১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩০, ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

আগডুম বাগডুম কবিতা

-


জারিফের আবদার
জুলফিকার শাহাদাৎ

বাপি তোমার কেনাকাটায় বড্ড হতাশ আমি-
ইচ্ছে করে নিজেই এখন বাজার করতে নামি
কাল এনেছ পুতুল দুটো, খেলতে গিয়ে যা-
আধঘণ্টায় ভেঙে গেছে ওই পুতুলের পা।

আনলে সেদিন একটি গাড়ি, আর একটি ঘোড়া
একটু মাঠে খেলতে গেলাম, অমনি দুটোই খোঁড়া!
খুলল হঠাৎ গাড়ির চাকা, ছিঁড়ল ঘোড়ার লেজ
আচ্ছা বাপি, লেজ ছাড়া কি মানায় ঘোড়ার তেজ!

বল এনেছ, খেলতে গিয়ে হায় কি দশার শেষ-
কার বাসাতে পড়ল গিয়ে অমনি নিরুদ্দেশ
লাঠিমটাও দুষ্টু ভীষণ, ফুটল আমার পায়
ঢোল বাজালে বকো তুমি, তাই থাকি শঙ্কায়।

তারচে বাপি শোন এবার তোমায় দিলাম ছাড়-
এখন থেকে কিনব নিজেই খেলনা চমৎকার।

 

 

বড় হোক শিশু
মুস্তাফা ইসলাহী

শিশুদের ফোন নয় দিতে হবে বই
খেলনার বন্দুক দিতে নাহি কই।

বুয়াদের কাছে নয় বাবুদের রাখা
পিতা-মাতা দাও মন ভালোবাসা মাখা।

ঘরে থাকা শিশুদের যেতে দাও মাঠে
লাভ নেই আটকিয়ে সারাদিন পাঠে।

লেখাপড়া, খেলাধুলা একসাথে চাই
যান্ত্রিক পরিবেশে মানবতা নাই।

ঘুমপাড়ানির গানে ঘুমে দিক ডুব
জোনাকির আলো, বন দেখে নিক খুব।

বৃষ্টির জলে দেহ, মন যাক ভিজে
হয়ে যাক প্রজাপতি, পাখি, ঘুড়ি নিজে।

ছেড়ে দাও শিশুদের প্রকৃতির বুকে
বড় হোক মাটি, নদী, ফুল শুঁকে শুঁকে।

 

 

ষড়ঋতুর খেলা
মমতা মজুমদার

শরৎ শেষে ঘাসের বুকে
শিশির ঝরা ভোরে
শিউলি তলায় ফুল কুড়াতে
ছুটছে খুকি দোড়ে।
ফুলে ফুলে পাখির মেলা
মন মাতানো সুর
খুকির মনটা ভীষণ খুশি
লাগছে সুমধুর।
ফড়িং খেলে উড়ে উড়ে
প্রজাপতিরা নাচে
হেমন্তের সাজ নতুন করে
মনটা ঘিরে আছে।
কী অপরূপ আমার এদেশ
ষড়ঋতুর খেলা
দেখে দেখে ঠিক চলে যায়
ছোট্ট খুকির বেলা।

 

 

ফড়িং
কাজী রাসেল

ছোট্ট ফড়িং তিড়িং বিরিং
করছে ডানা মেলে,
ছুটছে খোকা পিছু পিছু
ধরবে সুযোগ পেলে।
মুক্ত মনে ঘুরেফিরে
সবুজ পাতার ফাঁকে,
ফুড়ুৎ করে উড়াল মারে
ধরতে গেলে তাকে।
ধরতে পেলে ফড়িং ছানা
করবে খোকা খেলা,
ফড়িং নিয়ে খেলা করে
কাটবে খোকার বেলা।

 

 

বৈচিত্র্যময় হেমন্ত
এম আবু বকর সিদ্দিক

মিষ্টি আকাশ মিষ্টি বাতাস
মিষ্টি ফুলের গন্ধ,
ফুলবাগানে অলি নাচে
কি অপরূপ ছন্দ!

শিশিরভেজা দুর্বাঘাসে
মিষ্টি রোদের হাসি,
ধানের আঁটি মাথায় নিয়ে
যাচ্ছে বাড়ি চাষি।

গাঁয়ের বধূ কুলা নেড়ে
ওড়ায় ধানের চিটা,
নতুন ধানে করবে বধূ
হরেক স্বাদের পিঠা।

খেজুর গাছে উঠল গাছি
পাড়বে রসের হাড়ি,
রসের পায়েশ পিঠার ঘ্রাণ
ছুটবে বাড়ি বাড়ি।

হেমন্তের এই নিমন্ত্রণে
উঠব মেতে সবে,
স্বজনেরা আসবে ছুটে
নবান্নের উৎসবে।

 


ছিপ ফেলেছে খোকা
মাসুম হাসান

ছিপ ফেলেছে খোকনসোনা
স্বচ্ছ পুকুর জলে-
টেংরা-পুটি রুই-কাতলা
খেলছে জলের তলে।
ভাসছে টোনা জল থৈথৈ
তীক্ষ্ম খোকার চোখটা-
ভাবনাটা মাছ গিললো বুঝি
বড়শিগাঁথা টোপটা।

সূতোয়বাঁধা পাটকাঠিটা
উঠলো হঠাৎ নড়ে-
খুশির দোলায় মনটা খোকার
ফুরুত ফারুত করে।
হ্যাঁচকা টানে তুললো ডাঙায়
বোয়ালের মুখে দাড়ি-
হুররে হুয়া শোর মাচিয়ে-
ফিরল খোকা বাড়ি।


আরো সংবাদ



premium cement