আদিলের সবচেয়ে পছন্দের ছিল একটি ঘাসফড়িং। সেই ঘাসফড়িংয়ের নাম ছিল গ্রিন। গ্রিন ছিল একটি রঙিন এবং চঞ্চল ঘাসফড়িং। সে ছিল খুবই সাহসী এবং প্রায়ই গ্রামে শস্যক্ষেত্রে উড়াল দিতো। আদিল যখন মাঠে খেলতে যেত, গ্রিন সব সময় তার সাথে থাকত। তারা একে অপরের ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিল। একদিন, আদিল মাঠে খেলতে বের হলো। সে দেখল, গ্রিন তার দিকে উড়ে আসছে। ‘হ্যালো, গ্রিন!’ আদিল চিৎকার করে বলল। গ্রিন আনন্দে লাফিয়ে উঠল এবং বলল, ‘হ্যালো, আদিল! আজ আমরা কী করতে চলেছি?’ ‘চলো, আমরা নদীর ধারে যাই! সেখানে অনেক মজা হবে!’ আদিল প্রস্তাব দিলো। তারা দুজন মিলে নদীর দিকে রওনা হলো। নদীর ধারে গিয়ে তারা দেখল, সেখানে অনেক শিশুরা জল খেলা করছে। আদিল খুব আনন্দিত হয়ে উঠল এবং তারা সেখানেই খেলতে লাগল। গ্রিন হঠাৎ বলে উঠল, ‘আদিল, আমি একটু উড়ে যাচ্ছি। তুমি এখানে অপেক্ষা করো!’ আদিল হাসতে হাসতে বলল, ‘তুমি যাও, আমি অপেক্ষা করব!’ গ্রিন উড়ে গিয়ে কিছুক্ষণ পর ফিরে এলো। সে একটি ছোট্ট পাথর নিয়ে এলো, যা রঙিন এবং খুব সুন্দর। ‘দেখো, আমি এটা পেলাম!’ গ্রিন উত্তেজিত হয়ে বলল।

আদিল পাথরটি দেখে অবাক হলো। ‘এটা তো সত্যিই অসাধারণ! আমরা এই পাথর দিয়ে কিছু খেলতে পারি।’ তারা সেই পাথর দিয়ে খেলনা বানাতে লাগল এবং আনন্দে মেতে উঠল। একের পর এক দিন কেটে যেতে লাগল। আদিল ও গ্রিনের বন্ধুত্ব আরো গাঢ় হতে লাগল। তারা একসাথে নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার করতে লাগল, মাঠে, নদীতে এবং বনেও। কিন্তু একদিন, আদিলের গ্রামে একটি ভয়ঙ্কর খবর ছড়িয়ে পড়ল। গ্রামের পুরোনো গাছগুলোকে কেটে ফেলা হবে, কারণ গ্রামের প্রধান অনেক নতুন বাড়ি বানাতে চাচ্ছিলেন। আদিলের খুব দুঃখ হলো। সে জানত, সেই গাছগুলো কেবল গাছ নয়; বরং তাদের সুখের স্মৃতি। আদিল গ্রিনকে বলল, ‘আমরা কি কিছু করতে পারি?’ গ্রিন চিন্তা করতে লাগল। ‘হ্যাঁ! আমরা সবাইকে জানাতে পারি। আমরা তাদের কাছে সত্যি বলব, গাছগুলো আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’ তারা গ্রামের অন্যান্য বন্ধুদের ডেকে নিয়ে পরিকল্পনা করতে লাগল। তারা সিদ্ধান্ত নিলো, গাছগুলোর সংরক্ষণ করার জন্য একটি সমাবেশ করবে।

আদিল ও গ্রিন তাদের খেলার মাধ্যমে গ্রামের লোকদেরকে গাছের গুরুত্ব বোঝাতে লাগল। দিন এলো, সমাবেশের দিন। আদিল এবং গ্রিন তাদের বন্ধুদের সঙ্গে একটি সুন্দর প্ল্যাকার্ড তৈরি করল, যার উপর লেখা ছিল ‘গাছ আমাদের বন্ধু!’ গ্রামের অনেক মানুষ সমাবেশে উপস্থিত হলো। আদিল দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলল, ‘প্রিয় বন্ধুদের, গাছগুলো আমাদের বাঁচার জন্য প্রয়োজন। এটি আমাদের অক্সিজেন দেয়, পশু-পাখির আবাস। আমাদের যদি গাছগুলো কাটা হয়, তাহলে আমাদের পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।’ গ্রিনও সবার সামনে উড়ে এসে বলল, ‘আমি একজন ঘাসফড়িং, কিন্তু আমি জানি গাছগুলো আমাদের কতটা সাহায্য করে। আসুন, আমরা একসঙ্গে দাঁড়াই!’ গ্রামের মানুষ তাদের কথা শুনে অবাক হলো। তারা বুঝতে পারল, গাছগুলো কেবল একটি গাছ নয়; বরং তাদের জীবনের একটি অংশ। অবশেষে, গ্রামের প্রধান সিদ্ধান্ত নিলেন, গাছগুলোকে কাটার পরিবর্তে সুরক্ষিত রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আদিল ও গ্রিন আনন্দে লাফাতে লাগল। তারা জানত, তাদের বন্ধুত্ব এবং সাহসের মাধ্যমে তারা কিছুটা হলেও প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পেরেছে। সেদিনের পর, আদিল ও গ্রিন আরো শক্তিশালী বন্ধু হয়ে উঠল। তারা শিখল, একসঙ্গে দাঁড়িয়ে কাজ করলে বড় বড় বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। গ্রিন প্রতিদিন আকাশে উড়ে এসে আদিলের সাথে খেলা করতে লাগল, আর আদিল প্রতিদিন নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে অপেক্ষা করতে লাগল। এভাবেই তাদের বন্ধুত্ব চিরকাল অটুট রইল, মেঘের আড়ালে যেমন সূর্যের আলো থাকে, তেমনি আদিলের জীবনে গ্রিন ছিল এক বিশাল রোদ্দুর।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
গাজার উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের গভীরে ইসরাইলি ট্যাংক, নিহত ৪২ রাজধানীতে আসছে শীতের প্রচুর সবজি ওপারে রাতভর বোমার বিস্ফোরণ আতঙ্কে নির্ঘুম টেকনাফবাসী সীমান্তের ওপারে ফ্যাসিস্ট বসে নতুন নতুন ষড়যন্ত্র করছে : মির্জা ফখরুল আওয়ামী শাসনামলের চেয়ে সংখ্যালঘুরা নিরাপদে আছে সেন্টমার্টিনে বছরে দেড় লাখের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করে বিজেপি নির্দিষ্ট একটি ধর্মের প্রতি প্রতিহিংসাপ্রবণ : মমতা চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে, সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে : ডা: শফিক ৫২ সেকেন্ডের ভিডিওতে খুনে জড়িতদের চেহারা ভারতের দ্বিচারিতা নিন্দনীয় ও আপত্তিকর : আসিফ নজরুল কলকাতায় জাতীয় পতাকা পোড়ানোয় বাংলাদেশের নিন্দা

সকল