২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

হেমন্তের রূপবৈচিত্র্য

হেমন্তের রূপবৈচিত্র্য -

ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। একেকটি ঋতুর আগমন হয় একেকটা বৈচিত্র্যময় রূপ নিয়ে। শরতের পর হেমন্ত আসে তার দৃষ্টিনন্দন রূপ নিয়ে অতিথি হয়ে। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই দুইটি মাস মিলে হেমন্তকাল। হেমন্তের সকালে হিম হিম শীত প্রবাহিত হয়। সবুজ ঘাসে আর ফসলের ডগায় জমে শিশিরবিন্দু। কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় মাঠ, ঘাট। পাখিদের কোলাহলে শুরু হয় সকাল।
গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে খেঁজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে। সারারাত মাটির হাড়ি খেঁজুরের রসে পরিপূর্ণ হয়ে যায় ভোরবেলায় খেঁজুরগাছে উঠে গাছিরা মাটির হাড়ি সংগ্রহ করে। সকালে শিশিরভেজা ঘাসের ওপর পড়ে থাকে ঝরে পড়া শিউলি। হেমন্তকালে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে প্রকৃতি। ফুলের সুবাসে মাতিয়ে রাখে চার পাশ। এ ঋতুতে ফোঁটে মল্লিকা, গন্ধরাজ, কামিনী, হিমঝুরি, দেব কাঞ্চন, রাজ অশোক, ছাতিম, সোনাপাতি, বকফুল ইত্যাদি। হেমন্তে পাওয়া যায় বেশ কয়েকটি ফল। উল্লেখযোগ্য কদবেল, কামরাঙা, চালতা, আমলকি। নানান রকম সুস্বাদু সবজিও পাওয়া যায় এ ঋতুতে। যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, সিম, বেগুন ও ওলকপি।
এ ঋতুতে চোখে পড়ে নানান প্রজাতির মাছ। গ্রামগঞ্জের হাটে বাজারে নিত্যনতুন দেশীয় মাছের সমারোহ দেখা যায়। চিতল, শিং, মাগুর, কই, টেংরা, পুঁটি, ও বোয়ালসহ আরো বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। মাঠে মাঠে চোখে পড়ে সোনালি ধানের দৃশ্য। কৃষকেরা একত্র হয়ে ধান কাটার আনন্দে মেতে ওঠে। ধান কাটার পর কৃষাণ-কৃষাণী ব্যস্ত হয়ে পড়ে ঘরে নতুন ফসল তুলতে। ধান কাটার পরই শুরু হয় পিঠা খাওয়ার আয়োজন। নতুন চাল দিয়ে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায় গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণীদের ঘরে। পিঠার মৌ মৌ গন্ধে ছড়িয়ে পরে চার দিক। নবান্নের পিঠা উৎসবে মাতে গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও নবান্নের উৎসব আয়োজিত হয়। থাকে হরেক রকম পিঠার সমারোহ। ভাঁপা পিঠা, চিতই, দুধ-চিতই, নারিকেলপুলি, মালপোয়া, নকশিপিঠাসহ আরো সুস্বাদু বাহারি সব পিঠা।


আরো সংবাদ



premium cement