১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সাফল্যের নতুন দৃষ্টান্ত মোঃ মাহমুদুজ্জামানের সাফল্য-কাহিনী

মোঃ মাহমুদুজ্জামান - ফাইল ছবি।

বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম মোঃ মাহমুদুজ্জামান। তার সহকর্মীরা তাকে এস্তাহাদ মৃদুল নামেই ডাকে। বিগত ৪ বছর ধরে, তিনি ডিজিটাল মার্কেটার হিসাবে কাজ করছেন এবং সে ও তার টিম মিলে ছোট-মাঝারি আকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্টার্টআপ কোম্পানিগুলকে তাদের অভ্যন্তরীণ এবং দূরবর্তী বিপণন দলগুলির সাথে ডিজিটাল জগতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান করে দিয়ে থাকেন। সেখান থেকেই তার ক্যারিয়ার শুরু হয় এবং এখন পযর্ন্ত নিজেকে আরও উৎজীবিত করে চলছেন। নিজের পরিশ্রম এবং নিজের মেধা দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

মোঃ মাহমুদুজ্জামান ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল রাজশাহী বিভাগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শিক্ষাজীবনে তিনি রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সরকারি মডেল স্কুল ও কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগে সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে উদ্যোক্তা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাছাড়াও তিনি ভারতের IMT গাজিয়াবাদ থেকে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমাও অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএ-তে তার দ্বিতীয় মাস্টার্স-এ পড়াশোনা করছেন।

মোঃ মাহমুদুজ্জামান একজন স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতা এবং মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ। তিনি ছোট এবং মাঝারি আকারের কোম্পানিগুলিকে ডিজিটাল মার্কেটিং, সেলস অপারেশন, অপারেশন ম্যানেজমেন্ট, গ্রাহকের দক্ষতার জন্য সুপরিচিত সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা, এবং ব্র্যান্ডিং ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করে থাকেন। তিনি সে কোম্পানিগুলিতে তাদের মার্কেটিং বিভাগ তৈরি করেন এবং তাদের গ্রাহক সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে থাকেন।

মোঃ মাহমুদুজ্জামান বলেন- “ছোটবেলা থেকেই আমি সবসময় ব্যবসা নিয়ে আগ্রহী ছিলাম। আমি আমার জীবনের প্রথম উদ্যোগটি এক স্কুল বন্ধুর সাথে শুরু করেছিলাম, এবং আমরা বিভিন্ন ধরনের সায়েন্স ফিকশন বই রেন্ট দিয়ে আমাদের পকেট মানি জোগাড় করতাম। আমার বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমি প্রায়ই সেই দিনগুলির কথা স্মরণ করি এবং সেই চিন্তাভাবনা নিয়ে ২০২১ সালের প্রথম দিকে, আমি কানাডায় অবস্থিত একটি কোম্পানি Nevena Digital Ltd এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে কাজ করি। আমাদের প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ীয় সেবা প্রদান করছিলো এবং এর পাশাপাশি গ্রাহকদের ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মার্কেটিং এর কাজ করেছিল। ধীরে ধীরে নর্থ আমেরিকার মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয় কোম্পানিটি এবং কানাডায় সদর দপ্তরে নেভেনা ডিজিটাল দ্রুত সব সেবা প্রদান করা শুরু করে। আমি এই কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সক্রিয়ভাবে ব্যবসার প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলাম। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী কৌশল তৈরি করে আমরা গ্রাহকদের জন্য সর্বোত্তম মানের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি। সব বিভাগে সহযোগিতা এবং বাজার বিশ্লেষণের মাধ্যমে ব্যবসা সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাই।

তারপর, ২০২৩ সালে, আমি ‘Estahad & Co. Ltd’ নামে একটি নতুন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে উদ্যোক্তা হিসেবে আমার পেশাগত জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিলাম। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডিজিটাল প্রোডাক্ট ও সার্ভিস ভিত্তিক সকল মার্কেটিং সমস্যার সমাধান উপস্থাপন করতে আমরা সেখানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য হলো, গ্রাহকদের জন্য মূল্য সংযোজন করা এবং তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য পূরণের জন্য সহায়ক হওয়া। আমাদের কোম্পানি এখন একটি পছন্দের অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা বাজারের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষতা প্রদর্শন করেছে।”

যেখানে আমাদের বর্তমান তরুণরা চাকরির জন্য নিরন্তর চেষ্টা করছে, সেখানে মোঃ মাহমুদুজ্জামান এক ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছেন। তার ব্যবসায়িক সফর থেকে শুরু করে তিনি এখন অপ্রতিদ্বন্দ্বী উচ্চতায় পৌঁছেছেন এবং প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্ব এবং উদ্যম তরুণদের কাছে আদর্শ হয়ে উঠেছে, যা প্রমাণ করে যে তিনি বর্তমান সময়ের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মোঃ মাহমুদুজ্জামান শুধু একজন সফল ব্যবসায়ী নন, বরং তিনি আমাদের প্রজন্মের অনুপ্রেরণা, যিনি তার মেধা, পরিশ্রম এবং আপ্রাণ চেষ্টা দিয়ে নতুন ব্যবসায়িক ধারার পথ দেখাচ্ছেন।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement