৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আগডুম বাগডুম কবিতা

-

হেমন্তের মাঠ
খোরশেদ আলম নয়ন

পুব পুকুরে ছড়িয়ে থাকা হিজল ফুলের সর
ডুমুর ডালে মাছরাঙাটা দেখতে মনোহর।
এই যে নদী চিরচেনা-চেনা খেয়াঘাট
দুই ধারে এর চোখ জুড়ানো ফসল ভরা মাঠ।

মন ছুটে যায় সেই শৈশব মেঘনা নদীর তীরে
মেঘের আড়ে সূর্য যেথায় যায় হারিয়ে ধীরে।
নাড়াপোড়া ঘ্রাণ জড়ানো সন্ধ্যা যখন নামে
হেমন্তের এই স্নিগ্ধ বিকেল পাই ফসলের দামে।

মাঠের পরে হাটের দেখা-বটের ছায়া তলে
সাঁঝের পথিক সে পথ ধরে যায় সুদূরে চলে।
আমায় চেনে ঘাটের মাঝি -চেনে মাঠের চাষি
নিত্য আমার এদের সাথেই কান্না এবং হাসি।

এরাই আমায় হাত বাড়িয়ে বলছে ‘খোকা এসো’
যুগ জনমে স্বদেশটাকে এমনি ভালোবেসো।
ফুলের সাথে হাসবে তুমি গাইবে পাখির সাথে
চাঁদের সাথে বলবে কথা জোছনা ঝরা রাতে।

বুকের মাঝে সুখের স্বপন জড়িয়ে ধরে রেখে
ফসল ভরা মাঠের ছবি যাই দু’চোখে এঁকে।

 

আলোর খোঁজে
আলমগীর কবির

আলোর খোঁজে ছুটে বেড়াই নতুন আলোর পাখি
ঝিনুক মনে সংগোপনে আলো পুষে রাখি।

যে আলো রোজ সবুজ পাতায় ঝিকিমিকি জ্বলে
যে আলো রোজ স্বপ্ন আশার শত গল্প বলে।

যে আলো রোজ মায়ের মুখের হাসির ছড়ায় দোলে
যে আলোতে মন পলকে দুঃখ ব্যথা ভোলে।

আলোর খোঁজে ছুটে বেড়াই পার হয়ে যাই নদী
নতুন আলোর বায়না ধরে সাহসী মন যদি -
নতুন অভিযানের কথা জানবে পাহাড় দূরের
বলবে দেখে কে এলো কে নতুন পাখি সুরের!
চলার পথের বাঁকে খুশির জোসনা ঝরে পড়ে
মায়ের জন্য আলো নিয়ে ফিরব শেষে ঘরে।

 

হেমন্তরূপ
জয়নব জোনাকি

হেমন্তরূপ হলুদখামে
খেলছে পাতাঝরা
বিবর্ণতায় সবুজ ভূমি
মলিন বদন ধরা।

বিরান ভূমির করুণ দশা
চারদিকে বয় খরা
বিষণ্ণতায় বৃক্ষলতা
ঠায় দাঁড়িয়ে মরা,

লুকোচুরি খেলছে যেন
মিষ্টি রোদের ছায়া
প্রকৃতিতে পালাবদল
কি অপরূপ মায়া।

মাঠে মাঠে সোনার মতো
পাকা ধানের ছড়া
ক্ষণিক দেখায় হেমন্তটা
নাড়ছে শীতের কড়া।

উঠোন জুড়ে নতুন ফসল
ভরছে চাষির গোলা
কৃষক মনে হেন্তকাল
জাগায় খুশির দোলা।

 

দোলনা
মাসুম হাসান

মুখে কোনো বোল নাই
দুলে দুলে দোলনায়
মাহিরসোনা দোলে,
আকাশেরি চাঁদটা
ভাঙাতে যে রাগটা
হেসে হেসে লুটোপুটি
খোকাবাবুর কোলে।

দুলে দুলে দোলনা
চলে গেলো খুলনা
খোকার খালাবাড়ি,
আয় ঘুম আয় না
আর নেই বায়না
দোলনায় দুলে আয় -
ঘুম তাড়াতাড়ি।

 

প্রজাপতি
মোহাম্মদ মিজান মাঝি

প্রজাপতি প্রজাপতি
তুমি বড় ভাগ্যবতী,
আছে দুটি ডানা
উড়তেও নেই মানা।

বাহারি সব রঙ তুলিতে
সবারই মন কেড়ে নিতে,
কে-বা দিলো এঁকে?
বিস্মিত হই দেখে?

করতে যদি বন্ধু আমায়
সাথে নিয়ে উড়তে ডানায়,
ঐ আকাশের নীলে
যেতাম দুজন মিলে।

 

হেমন্ত
এম ডি জিয়াবুল

আঁকলো খোকন হেমন্তের রূপ
আঁকলো গাঁয়ের ছবি,
আঁকলো সকাল দুর্বাঘাস আর
আঁকলো কোমল রবি।
আঁকলো নিখুঁত রং-তুলি তার
আঁকলো ধানের মাঠ,
আঁকলো আরও শিউলি-ছাতিম
আঁকলো পুকুর ঘাট।
আঁকলো খোকন ডিঙির সারি
আঁকলো নদীর-চর,
আঁকলো আমার কৃষাণী মা’র
ছোট্ট কুঁড়ের ঘর।
আঁকলো নিখুঁত লাউয়ের ডগা
আঁকলো শিম আর পুঁই,
আঁকলো বসে আনমনে সে
আঁকলো কাশ আর জুঁই।
আঁকলো খোকন হিম কুয়াশা
আঁকলো বকের ঝাঁক,
আঁকলো আমার শস্য শ্যামল
আঁকলো শীতের ডাক।

 


আরো সংবাদ



premium cement