অত্যচারী শেয়ালের পরিণতি
- আশরাফ আলী চারু
- ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
এক ছিল শেয়াল। সে ছিল খুব ধূর্ত ও অত্যাচারী। মাঠে, বনে এবং ঘাটে যাকেই সামনে পেত তাকেই ধরে খেত। তার এই অত্যাচারের ভয়ে সবাই অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। এমন একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছিল যে, বাঁচার জন্য সবাই নিজেদেরকে লুকিয়ে রাখত। যার ফলে একসময় ভীষণ খাদ্য সঙ্কটে পড়ল অত্যাচারী শেয়ালটি। অনবরত ক্ষুধার্ত থাকার কারণে খিটখিটে মেজাজ নিয়ে মনের দুঃখে সে একদিন এক গভীর জঙ্গলে চলে গেল।
সেই জঙ্গলে বাস করত এক বাঘিনী ও তার ছয় বাচ্চা। তারা একটি গুহায় থাকত। বাচ্চাগুলো ছিল বেশ ছোট। মা বাঘিনী বাচ্চাদের যতœ নিতে প্রায় সারা দিনই গুহায় সময় কাটাত। বাচ্চাদের ঘুমিয়ে দিয়ে সামান্য সময়ের জন্য শিকারে বের হতো। যা সামনে পেতো তাই শিকার করে এনে বাচ্চাদের খাওয়াত। নিজেও খেতো।
আজ বাঘিনী বের হয়েছে। আশেপাশে কোথাও কোনো জীবজন্তু নেই। গতকাল বাচ্চারা বলেছিল শেয়ালের মাংস খাবে। তাই আজ তাকে একটি শেয়াল শিকার করতে হবে। সে জঙ্গলে শেয়াল খুঁজতে আরম্ভ করল।
অপর দিকে শেয়াল তার জন্য খাবার খুঁজতে খুঁজতে চলে এলো বাঘিনীর ওই গুহায়। ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখল ছয়টি বাচ্চা। সে গুহায় ঢুকল। বাচ্চারা মনে করল মা শেয়াল ধরে এনেছে। তারা খুশিতে লাফাতে লাগল। শেয়ালের বুঝতে বাকি থাকল না যে, বাঘিনী জঙ্গলে শেয়াল শিকারের জন্যই ঘুরছে। সে বাচ্চাদেরকে বলল-
তোমরা আজ শেয়ালের মাংসের স্বাদ পাবে। তোমাদের মা বড় একটি শেয়াল ধরে তোমাদেরকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে পাঠিয়েছে। চল আমার সাথে।
বাচ্চারা বিশ্বাস করে বেরিয়ে পড়ল। বাচ্চাদের সাথে নিয়ে শেয়াল চলে গেল জঙ্গলের আরো গহিনে। একপর্যায়ে শেয়ালের খারাপ মতিগতি বুঝতে পেরে বাচ্চারা এক গাছে উঠে গেল। শেয়াল তো গাছে উঠতে পারে না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে অন্যত্র চলে গেল। বাঘিনী ফিরে এসে গুহায় শেয়ালের পায়ের ছাপ দেখল। বাচ্চাদের করুণ পরিণতির কথা বুঝতে বাকি রইল না। সে বেরিয়ে ঘুরতে ঘুরতে বাচ্চাদেরকে গহিন জঙ্গলে গাছের ডালে খুঁজে পেলো। উদ্ধার করে লুকিয়ে রাখল অন্য গুহায়।
কয়েক দিন কেটে গেছে। বাঘিনী শেয়ালের ওপর প্রতিশোধ নিতে একটি মুরগি ধরে এনে জঙ্গলের অপর আরেকটি গুহায় রাখল। তারপর সে ওঁৎ পেতে অপেক্ষা করতে থাকল। ক্ষুধার্ত শেয়াল শিকার খুঁজতে বেরিয়ে এই গুহার কাছে এসে মুরগির গন্ধ পেলো। তাকিয়ে মুরগি দেখতে পেলো। ভেতরে ঢুকল। এবার সে আটকে গেল বাঘের থাবায়।
-বল, আমার বাচ্চাদের কেন নিয়েছিলি?
শেয়াল আমতা আমতা করে কিছু মিথ্যা বলতে চাইল। বাঘিনী বুঝতে পারল এটিই সেই শেয়াল যে তার বাচ্চাদের ভাগিয়ে নিয়ে গেছিল। তাকে গুহার ভেতরে টেনে নিয়ে চার পা ভেঙে ফেলে রাখল। যে শেয়ালের হাড্ডি আর চামড়া ছাড়া কিছু নেই সেই শেয়ালটা বাচ্চাদের খাওয়ার জন্য উপযুক্ত নয়। তাই গাছের গুঁড়ি দিয়ে গুহার মুখ ভালো করে আটকে দিয়ে বাঘিনী চলে গেল। গুহার ভেতরে চার পা ভাঙা শেয়াল আর বেরোতে পারল না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা