রোদচশমা ফ্যাশন না প্রয়োজন
লাইফস্টাইল- তাসফিয়া তাজিন
- ৩০ জুন ২০২০, ০০:০০
বেশির ভাগ মানুষই রোদচশমা পরে থাকে ফ্যাশনেবল লুক পাওয়ার জন্য অথবা সূর্যের তীব্র আলোতে স্বস্তি পেতে। যদি আপনিও সেই বেশির ভাগ মানুষের একজন হয়ে থাকেন, এবার তাহলে জেনে নিন কেন রোদচশমা পরা আরো বেশ কিছু কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
চোখের বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা : চোখ খুবই স্পর্শকাতর একটি অঙ্গ। বেশিক্ষণ রোদে থাকলে চোখের বিভিন্ন রোগ হতে পারে যার মধ্যে কিছু নিরাময়যোগ্য, অন্য রোগগুলোর নিরাময় সম্ভব নাও হতে পারে। রোদের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি চোখের টিস্যু বৃদ্ধির মতো যন্ত্রণাদায়ক একটি রোগ ও চোখের ছানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটি গ্লুকোমা রোগকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
স্কিন ক্যান্সারের আশঙ্কা কমায় : চোখের মতো চোখের আশপাশের অংশও খুবই স্পর্শকাতর। প্রায় ১০ শতাংশ স্কিন ক্যান্সারের উৎপত্তি ঘটে এই অংশটুকুতে। সানগ্লাস পরলে তাই শুধু চোখই নয়, সুরক্ষা পাবে আপনার ত্বকও।
মাথাব্যথা ও মাইগ্রেন থেকে বাঁচায় : রোদের তীব্র আলো মাথাব্যথা ও মাইগ্রেনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নিয়মিত রোদচশমা ব্যবহার করলে এসব যন্ত্রণাদায়ক মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের পুনরাবৃত্তি ও তীব্রতা দুই-ই কমে আসে।
আর আপনার যদি মাইগ্রেন বা মাথাব্যথার সমস্যা নাও থেকে থাকে, তবুও রোদচশমা আপনার চোখকে ক্লান্তি থেকে এবং রোদে চোখ টনটন করার অনুভূতি থেকে বাঁচাতে পারে।
দূষণ ও অন্যান্য পদার্থ থেকে সুরক্ষা : দূষিত বাতাস ও ধুলাবালু থেকে চোখতে রক্ষা করার জন্য ঢাকা শহরে বসবাসকারীদের জন্য সানগ্লাস পরা অত্যন্ত জরুরি। ঢাকার বাইরে দূষণ কিছুটা কম হলেও ঢাকার বাইরে বসবাসকারীদের সানগ্লাস পরতে হবে। ধুলাবালুর কণা চোখে গেলে কর্নিয়াতে দাগ পড়ে যেতে পারে এবং চোখের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
বলিরেখা রোধ করতে : বয়সের সাথে সাথে মানুষের চেহারায় বলিরেখা পড়তে শুরু করে, যা আরম্ভ হয় চোখের বাইরের দুই পাশের অংশ থেকে। রোদ বলিরেখার আরেকটি প্রধান কারণ। রোদ থেকে চোখকে রক্ষা করা গেলে বলিরেখাকে শুরুতেই রুখে দেয়া যায় অন্তত বেশ কিছু বছরের জন্য। তারুণ্য ধরে রাখতে তাই রোদচশমার বিকল্প নেই।
শিশুদেরও প্রয়োজন সানগ্লাস : বেড়ে ওঠা চোখের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শিশুদেরও অবশ্যই সানগ্লাস পরতে হবে। শিশুদের চোখ যেহেতু পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি, তাই সূর্যের ইউভি রশ্মি তাদের চোখের আরো বেশি ক্ষতি করে, সে জন্য শিশুদের সানগ্লাস পরে বাইরে যাওয়া আরো বেশি প্রয়োজন।
কেমন রোদচশমা চাই
সানগ্লাস কেনার সময় দামকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া একেবারেই উচিত নয়। কারণ অনেক ব্র্যান্ডের সানগ্লাসই ভালো সার্ভিসের কারণে নয়, বরং ফ্যাশনের কারণে খুব বেশি মূল্যের হয়ে থাকে। তাহলে জেনে নিন কী কী গুণ থাকতে হবে আপনার সানগ্লাসটির এবং কোন ধরনের সানগ্লাস কেনা যাবে না।
ষ যেসব সানগ্লাসে লেখা থাকে ‘অ্যাবজবর্স ইউভি’ সে সব সানগ্লাস কেনা যাবে না।
ষ পোলারাইজড লেন্স তীব্র আলোতে চোখকে আরাম দিলেও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে না।
ষ শুধু গাঢ় রঙের সানগ্লাস মানেই যে ভালো সান প্রটেকশন, তা কিন্তু নয়। ক্লিয়ার, হলুদ, সবুজ, ধূসর, কালো, গোলাপি সব রঙের লেন্সেই ইউভি প্রটেকশন দেয়া যেতে পারে।
ষ প্লাস্টিকের লেন্সওয়ালা রোদচশমা চোখের ক্ষতি করে। এসব চশমা পরে যখন ডানে-বামে তাকানো হয় তখন প্লাস্টিক লেন্স দৃষ্টির বিকৃতি ঘটায়। এসব চশমা কখনোই কেনা উচিত নয়।
ষ বড় ফ্রেমের চশমা চোখকে ছোট ফ্রেমের চশমা থেকে তুলনামূলক অনেক বেশি সুরক্ষা দিয়ে থাকে। তাই বড় ফ্রেমের রোদচশমাই বেছে নিতে চেষ্টা করুন।
ষ যেসব রোদচশমায় লেখা থাকবে শতভাগ ইউভি প্রটেকশন, শুধু সেগুলোই কেনা উচিত।
এত সুবিধার পাশাপাশি বোনাস হিসেবে সানগ্লাস আপনাকে দিচ্ছে স্টাইলিশ ও কুল একটি লুক এবং চোখকে দিচ্ছে আরামদায়ক অনুভূতি। তাই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে ঘরের বাইরে পা রাখতে হলে অবশ্যই সানগ্লাস সাথে নিন।